চলতি বছরের শেষেই কোয়াড সম্মেলন আয়োজিত হবে ভারতে।কিন্তু সেখানে যোগ দিতে ভারতে আসবেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।এমনটাই দাবি করা হয়েছে ‘নিউইয়র্ক টাইমস’-এর এক প্রতিবেদনে।সম্প্রতি শুল্ক নিয়ে টানাপোড়েন চলছে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। এই আবহে নয়া দিল্লির প্রতি ফের কড়া মনোভাব মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে টানাপোড়েনের জেরেই এমন সিদ্ধান্ত কিনা, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের ‘দ্য নোবেল প্রাইজ অ্যান্ড আ টেস্টি ফোন কল: হাউ দ্য ট্রাম্প-মোদি রিলেশনশিপ আনরাভেল্ড’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৫ সালের শেষে ভারতে আসবেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে আপাতত সেই পরিকল্পনা বাতিল করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, 'ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বলেছিলেন, চলতি বছরের শেষের দিকে কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে আসবেন। কিন্তু শরতে ট্রাম্পের ভারত সফরের পরিকল্পনা নেই।' তবে রিপোর্টে উল্লিখিত এই তথ্য নিয়ে ভারত কিংবা মার্কিন প্রশাসনের তরফে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। যদিও চলতি বছরের শেষেই ভারতে বসতে চলেছে কোয়াড সম্মেলন। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, এই চার দেশ নিয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী হল কোয়াড।ভারত মহাসাগরে চিনা আধিপত্য ঠেকাতে, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতেই কোয়াড গঠন করা হয়। প্রতি বছর কোনও না কোনও সদস্য রাষ্ট্রে এই গোষ্ঠীর বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ বছর কোয়াডের সম্মেলন হওয়ার কথা ভারতে। সেই মতো সদস্য দেশগুলির প্রধানদের কাছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণ গিয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এই নিয়ে চার দেশের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকও হয়।
কেন অসন্তুষ্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট?
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার দাবি করছিলেন ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে গত মে মাসে চলা ৪ দিনের সংঘর্ষে ইতি টেনেছেন তিনিই। আর ভারতও বারবার এই দাবি খারিজ করেছে। এই ঘটনাই দুই দেশের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হওয়ার মূল কারণ। ট্রাম্পের উপর ধৈর্য্য হারাচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, এমনটাও উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, গত ১৭ জুন ফোনে প্রায় ৩৫ মিনিট কথা হয় প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং ট্রাম্পের। কানাডায় জি৭ সম্মেলন সেরে ওয়াশিংটন ফিরছিলেন ট্রাম্প। প্রধানমন্ত্রীও ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। মুখোমুখি আলোচনারও কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু ট্রাম্প অনেক আগেই সম্মেলন ছেড়ে বেরিয়ে যান। চলে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী ফোনে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেন। সেই সময়ও যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব দাবি করেন ট্রাম্প। পাকিস্তান তাঁকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করছে বলেও জানান। ভারতেরও একই কাজ করা উচিত বলে আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন ট্রাম্প। কিন্তু এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে আমেরিকার কোনও ভূমিকা নেই, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তৃতীয় কোনও পক্ষের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়ে দেন তিনি। এতেই ট্রাম্প এবং মোদীর বন্ধুত্বে ফাটল ধরে বলে দাবি নিউ ইয়র্ক টাইমসের। সেই থেকে দু’জনের মধ্যে আর কথাও হয়নি।