দিঘার সমুদ্র সৈকতে মানুষের ভিড় হতোই। এবার সেই ভিড় রাস্তায় নেমে এসেছে। আর তার কারণ ‘জগন্নাথধাম’। এই জগন্নাথ মন্দির তৈরি হওয়ায় মন্দির চত্বরেও পর্যটকদের ভিড়ের ঢেউ আছড়ে পড়েছে। কিন্তু সৈকতনগরীর সৌন্দর্য এখনও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। আর তার জেরে পর্যটকদের সেখানে চলাফেরা করা দায় হয়ে পড়েছে। তারই মধ্য়ে গরু রাস্তায় চরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই কারণে পরিবেশ নোংরা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। তাই এবার সমুদ্রসৈকত থেকে শুরু করে লাগোয়া এলাকার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ করল দিঘা প্রশাসন। সমুদ্রসৈকতে গরু চরলেই এবার জরিমানা দিতে হবে। ডেডলাইন ১ জুন।
এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ১ জুনের পর যদি সমুদ্র সৈকতে গরু চরানো বন্ধ করা না হয়, তাহলে জরিমানা করা হবে। স্থানীয় মানুষজন বিশেষ করে যাঁরা নিজেদের গরু রাতের অন্ধকারে রাস্তায় ছেড়ে দেয়। আর ওই গরুগুলি সমুদ্রসৈকত–সহ গোটা শহর নোংরা করে দেয় বলে অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই। তার জেরে পর্যটনকেন্দ্রের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সাধারণ মানুষের চলাচলের যোগ্য থাকছে না এলাকা। দিঘা ভ্রমণপিপাসু বাঙালির অন্যতম ডেস্টিনেশন। আর এখানে জগন্নাথ মন্দির হওয়ার পর বিদেশের পর্যটকরাও আসতে শুরু করেছেন। সেখানে এমন নোংরা, অপরিষ্কার থাকলে খারাপ বার্তা যায়।
আরও পড়ুন: চাকরিহারাদের ‘হুলিগান’ মন্তব্যে বিতর্কে কল্যাণ, ধেয়ে এল শিক্ষকদের কড়া প্রশ্নবাণ
অন্যদিকে গত ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকেই কাতারে কাতারে পর্যটক এখানে আসতে শুরু করেছেন। রোজই ভিড় বাড়ছে। কিন্তু এই দিঘার সমুদ্রসৈকতেই চড়ে বেড়াচ্ছে গরু! তার জেরে সমুদ্রসৈকত যেমন নোংরা হচ্ছে তেমন সৌন্দর্য্যও ধাক্কা খাচ্ছে। আর তাই তাজপুর থেকে ওল্ড দিঘা, নিউ দিঘা এমনকী ওড়িশা সীমান্ত পর্যন্ত বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে। মাইকিং করে সবাইকে এই বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে। এবার কড়া নির্দেশ জারি করা হল। ১ জুনের পর থেকে গরু চরানো বন্ধ করতে হবে। না হলে কড়া পদক্ষেপ করবে প্রশাসন।
এছাড়া আজ, শুক্রবার রামনগর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিতাইচরণ সার দিঘা, রামনগর এবং মোহনা থানার অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন রামনগর ১ নম্বর ব্লকে বিডিও পূজা দেবনাথ। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রথমে মাইকিং করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করা হবে। তাতেও যদি গরু চরানো বন্ধ না হয় তাহলে তখন জরিমানা করা হবে। পূজা দেবনাথ বলেন, ‘দিঘার সৌন্দর্যায়ন রক্ষার্থে এবং পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ আর রামনগর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিতাইচরণ সারের বক্তব্য, ‘এখন থেকে আমরা মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করব। ১ জুন থেকে কেউ যদি এই নিয়ম ভাঙে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জরিমানাও করা হবে।’