স্বামীর হত্যায় সুবিচার দেওয়ার জন্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে প্রকাশ্যে ধন্যবাদ জানালেন বিরোধী সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক পূজা পাল। আর তারপরই তাঁকে সাসপেন্ড করে দিয়েছে সপা। ২০০৫ সালে উত্তরপ্রদেশের বিএসপি বিধায়ক রাজু পাল খুনে মূল অভিযুক্ত গ্যাংস্টার আতিক আহমেদকে দোষী সাব্যস্ত করে প্রয়াগরাজ আদালত। কিন্তু ২০২৩ সালে গ্যাংস্টার আতিক আহমেদ এবং তার ভাই আশরাফ আহমেদকে ২০২৩ সালে গুলি করে হত্যা করে সাংবাদিকের ছদ্মবেশে তিন ব্যক্তি।
২০০৫ সালে নিহত রাজু পালের স্ত্রী হলেন সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক পূজা পাল। বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের অপরাধীদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতির ভূয়সী প্রশংসা করছেন তিনি। বিধানসভায় 'ভিশন ডকুমেন্ট ২০৪৭'-এর উপর আলোচনায় পূজা বলেন, 'সবাই জানে কে আমার স্বামীকে (রাজু) খুন করেছে। আমাকে ন্যায়বিচার দেওয়ার জন্য এবং অন্য কেউ যখন আমার কথা কর্ণপাত করেনি, তখন আমার কথা শোনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।' তিনি আরও বলেন, জিরো টলারেন্স নীতির মাধ্যমে প্রয়াগরাজে মুখ্যমন্ত্রী আমার মতো আরও অনেক মহিলাকে ন্যায়বিচার দিয়েছেন। যার ফলে আতিক আহমেদের মতো অপরাধীরা নিহত হয়েছে। আজ, গোটা রাজ্য তাঁর দিকে বিশ্বাসের চোখে তাকিয়ে রয়েছে।'
আরও পড়ুন-পুরপ্রশাসনকে ভর্ৎসনা! পথ কুকুর বিতর্কে রায়দান স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট
বিরোধী দলের বিধায়ক হয়েও পূজা পাল বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী আমার স্বামীর খুনি আতিক আহমেদকে কবর দিয়েছেন। আমি যখন দেখলাম আতিক আহমেদের মতো অপরাধীদের বিরুদ্ধে কেউ লড়তে চায় না, তখন আমি আওয়াজ তুলেছিলাম। যখন আমি এই লড়াইয়ে ক্লান্তবোধ করতে শুরু করি, তখন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ আমাকে ন্যায়বিচার দিয়েছেন।' সূত্রের খবর, ভাই আশরাফকে কম ভালবাসতেন না আতিক। অভিযোগ ছিল, ভাইয়ের জন্যই নাকি রাজু পালকে খুন করেছিলেন আতিক, যে অপরাধের মামলা মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর পিছু ছাড়েনি।
আরও পড়ুন-পুরপ্রশাসনকে ভর্ৎসনা! পথ কুকুর বিতর্কে রায়দান স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট
২০০৪ সালে ফুলপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে লোকসভা নির্বাচনে জিতে সাংসদ হয়েছিল আতিক। সমাজবাদী পার্টির টিকিটে সেবার ভোটে জিতেছিল সে। উত্তরপ্রদেশের ওই আসন থেকে অতীতে ভোটে জিতেছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুও। আতিক সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর ইলাহাবাদ পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র শূন্য হয়ে যায়। ২০০৫ সালে সেখানে বিধানসভা উপনির্বাচন হয়। আতিকের জায়গায় ভোটে দাঁড়িয়েছিল ভাই। কিন্তু বহুজন সমাজ পার্টি রাজু পালের কাছে হেরে যায় আশরাফ। আতিকের কাছে ভোটে হার ছিল বড় ধাক্কা।এরপরেই ২০০৫ সালের ২৫ জানুয়ারি খুন করা হয় রাজুকে। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন রাজু। বাড়ির কাছেই খুন করা হয় তাঁকে। সঙ্গে ছিলেন দুই সহযোগী। অভিযোগ, খুনের নেপথ্যে ছিল আতিক এবং তার ভাই আশরাফ।এরপরেই আতিক, আশরাফ এবং সাত জন অপরিচিতের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন রাজুর স্ত্রী পূজা পাল। যদিও রাজু খুনের মামলায় আশরাফ-সহ বাকি সাত জনকে বেকসুর খালাস করেছিল আদালত। ওই বছরই ইলাহাবাদ পশ্চিম কেন্দ্রে ফের উপনির্বাচন হয়। জয়ী হয় আশরফই।