আইপিএল শুরুর তিন সপ্তাহ পর নিজেদের ঘরের মাঠে অর্থাৎ রাজধানীর ফিরোজশাহ কোটলায় খেলতে নেমেই মুখ থুবড়ে পড়ে দিল্লি ক্যাপিটালস।এর আগে তারা টানা প্রথম চারটি ম্যাচ জিতেছিল- দু'টি তারা হোম গ্রাউন্ড হিসেবে ভাইজ্যাগে খেলে জিতেছিল। এবং অন্য দু'টি চেন্নাই সুপার কিংস এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচ জিতেছিল। তখন মনে হচ্ছিল, পরবর্তী রাউন্ডে খুব সহজেই যোগ্যতা অর্জন করবে ডিসি। কোনও সমস্যা হবে না। অথচ কোটলায় অথচ কোটলায় খেলতে এসেই শুরু হল পতন। এখানে মোট পাঁচটি হোম ম্যাচ খেলেছে দিল্লি। তার মধ্যে চারটিতেই হেরে বসেছে তারা। মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে, তাও রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে সুপার ওভারে।
কোটলাকে নিয়েই কোনও হোমওয়ার্ক ছিল না ক্যাপিটালসের
সবচেয়ে বড় দিল্লির সমস্যা ছিল, ঘরের মাঠে হোমওয়ার্কের অভাব। গত বছরের অক্টোবরে যখন ক্যাপিটালস পুরো কোচিং স্টাফকে ঢেলে সাজিয়েছিল, তখন প্রধান কোচ হেমাঙ্গ বাদানি, পরিচালক ভেনুগোপাল রাও এবং বোলিং কোচ মুনাফ প্যাটেল কোটলায় মাত্র একবারই প্রাক-মরশুম সফর করেছিল ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে। বাদানি আইএলটি২০-তে (ILT20) দুবাই ক্যাপিটালসের কোচিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এমন কী টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগে, দিল্লির প্লেযাররা ভাইজ্যাগে খেলতে যাওয়ার আগে কোটলায় মাত্র একটি অনুশীলন ম্যাচ খেলেছিল।
মেগা নিলামের পর দলে ব্যাপক পরিবর্তন আসায়, কোটলার পিচ সম্পর্কে নিয়ে নতুন আগত প্লেয়ারদের পরিচিতি স্বাভাবিক ভাবেই খুবই কম ছিল। এমন কী ২০২৫ মরশুমে, দিল্লি কোটলা না গিয়ে, নিজস্ব সুযোগ-সুবিধায় অনুশীলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যেখানে পিচের অবস্থা সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। এমনকি বাদানি, মরশুম শুরুর আগে দল নিয়ে কোনও পরিকল্পনা সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
টিম ম্যানেজমেন্ট কোটলায় ড্রায়ার সারফেস চেয়েছিল, যাতে তাদের স্পিন ত্রয়ী- কুলদীপ যাদব, অক্ষর প্যাটেল এবং বিপ্রজ সিং-কে সাহায্য পায়। শেষ মুহূর্তে পরামর্শদাতা হিসেবে আনা কেভিন পিটারসেন বলেছিলেন যে, সত্যিকারের ব্যাটসম্যানরা এই ধরনের পিচে ভালো খেলতে পারে।
দলের প্লেয়ারদের নিয়েই কোনও স্বচ্ছতা ছিল না টিম ম্যানেজমেন্টের
টুর্নামেন্টের মাঝামাঝি সময়ে পিটারসেন জোর দিয়ে দাবি করেছিলেন যে, টি-টোয়েন্টিতে ভারতের হয়ে কেএল রাহুলের ৪ নম্বরে ব্যাট করা উচিত। তবুও, ম্যানেজমেন্ট তাঁকে অনিয়মিত ভাবে ব্যবহার করেছে। রাহুলকে ওপেন করতে পাঠানো হয়েছে। আবার ৩ এবং ৪ নম্বরেও ব্যাট করতে পাঠানো হয়েছে। এর থেকেই স্পষ্ট যে, দল নিয়ে কারও কোনও স্বচ্ছে ধারণা ছিল না। ম্যানেজমেন্ট ৪০ বছর বয়সী ফ্যাফ ডু'প্লেসিকে ওপেনার হিসেবে বেছে নিয়েছিল, যিনি পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই ফর্ম নিয়ে লড়াই করেছেন। জ্যাক ফ্রেজার ম্যাকগার্কের ভয়াবহ রানের পর তরুণ অভিষেক পোড়েলকেও ইনিংস ওপেন করার জন্য চাপ দেওয়া হয়।
অভিষের পোড়েল যখন দলকে দুর্দান্ত শুরু দিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন, তখন মাঝখানের ওভারে স্পিনারদের বিরুদ্ধে আটকে যাওয়ার কারণে রাহুলকে ওপেন করতে বাধ্য করা হয়। এই মরশুমে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আশুতোষ শর্মা (লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ৩১ বলে ৬৬) দুরন্ত পারফরম্যান্স করলেও, তাঁর ভূমিকা শেষ পাঁচ ওভারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছিল।