'মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কূটনীতি বুঝতে চান না।' ভারতের উপর শুল্ক আরোপের কড়া সমালোচনা করলেন এককালের ট্রাম্পেরই ঘনিষ্ঠ তথা প্রাক্তন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। ট্রাম্পের শুল্ক নীতির তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি রাশিয়ার থেকে ভারতকে দূরে সরিয়ে রাখার এবং চিনের ক্রমবর্ধমান হুমকির মোকাবিলা করার পশ্চিমা প্রচেষ্টাকে 'ধ্বংস' করেছে।
এক্স হ্যান্ডেলে জন বোল্টন বেশ কয়েকটি পোস্ট শেয়ার করে ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করেছেন। বোল্টন বলেন, ট্রাম্প শুল্ক নীতি প্রয়োগ করে তাঁর কৌশলগত সুবিধাগুলিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন। তিনি লেখেন, 'সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এবং চিনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসন সত্ত্বেও, পশ্চিমা দেশগুলি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেছিল৷ কিন্তু, ট্রাম্পের শুল্কনীতি বিশ্বে সার্বিক ভারসাম্য রক্ষার কয়েক দশকের সমস্ত পরিশ্রম নষ্ট করে দিয়েছে।' আরেকটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, 'ইউক্রেনের একমাত্র গ্রহণযোগ্য ফলাফল হল ইউক্রেনীয় সার্বভৌমত্ব এবং ভূখণ্ডের সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধার। এর চেয়ে কম কিছু বিশ্বের কাছে ইঙ্গিত দেয় যে আগ্রাসন অনুমোদিত হবে।' তিনি জানান, 'বৃহত্তর কৌশলগত প্রেক্ষাপটে কূটনৈতিক পদক্ষেপ বিবেচনা করতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনিচ্ছা শি জিনপিংকে পূর্বকে (মূলত এশিয়ার দেশগুলিকে) একত্রিত করার সুযোগ করে দিয়েছে।'
আরও পড়ুন-'মোদী কেন পুতিন-জিনপিংয়ের সঙ্গে বিছানায়...,' ভয়ে কুকথার নতুন রাজনীতি US-র
জন বোল্টনের মতে, 'ডোনাল্ড ট্রাম্প কূটনীতি মোটেও বুঝতে চান না। তিনি শি জিনপিংকে প্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার সুযোগ করে দিয়েছেন।' জন বোল্টন প্রাক্তন মার্কিন সরকারি আধিকারিক। তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসাবে প্রথম মেয়াদে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে বিদেশ নীতি নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে তিনি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন-'মোদী কেন পুতিন-জিনপিংয়ের সঙ্গে বিছানায়...,' ভয়ে কুকথার নতুন রাজনীতি US-র
চিনে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলন চলাকালীন ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির সমালোচনায় বোল্টনের এই মন্তব্য প্রকাশ্যে এসেছে। এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেছেন। এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে এই তিন শক্তির একত্রিত হওয়ার পটভূমিকায় ট্রাম্পের শুল্ক নীতি নিয়ে জন বোল্টনের তীব্র সমালোচনা অস্বস্তি বাড়াতে পারে মার্কিন প্রশাসনের বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে সোমবার ট্রাম্প দাবি করেছেন, ভারত এখন তাদের শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে। সোশাল মিডিয়া পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, 'আমরা ভারতের সবচেয়ে বড় ক্লায়েন্ট । এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ এক তরফা সম্পর্ক এবং এটি বহু দশক ধরে চলে আসছে । কারণ, হল ভারত এখনও পর্যন্ত আমাদের উপর এত বেশি শুল্ক আরোপ করেছে, যা অন্য যে কোনও দেশের তুলনায় সর্বোচ্চ। সেই কারণে আমরা আমাদের পণ্য ভারতে বিক্রি করতে পারি না।'