ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত সুন্দরবনে এবার দেখা দিয়েছে তীব্র পানীয় জলের অভাব। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, তা বলতে পারছে না প্রশাসন।ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে নষ্ট হয়েছে পানীয় জলের পাইপলাইন। সাইক্লোনের জেরে সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে গ্রামের পুকুরগুলির বড়সড় ক্ষতি করে দিয়েছে। মাছের ভেড়িগুলি ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি টিউবওয়েলে মিষ্টি জলের জোগানও বন্ধ হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা, কুলতলি, কাকদ্বীপ, নামখানা, পরাথরপ্রতিমা ব্লকের কয়েকশো গ্রাম এবং উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ, সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ ও হাসনাবাদ ব্লকে নোনা জল ঢুকে মিষ্টি জলের উৎস নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই সমস্ত অঞ্চলের বহু জায়গায় গত সাত দিনেও জমা জল নামেনি বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে।পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা জানিয়েছেন, ‘পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১৬ কিমি নদীবাঁধ ধ্বংস হয়েছে এবং স্লুইস গেটগুলি নষ্ট হয়েছে। গ্রামগুলিতে নোনা জল ঢুকে পুকুর ও টিউবওয়েলগুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রশাসনের তরফে আমরা পানীয় জলের পাউচ বিতরণ করছি। গাড়ি ও নৌকায় জলের বিশাল ড্রাম গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’গ্রামবাসীদের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরেই গ্রামের টিউবওয়েলগুলি কাজ করে না। ২০১৯ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় আয়লার দাপটে যে টিউবওয়েলগুলি সারানো হয়েছিল, আমফানে সেগুলিও ধ্বংস হয়েছে। ওই বছরের নভেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলেও বেশ কিছু টিউবওয়েল নষ্ট হওয়ার পরে সারানো হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। কাকদ্বীপ ব্লকের গোবিন্দরামপুর গ্রামে তিনটি টিউবওয়েলের মধ্যে বর্তমানে মাত্র একটি কাজ করছে। বহু বার স্থানীয় বিধায়কের কাছে আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি, দাবি গ্রামের বাসিন্দা অন্তরা মাহাতোর। পরিস্থিতি এমনই যে, গোসাবার রাঙাবেলিয়ার মতো কিছু গ্রামের পকুর ও টিউবওয়েলগুলি নোনা জল থেকে বাঁচাতে মাটির বাঁধ তৈরি করেছেন স্থানীয়রা। গোসাবার বিডিও এস মিত্র জানিয়েছেন, বর্ষা আসার আগে অঞ্চলের পুকুরগুলি চুন ও পটাশিয়াম পারমাঙ্গানেট দিয়ে শোধন করার পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন, যাতে নোনা জল বের করার পরে বৃষ্টির জলে জলাশয় ভরে। তার আগে পাম্প দিয়ে পুকুরের সব জল তুলে ফেলার ব্যবস্থা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিডিও। এদিকে নোনা জল ঢুকে কাতারে কাতারে মরেছে ভেড়ি-পুকুরের রুই, কাতলা ও পাঙ্গাস। জলাশয়ের ধারে ডাঁই করা পচা মাছ থেকে গোটা এলাকায় তীব্র দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। পানীয় জলকষ্ট থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছে শুধুমাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপ। প্রতি বছরের গঙ্গাসাগর মেলার জন্য সরকারি উদ্যোগে যে পরিকাঠামো গড়া হয়েছিল, বর্তমান পরিস্থিতি তা কাজে লাগছে। সাগরের বিডিও সুদীপ্তা মণ্ডল জানিয়েছেন, গঙ্গাসাগর মেলার সময় কোটি কোটি তীর্থযাত্রীর জন্য পানীয় জলের পাউচ সরবরাহ করা হয়। জনস্বার্থ এখন কাজে লাগানো হচ্ছে জলের পাউচ উৎপাদনের যন্ত্রপাতি। সেই সঙ্গে দ্বীপে আগে থেকেই রয়েছে বিশাল মিষ্টি জলের ট্যাঙ্কার এবং স্বাস্থ্য ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দফতর, যা এই সংকটে কাজে লাগছে, জানিয়েছেন বিডিও। ঘূর্ণিঝড়ে বিপন্ন দুর্গতদের সাহায্য করুন:EMERGENCY RELIEF FUND(Part of Chief Minister Relief Fund)http://wbserf.wb.gov.in/wbserfA/C No: 628005501339Bank: ICICI BankBranch: HowrahIFSC Code: ICIC0006280MICR Code: 700229010SWIFT Code: ICICINBBCTS