কৌশিকী অমাবস্যাকে ঘিরে তারাপীঠে ভিড় উপচে পড়বে। এই আবহে ইতিমধ্যেই হোটেল ব্যবসায়ীরা রুম ভাড়ার অঙ্ক কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। এমনকি পর্যটকদের তিনদিনের প্যাকেজ নিতে বাধ্য করার ঘটনাও সামনে আসছে। অথচ প্রশাসন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কোনও হোটেল মালিকই কাউকে তিনদিনের প্যাকেজে বেঁধে রাখতে পারবেন না। যে পর্যটক একদিন বা দু’দিন থাকতে চান, তাঁকে সে সুযোগ দিতে হবে এবং ভাড়াও রাখতে হবে সাধ্যের মধ্যে।
আরও পড়ুন: তারাপীঠেও স্কাইওয়াক তৈরি হবে? মুখ খুললেন মমতা, বললেন 'অনেক উন্নয়ন হয়েছে…..’
জানা গিয়েছে, জেলাশাসক বিধান রায় গত ৬ অগস্ট প্রশাসনিক বৈঠকেই হোটেল অ্যাসোসিয়েশনকে কড়া বার্তা দেন। তিনি সাফ বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া বা জোরপূর্বক প্যাকেজ চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। তবুও বাস্তবে ঠিক উল্টো চিত্র ধরা পড়ছে। অভিযোগ, হোটেলগুলিতে একদিন বা দু’দিন থাকার সুযোগ দিলেও ভাড়ার অঙ্ক এতটাই বেশি রাখা হয়েছে যে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
অভিযোগকারীদের দাবি, সাধারণত যেখানে এসি সিঙ্গেল রুমের ভাড়া ৮০০ টাকা, সেখানে বর্তমানে সেই রুমের জন্য চাইছে প্রায় ৬০০০ টাকা। ডাবল বেডরুমের ভাড়াও পৌঁছে গিয়েছে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকায়। কিছু হোটেল কর্মী সরাসরি জানিয়েছেন, কৌশিকী অমাবস্যার সময় রেট আলাদা, কম হলে এক হাজার টাকা কমানো যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে অনেক পর্যটকই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এবার হোটেলগুলিতে নজরদারির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। জেলাশাসক বিধান রায়ের কথায়, প্রশাসনের লোকজন ছদ্মবেশে রুম ভাড়া নিতে যাবেন। কোথাও যদি জোর করে প্যাকেজ চাপানো হয় বা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করা হয়, কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, প্রতি বছর কৌশিকী অমাবস্যা তারাপীঠে সবচেয়ে বড় উৎসব হিসেবে পালিত হয়। বামাক্ষ্যাপার সাধনাস্থল বলে পরিচিত এই তীর্থক্ষেত্রে লক্ষাধিক ভক্ত সমবেত হন। এবার যেহেতু তিথিটি শুক্রবার ও শনিবার পড়েছে এবং পরের দিন রবিবার, তাই অন্তত পাঁচ লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর ভিড় হবে বলেই প্রশাসনের অনুমান। আর এই ভিড়ের সুযোগ নিয়েই একাংশ হোটেল মালিক অস্বাভাবিক ভাড়া দাবি করছেন বলে পর্যটকদের অভিযোগ।
তবে হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের দাবি সম্পূর্ণ ভিন্ন। সংগঠনের সভাপতি সুনীল গিরি জানিয়েছেন, সব রুম আগেই বুক হয়ে গিয়েছে। কোথাও জোর করে প্যাকেজে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে না। যদি কোনও হোটেল নিয়ম ভাঙে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পর্যটকদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রশাসনের নির্দেশের সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতির বিস্তর ফারাক রয়েছে।