'প্রতিরক্ষা উৎপাদন ভারতকে বিশ্বশক্তি হিসেবে উত্থানকে ত্বরান্বিত করতে পারে।' এমনই মন্তব্য করেছেন আরএসএস নেতা রাম মাধব।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ স্লোগান সফল করতে গিয়ে গত কয়েক বছরে দফায় দফায় অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম আমদানিতে কাটছাঁট করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সেই সঙ্গে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে রফতানিতে।
এই আবহে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার সাক্ষাৎকারে আরএসএস নেতা বলেছেন, 'বিশ্বব্যাপী এক বিরাট পরিবর্তন ঘটছে। সাত দশক ধরে এক ধরণের ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশের পর বিশ্ব সম্পূর্ণ ভিন্ন এক শৃঙ্খলার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যখন আপনি একটি নতুন শৃঙ্খলার মুখোমুখি হন, তখন কিছু পুরানো অভ্যাস এবং অনুশীলন ত্যাগ করতে হবে। আমি প্রায়শই মাওয়ের কুখ্যাত সাংস্কৃতিক বিপ্লবের কথা উল্লেখ করি-সমর্থন করার জন্য নয়। আপনাকে নতুন করে ভাবতে হবে।' প্রতিরক্ষা উৎপাদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এটা একটি বিরাট সুযোগ। সবাই ভারতের উৎপাদন দুর্বলতার কথা বলে এবং এটা সত্য। কিন্তু প্রতিরক্ষা উৎপাদনের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। ভারত নিজেই প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের একটি প্রধান ভোক্তা। বর্তমান বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের মতো পরিবেশে, প্রতিটি দেশ তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করছে। এটি কেবল 'মেক ইন ইন্ডিয়া' নয়, 'মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড'-এর জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ। এখানেই আমরা একটি উৎপাদন শক্তিতে পরিণত হতে পারি।'
আরও পড়ুন-আনন্দ পরিণত বিষাদে! ট্রাকের ধাক্কায় গাড়িতে আগুন, US-এ মৃত ৪ ভারতীয়
অন্যদিকে, যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুকে চিরঘুমে পাঠাতে অত্যাধুনিক ‘মাউন্টেড গান’ প্রস্তুত করেছে ডিআরডিও’র ভেহিকেল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এস্টাবলিশমেন্ট। সেনার তরফে শীঘ্রই পরীক্ষা করা হবে এই অত্যাধুনিক অস্ত্র।সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই কামানের দাম ১৫ কোটি টাকা। বিদেশ থেকে যদি এই ধরনের অস্ত্র কেনা হত তাহলে তার দাম পড়ত ৩০ থেকে ৩৫ কোটি টাকা। ভেহিকেল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এস্টাবলিশমেন্ট জানিয়েছে, বেশি পরিমাণে অর্ডার এলে এই কামানের দাম আরও কমতে পারে। বর্তমানে ভারতীয় সেনার ৭০০ থেকে ৮০০টি মাউন্টেড গানের প্রয়োজন রয়েছে। বস্তুত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল এই অস্ত্র। বর্তমানে বিশ্বের অল্প কয়েকটি দেশের হাতে রয়েছে অত্যাধুনিক এই কামান। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হতে চলেছে ভারত।
আরও পড়ুন-আনন্দ পরিণত বিষাদে! ট্রাকের ধাক্কায় গাড়িতে আগুন, US-এ মৃত ৪ ভারতীয়
ডিআরডিও সূত্রে খবর, মরুভূমি হোক বা সমতল যে কোনও জায়গায় শত্রুকে তছনছ করতে এই কামানের জুড়ি মেলা ভার। এর বিশেষ সুবিধা হল গোলা ছোড়ার পর শত্রু পক্ষ যাতে এর অবস্থান জানতে না পারে তার জন্য দ্রুত সরিয়ে ফেলা যায়। সহজে পরিবহণযোগ্য ‘মাউন্টেড গান’ ট্রেন বা সি-১৭ পরিবহন বিমানের মাধ্যমে যে কোনও জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। জানা গিয়েছে, সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই অস্ত্রের ৮০ শতাংশ সরঞ্জাম ১৫৫ মিমি এবং ৫২ ক্যালিবার কামানের। এর পাল্লা ৪৫ কিলোমিটার। এক মিনিটে ছুড়তে পারে ৬ রাউন্ড গোলা। মাত্র ৮৫ সেকেন্ডের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় গুলি চালানোর জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় এটি। পাশাপাশি এই মারণাস্ত্র যে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে তার ৫০ বর্গমিটার এলাকা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।