দীর্ঘ বিরতির পর ভারত ও চিনের মধ্যে ফের শুরু হবে সরাসরি বিমান পরিষেবা।ওয়াশিংটনের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের আবহে চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।প্রায় সাত বছর পরে চিন সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির চাপের মধ্যে রবিবার তিয়ানজিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের এই বৈঠককে তাই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ওয়াশিংটনের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের মধ্যে দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়, সেদিকেই নজর ছিল সকলের ৷ শুধুমাত্র মার্কিন শুল্কযুদ্ধ নয় ৷ গালওয়ানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর দুই দেশের সেনা সংঘাতের পর এই প্রথম চিন সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদী ৷ সুতরাং, সেই নিয়েও উদ্বিগ্ন ছিলেন বিশ্বের কূটনৈতিক মহল ৷ এই পরিস্থিতিতে রবিবার বৈঠকের শুরুতেই তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য চিনের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী মোদী ৷ দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুতের লক্ষ্যে বৈঠকে উঠে এসেছে সীমান্ত সমঝোতা, ভারত-চিন সরাসরি বিমান পরিষেবা-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও উল্লেখযোগ্য বিষয় ৷কাজানে আয়োজিত প্রতিনিধিদের বৈঠকের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, 'কাজানে আমাদের একটি ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে । আমাদের সম্পর্ক ইতিবাচক দিকে এগিয়েছে । সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরেছে । দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচলও শুরু হচ্ছে ।' তিনি আরও বলেন, ‘দুই দেশের ২.৮ বিলিয়ন মানুষের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপরে। আমাদের সম্পর্ক সমগ্র মানবতার উন্নতির পথ প্রশস্ত করবে।’
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর মুখ স্পষ্ট! অখিলেশকে সাক্ষী রেখে বড় ঘোষণা তেজস্বীর, নীরব রাহুল
করোনা অতিমারীর সময় থেকে ভারত-চিনের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এরপর ২০২০ সালের জুনে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে সম্পর্কের অবনতি চরমে পৌঁছয় দুই দেশের মধ্যে। সেই সংঘাতের পর দুই দেশই সীমান্তে সেনা মোতায়েন বাড়িয়ে দেয়। একাধিক দফায় কূটনৈতিক ও সামরিক বৈঠক হলেও কয়েকটি জায়গায় অচলাবস্থা কাটেনি।অর্থনৈতিক ও ব্যক্তি-স্তরের যোগাযোগেও টানাপোড়েন তৈরি হয়েছিল। চিনা বিনিয়োগে নিয়ন্ত্রণ, আমদানিতে নজরদারি এবং বিমান পরিষেবা স্থগিতের মতো পদক্ষেপ নেয় ভারত। তবে সাম্প্রতিককালে ভারতের সঙ্গে চিনের বেশ কয়েকটি বৈঠকের পর পরিস্থিতি কিছুটা নরম হয়।গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই নয়া দিল্লি এবং বেজিং একে অন্যের প্রতি সুর নরম করেছে। দুই দেশই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অচলাবস্থা কাটানোর চেষ্টা করে। এবার তিয়ানজেনে আয়োজিত সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে ভারত-চিনের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় চালু করার সিলমোহর দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর মুখ স্পষ্ট! অখিলেশকে সাক্ষী রেখে বড় ঘোষণা তেজস্বীর, নীরব রাহুল
এদিকে, ভারতের বৃহত্তম বিমান সংস্থা, ইন্ডিগো দুই দেশের মধ্যে বিমান চলাচল শুরু করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আরেক বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া লিমিটেডও পুনরায় বিমান পরিষেবা শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।ভারত এবং চিনের মধ্যে সরাসরি উড়ান যে আবার চালু হতে পারে, সেই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন চিনের কনসাল জেনারেল জু ওয়েই। কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে জানান, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি উড়ান পরিষেবা চালু করতে ক্রমাগত কথা বলছে ভারত এবং চিন।গত জানুয়ারি মাসে ভারত-চিনের মধ্যে সরাসরি উড়ান পরিষেবা ফের চালু করা নিয়ে প্রথম সচেষ্ট হয় নয়া দিল্লি। তার আগে চিন সফরে গিয়েছিলেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। তারপরেই বিবৃতি দিয়ে উড়ান পরিষেবা চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছিল নয়া দিল্লি।