কয়েকবার ক্লিক করলেই লক্ষাধিক টাকার ঋণ, তাও আবার সুদ ছাড়াই! আর এরজন্য ব্যবহার করা হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন। তবে এর পিছনেই লুকিয়ে আছে ভয়ঙ্কর প্রতারণার জাল। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই কিছু বিজ্ঞাপন ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর সেইসঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে ভুয়ো অ্যাপ। একবার অ্যাপ ডাউনলোড করলেই বিপদে পড়তে হতে পারে সাধারণ মানুষকে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে যেতে পারে মোটা অঙ্কের টাকা।
আরও পড়ুন: একতরফা প্রেমের প্রতিশোধ! দেশজুড়ে বোমা হামলার হুমকি, পুলিশের ফাঁদে তরুণী
বীরভূম জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে এই ধরনের প্রতারণার ফাঁদ। প্রশাসনের তরফে সতর্কবার্তা জারি করে জানানো হয়েছে, এই বিজ্ঞাপনগুলির সঙ্গে রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। জেলার শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তা বিধান রায় জানিয়েছেন, এই বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং সাইবার বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় জালিয়াতি চক্রের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
এই ধরনের প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি ও জনপ্রিয় প্রকল্পগুলোর নাম। একটি অ্যাপের বিজ্ঞাপনে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, এক ঘণ্টার মধ্যে ঘরে বসেই পাওয়া যাবে ৩ লক্ষ টাকা ঋণ, তাও আবার বিনা সুদে! আবার আরেকটিতে দাবি করা হয়েছে, মাত্র পাঁচ মিনিটেই ঋণ অনুমোদন মিলবে। কোথাও বলা হয়েছে, আবেদন করতে হলে সরকার অনুমোদিত একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। এসব বিজ্ঞাপনের ডিজাইন এতটাই নিখুঁত যে প্রথম দেখাতেই বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়।
সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অ্যাপগুলোর মাধ্যমে ফোনের সমস্ত তথ্য চুরি করে নেওয়া হয়। এরপরেই হ্যাকারদের দখলে চলে যায় ভুক্তভোগীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। আর চোখের পলকে গায়েব হয়ে যায় সঞ্চিত অর্থ। রামপুরহাট সাইবার থানার আধিকারিক সৌরদ্বীপ পাল জানান, অপরিচিত উৎস থেকে কোনও অ্যাপ ডাউনলোড একেবারেই নিরাপদ নয়। সরকারি প্রকল্পের নামে তৈরি এসব অ্যাপ আসলে প্রতারণার অস্ত্র। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে প্রশাসন। জানানো হয়েছে, সরকার কখনও এইভাবে হোয়াটসঅ্যাপ বা সোশ্যাল মিডিয়ার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঋণ দেয় না। মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকলেই সেটিকে বিশ্বাসযোগ্য ধরে নেওয়া ঠিক নয়। কারণ ছবির আড়ালেই লুকিয়ে থাকতে পারে বড়সড় ফাঁদ।