বিকাশ নামদেব। বয়স ২৬ বছর। গুজরাট থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে তাকে গ্রেফতার করার পরে পুলিশের চোখ তো কার্যত ছানাবড়া। বিকাশের যদি রসগোল্লা খেতে ইচ্ছে করত তবে সে সোজা ফ্লাইট ধরে চলে আসত কলকাতায়। এরপর যদি গোয়াতে স্কচ খাওয়ার ইচ্ছে হয় তবে তিনি ঝট করে বিমান ধরে চলে যেতেন সেখানে।
তবে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে তিনি কি বিরাট ধনী কোনও ব্যবসাদার? একেবারেই নয়। তিনি ১২ ক্লাস ড্রপ আউট। তিনি আসলে ট্রেন থেকে চুরি করতেন। এটাতেই অভ্য়স্ত তিনি। অভিযোগ এমনটাই। আর সেই চুরির টাকায় তিনি ঘুরে বেড়াতেন বিভিন্ন জায়গায়।
আসলে তিনি মধ্য়প্রদেশের বাসিন্দা। ভাদোদারা রেল স্টেশন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। লোকাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ তাকে সন্দেহজনকভাবে ঘুরতে দেখেছিল স্টেশনে। তখনই তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তার ব্যাগে তল্লাশি করে পুলিশ। তার কাছ থেকে ৩৪ লাখ টাকার সোনার অলঙ্কার পাওয়া যায়।
তবে তার জামাকাপড়, জুতো দেখে চোখ কপালে। ভাদোদারা ও সুরাটের মধ্য়ে সে গোটা অপারেশনটি চালাতো। মূলত মহিলা যাত্রীদের সে টার্গেট করত। তাদের কাছ থেকে সোনার অলঙ্কার ছিনিয়ে নিত বলে অভিযোগ।
রেলের এক এলসিবি আধিকারিক জানিয়েছেন, একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা সে স্বীকার করে নিয়েছে। চুরি যাওয়া গয়না উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে প্রথম থেকেই সে ট্রেনে চুরি করত এমনটা নয়। সে প্রথম দিকে মধ্য়প্রদেশে গাড়ি চুরি করত। পরে সে ট্রেনে চুরির দিকে নজর দেয়।
কীভাবে সে চুরি করত?
সাধারণত অপারেশনে যাওয়ার সময় সে দামী জামাকাপড় পরত। ৩ এসি বা ২ এসিতে সে টিকিট কেটেই উঠত। ভোর ৩টে থেকে ৪টের মধ্য়ে সে উঠত। এরপর কোচে হাঁটত। এরপর কোচে যে মহিলারা ঘুমোচ্ছে তাদের টার্গেট করত। অলঙ্কার ছিনিয়ে নিয়ে সে নেমে পড়ত ভাদোদারা বা সুরাটে। সে আমেদাবাদ-ভাদোদারা-সুরাট রুটকে বেছে নিত। কারণ সেই রুটে মূলত বিয়ের সিজনে লোকজন দামী গয়না পরে যেত।
চুরি করা আধার কার্ড ব্যবহার করে টিকিট কাটত। দামী হোটেলে থাকত। সহযাত্রীদের কাছে সে জানাত সে নাকি টেক্সটাইলের ব্যবসা করে। তবে তার পোশাক দেখে বোঝাই যেত না সে অভিযুক্ত। তবে পুলিশ গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।