মা আমি চুরি করিনি, প্রসেনজিতের এই ডায়লগ নিয়ে যে কতবার কত জায়গায় মিম তৈরি হয়েছে, তা বোধহয় গুনে শেষ করা যাবে না। তবে গতকাল অর্থাৎ ২২ মে পাঁশকুড়া গ্রামে যা ঘটে গেল, তারপর হয়তো এই বাক্যটি নিয়ে মিম তৈরি করার আগে একবার হলেও ভাবতে হবে।
গতকাল পাঁশকুড়ার গোসাইবেড় গ্রামে সপ্তম শ্রেণীর কৃষ্ণেন্দু দাস বাড়ি থেকে বের হয় চিপসের প্যাকেট কেনার জন্য। পাড়ার দোকানে দোকানদারকে দেখতে না পেয়ে দোকানের সামনে পড়ে থাকা একটি চিপসের প্যাকেট তুলে নেয় ওই শিশুটি। কিছুক্ষণ পর শুভঙ্কর নামে ওই দোকানদার, যিনি নাকি পেশায় একজন সিভিক ভলেন্টিয়ার, তিনি শিশুটির পিছু ধাওয়া করেন।
আরও পড়ুন: পরনে লাল শাড়ি, মাথা ভর্তি সিঁদুর, কানে অদিতিকে নববধূর সাজে দেখে মুগ্ধ ভক্তরা
আরও পড়ুন: নিষ্পাপ ভালোবাসার গল্প জুড়ে ৯০ দশকের নস্টালজিয়া! প্রকাশ্যে রাসের ট্রেলার, কবে মুক্তি?
কিছুদূর গিয়ে শিশুটিকে ধরে চোর অপবাদ দেন শুভঙ্করবাবু। ভরা বাজারে মারধর করে কান ধরে উঠবোস করানো হয় ওই ছোট্ট শিশুটিকে। খবর পেয়ে কৃষ্ণেন্দুর মা ছুটে আসেন এবং তিনিও মারধর করেন ছেলেকে। গোটা ঘটনায় কৃষ্ণেন্দু শুধু একটাই কথা বলেছে, মা আমি সত্যিই চুরি করিনি।
পরে ব্যাপারটি নিয়ে হইচই বাঁধলে সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায় সত্যি ওই শিশুটি চিপসের প্যাকেট চুরি করেনি। কৃষ্ণেন্দুর কথা মতো দোকানের সামনে চিপসের প্যাকেটটি পড়েছিল, যেটা সে তুলে নেয়। তবে প্রমাণ যখন পাওয়া গেল ততক্ষণে সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েছে। চোর অপবাদ সহ্য না করতে পেরে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করে কৃষ্ণেন্দু। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বৃহস্পতিবার ভোরে মৃত্যু হয় সপ্তম শ্রেণীর ওই ছাত্রের।
কৃষ্ণেন্দুর মৃত্যুর ঘটনা সামনে উঠে আসায় একপ্রকার বিহ্বল হয়ে গিয়েছেন নেট দুনিয়ার বাসিন্দারা। এমনও হয়? প্রশ্ন করেছেন অনেকে। তবে অনেকের মতো প্রশ্ন করতে দেখা গিয়েছে অন্যতম জনপ্রিয় ইউটিউবার ঝিলম গুপ্তকে।
২৩ তারিখ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছিলাম ঝিলম লেখেন, ‘ক্লাস সেভেনের বাচ্চাটাকে চিপস চুরির অপবাদ দিয়ে যে ***টা মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিল, ওটার কী খবর? ওটাকে ক্লোজ করা হয়েছে কি?’
আরও পড়ুন: একসূত্রে বাঁধা ৩ গল্প! ভরা সন্ধ্যাতেও ভয় ধরাল অমৃতা-রূপাঞ্জনাদের ভূতপূর্ব রূপ, প্রকাশ্যে ছবির ঝলক
আরও পড়ুন: অক্ষয় বা সানির ছবি নয়, এপ্রিলে সবথেকে বেশি আয় করেছে কোন অভিনেতার সিনেমা?
ঝিলমের পোষ্টের উত্তরে কেউ লেখেন, ‘সিভিক ভলেন্টিয়ার তো, ওকে কিছুই করা যাবে না।’ অন্য একজন লিখেছেন, ‘হয়তো চটি চাটে, ধরা পড়লেও ঠিক ছাড়া পেয়ে যাবে।’ তৃতীয় একজন লিখেছেন, ‘মানুষ সত্যি আর মানুষ নেই।’
তবে এই প্রথমবার নয়, সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দৌরাত্ম্যের খবর বহুবার বহু জায়গা থেকে শুনতে পাওয়া গিয়েছে। তবে সামান্য চিপসের জন্য একটি শিশুর প্রাণ চলে যাওয়ার বিষয়টি বোধহয় একদমই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। অভিযুক্তের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।