বোমা মেরে আমডাঙার পঞ্চায়েত প্রধানকে খুন, তৃণমূল কংগ্রেস নেতার খুনে বাতাবরণ তপ্ত

আবার খুন করা হল তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকে। বোমা মেরে হত্যা করা হল আমডাঙার পঞ্চায়েত প্রধানকে। এই খুনের নেপথ্যে কারা? তদন্ত করে উত্তর বের করছে পুলিশ। তৃণমূল কংগ্রেস নেতার খুনে এলাকায় তুমুল আলোড়ন পড়েছে। জয়নগরের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার আমডাঙায় হত্যা করা হল তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত প্রধানকে। আমডাঙায় তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত প্রধানকে লক্ষ্য করে বোমা মারার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় পড়ে ছিল আমডাঙা পঞ্চায়েতের প্রধান রূপচাঁদ মণ্ডল। তাঁকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় আমডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে। তার পর অবস্থার অবনতি হলে নিয়ে যাওয়া হয় বারাসতে। বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনায় পঞ্চায়েত প্রধানের খুনের ঘটনা ঘটায় শিউরে উঠলেন স্থানীয় মানুষজন। বোমা মেরে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ।বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছিল? স্থানীয় সূত্রে খবর, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার আমডাঙা থানার কামদেবপুর হাটে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ গিয়েছিলেন রূপচাঁদ মণ্ডল। তখন আচমকাই একদল দুষ্কৃতী তাঁকে ঘিরে ফেলে। তারপর তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা মেরে চম্পট দেয় তারা। সামনাসামনি বোমার আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যান রূপচাঁদ। রক্তাক্ত হয় আমডাঙার মাটি। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে আমডাঙ্গা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় রূপচাঁদের। ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং দাবি করেছেন হাসপাতালে নিয়ে আসার পরই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তারপর ঠিক কী ঘটল? ওই হাটে থাকাকালীন একটি টেলিফোন আসে রূপচাঁদ মণ্ডলের কাছে। মোবাইল ফোন কানে দিয়ে যখন হাট থেকে বেরিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন, তখনই তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়া হয় বলে সূত্রের খবর। তারপরই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন রাস্তায় রূপচাঁদ। এই ঘটনায় আমডাঙার বাতাবরণ তপ্ত হয়ে ওঠে। আমডাঙার বিধায়ক রফিকুর রহমান এই বিষয়ে বলেন, ‘এলাকায় কোনও গোষ্ঠীকোন্দল নেই। কেন তাঁকে বোমা মেরে খুন করা হল? তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।’ পুলিশ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি বলে খবর। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। গত সোমবার জয়নগরে খুন হন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সইফুদ্দিন লস্কর। তারপর আবার খুন আমডাঙায়।আরও পড়ুন: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলো খালি করার নির্দেশ বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে, তুঙ্গে চর্চাআর কী জানা যাচ্ছে? পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে প্রার্থী হয়ে জেতেন রূপচাঁদ মণ্ডল। আমডাঙা পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। তাই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকার সর্বত্র। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় আমডাঙা। বন্ধ হয়ে যায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া কামদেবপুরহাট। জাতীয় সড়কের উপর যান চলাচলও স্তব্ধ হয়। তখনই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আমডাঙা থানার পুলিশ। উত্তেজিত জনতা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। খুনিদের অবিলম্বে খুঁজে বের করে কঠিন শাস্তি দিতে হবে বলে জানান গ্রামবাসীরা। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। রাতেই হাসপাতালে পৌঁছন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং এবং আমডাঙার বিধায়ক রফিকুর রহমান।