অকাল বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত আলু চাষিদের ‘বাংলা শস্যবিমা’ প্রকল্পের অধীনে টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। দিনকয়েক আগে এই টাকা ছাড়া হয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রেও অনিয়মের অভিযোগ সামনে আসছে। অভিযোগ, অনেকেই ভুয়ো নথি দেখিয়ে শস্যবিমার টাকা পেয়েছেন। এই অবস্থায় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা। যদিও কৃষি দফতরের দাবি, একাধিকবার সমীক্ষা করার পরেই টাকা দেওয়া হয়েছে। তারপরেও কেন অনিয়ম, তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়ে মাথায় বাজ পড়েছিল, ৯ লাখ চাষিকে শস্যবিমার ৩৫১ কোটি টাকা দিল রাজ্য
পূর্ব বর্ধমানের রায়না ১ নম্বর ব্লকে এমনই অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার বিডিও অফিসে লিখিত অভিযোগ জানান চাষিরা। তাঁদের অভিযোগ, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জমি না থাকা সত্ত্বেও ভুয়ো নথি দেখিয়ে অনেকে শস্যবিমা অধীনে ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। এমনকী অনেকেই মোটা টাকা পেয়েছেন।
আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, অন্যের জমির নথি দেখিয়ে টাকা তুলেছেন বেশ কয়েকজন। দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে অনিয়ম হয়ে আসছে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই অবৈধভাবে বিমার টাকা যাঁরা পেয়েছেন, তাঁদের তালিকা বিডিও অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান অভিযোগকারী কৃষকরা। এ বিষয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল জানান, ভুয়ো নথি দেখিয়ে শস্যবিমার টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে। কারও মদত ছাড়া এরকম সম্ভব নয়। এর জন্য তদন্ত প্রয়োজন।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, আর্থিক সহায়তা হিসেবে ক্ষতিপূরণ বাবদ বাংলার শস্যবিমা প্রকল্পে ১ লক্ষ আলুচাষির জন্য ১৫৮ কোটি টাকা ছেড়েছে রাজ্য সরকার। এর মধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত আলু চাষিদের জন্য ৭১ কোটি ৭০ লক্ষ ২৩ হাজার ৫৪৮ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২৫ হাজারের বেশি চাষি এই টাকা পেয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছেন গলসি, জামালপুর, রায়না-১ এবং রায়না-২ ব্লকের চাষিরা।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যাচ্ছে, গতবার ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা বিমার টাকা পেয়েছেন। এবারও তাঁদের টাকা দেওয়া হয়েছে। ইসমাইল জানান, অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করা হবে এবং পদক্ষেপ করা হবে। তিনি আরও জানান, এই ধরনের অনিয়মের সঙ্গে কেউ যুক্ত থাকলে চিহ্নিত করে পদক্ষেপ করা হবে। উল্লেখ্য, নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলা শস্যবিমা শুরু হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত এক কোটির বেশি কৃষক ৩,৭২০ কোটি টাকারও বেশি আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন।