কর্মক্ষেত্রে এক অধ্যাপিকাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যের জাতীয় আইনবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডব্লিউবিএনইউজেএস) উপাচার্য নির্মলকান্তি চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ থেকে স্বস্তি পেলেন উপাচার্য। সুপ্রিম কোর্ট উপাচার্যের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার মামলা খারিজ করে দিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পঙ্কজ মিঠাল এবং বিচারপতি প্রসন্ন বি ভারালের একটি বেঞ্চ মামলাটি খারিজ করে জানিয়েছে, 'এই ধরনের কর্মকাণ্ড ক্ষমা করা যেতে পারে কিন্তু অভিযুক্তকে তা সারা জীবন তাড়া করে বেড়াবে। তাই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যে এই রায়টি বিবাদী নং ১-এর সিভি-র অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।' আদালত আরও বলেছে, যৌন হয়রানির শিকার ওই অধ্যাপিকা ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু সেই বছরের এপ্রিলে ঘটনাটি ঘটেছিল। তখন তিনি স্থানীয় অভিযোগ কমিটির (এলসিসি) কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে তা খারিজ করে দেওয়া হয়। কারণ, তিনি কেবল তিন মাসের সর্বোচ্চ সময়সীমাই নয়, ছয় মাসের বর্ধিত সময়সীমাও অতিক্রম করার পর অভিযোগ দায়ের করেন।
আরও পড়ুন-'নিজের দেশে ফিরে যা…', ব্রিটেনে শিখ তরুণীকে ধর্ষণ করে হুমকি ‘সাদা চামড়ার লোকের’
শীর্ষ আদালত আরও বলেছে, '২০১৯ সালের পর ২০২৩-র এপ্রিলে উপাচার্য ওই অধ্যাপিকাকে আবার তার অফিসে ডেকে পাঠান। যেখানে তার সঙ্গে একটি রিসোর্টে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাব দেন অধ্যাপিকাকে। কিন্তু তিনি তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর উপাচার্য হুমকি দেন যে তাঁর ক্যারিয়ার ক্ষতি হবে।' ২৯ আগস্ট, ২০২৩ তারিখে ওই মহিলাকে সেন্টার অফ ফাইন্যান্সিয়াল, রেগুলেটরি অ্যান্ড গভর্নেন্স স্টাডিজের ডিরেক্টর পদ থেকে অপসারণ করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, 'এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এনইউজেএস কর্তৃক অবিলম্বে ১,০০,০০০ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। অধ্যাপিকা ই-মেইলের মাধ্যমে এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্যদের কাছে, এমনকী চ্যান্সেলরের কাছেও হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।'
আরও পড়ুন-'নিজের দেশে ফিরে যা…', ব্রিটেনে শিখ তরুণীকে ধর্ষণ করে হুমকি ‘সাদা চামড়ার লোকের’
ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জুডিশিয়াল সায়েন্সেস-র উপাচার্যের বিরুদ্ধে এক অধ্যাপিকাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। এই অভিযোগ ওঠার পরে একটি কমিটি গঠন হয়। তবে অনেক দেরিতে অভিযোগ জানানোর কারণ দেখিয়ে অধ্যাপিকার দাবি খারিজ করে দিয়েছিল সেই কমিটি। গত বছর কলকাতা হাইকোর্ট কমিটিকে অভিযোগ পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছিল। পরে অভিযোগটি খারিজ করে দেয় উচ্চ আদালত। মহিলার অভিযোগ, তিনি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর এবং ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বেশ কয়েকবার যৌন হয়রানি করেছিলেন উপাচার্যের। আরও অভিযোগ, অধ্যাপিকার বেতন দিতে বিলম্ব করছেন উপাচার্য। এমনকী তাঁকে হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে।