বিহারে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর 'ভোটার অধিকার যাত্রা'র শেষবেলায় বড় চমক। বিহারে মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করলেন খোদ আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। শনিবার ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’র সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মঞ্চে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর উপস্থিতিতেই নাটকীয় ভঙ্গিতে নিজের নাম নেন তিনি। সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবও।
আড়ার জনসভায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর উপস্থিতিতে তেজস্বী যাদব সোজাসুজি আক্রমণ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে। তিনি বলেন, 'নীতীশজি আসলে এক কপিক্যাট মুখ্যমন্ত্রী।আমাদের একজন আসল মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়োজন, নকল নয়। আমি যেটা করছি, উনি সেটা নকল করছেন। তেজস্বী সামনে এগোচ্ছে, সরকার পিছন থেকে অনুসরণ করছে।মানুষ কি চান ‘অরিজিনাল’ মুখ্যমন্ত্রী, নাকি ‘ডুপ্লিকেট?' সেই সঙ্গে নিজেকে মহাজোটের একমাত্র ‘অরিজিনাল’ মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বলে ঘোষণা করেন। তেজস্বী যখন এই কথা বলছেন, তখন মঞ্চেই উপস্থিত ছিলেন রাহুল। তবে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। তেজস্বীর স্পষ্ট ঘোষণা সত্ত্বেও কংগ্রেসের তরফে এখনও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী নিয়ে সমর্থন আসেনি। রাহুল-তেজস্বীর প্রকাশ্য সৌহার্দ্য সত্ত্বেও কংগ্রেস নেতৃত্বের এই নীরবতা রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন-মাঝ আকাশে আগুন! দিল্লিতে জরুরি অবতরণ Air India বিমানের, প্রাণে বাঁচলেন যাত্রীরা
তেজস্বী যাদব দীর্ঘদিন ধরেই মহাজোটকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। গত নির্বাচনে যদিও আরজেডি-কে বিরাট সাফল্য এনে দিয়েছিলেন, তবুও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে শেষ পর্যন্ত জায়গা করে নিতে পারেননি। তিনি হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ডেপুটি। এবার তাই তিনি নিজে সরে গিয়ে রাহুলকে সামনে রেখে বিরোধী ভোটকে একত্রিত করার কৌশল নিয়েছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত।তাদের মতে, জাতীয় পর্যায়ে রাহুল গান্ধীর জনপ্রিয়তা ও কংগ্রেসের সাংগঠনিক জোর বিহারের নির্বাচনে বিরোধী শিবিরকে শক্তিশালী করবে। তাছাড়া তেজস্বী নিজে তরুণ মুখ হিসেবে পাশে থাকলে দলীয় কর্মীরা দ্বিগুণ শক্তিতে ঝাঁপাবে।
আরও পড়ুন-মাঝ আকাশে আগুন! দিল্লিতে জরুরি অবতরণ Air India বিমানের, প্রাণে বাঁচলেন যাত্রীরা
আরজেডি ইতিমধ্যেই তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে সমর্থন জানিয়েছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসন-বণ্টন নিয়ে টানাপড়েনই এর মূল কারণ। ২০২০ সালের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস ৭০ আসনে লড়লেও জিতেছিল মাত্র ১৯টিতে। সেই খারাপ ফলাফল মহাজোটের সামগ্রিক সাফল্যে প্রভাব ফেলেছিল, যদিও আরজেডি তখনও একক বৃহত্তম দল হয়। এবারও কংগ্রেস চাইছে সমান সংখ্যক আসন, আর সেই কারণেই আপাতত তেজস্বীর মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থীপদে সায় দিতে নারাজ তারা।বস্তুত, সম্প্রতি আগামী লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী করতে সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করবেন বলে জানিয়েছিলেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব।তিনি বলেছিলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বই মানুষের ভরসা। তাই বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র লক্ষ্য হবে তাঁকে সামনে রেখেই লড়াই করা।