গত সপ্তাহে প্রকাশিত এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পাইলটস (এফআইপি)। পাইলটদের সংস্থা তদন্ত থেকে পাইলট প্রতিনিধিদের বাদ দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে এবং কাউকে এই দুর্ঘটনার জন্য 'দোষারোপ' করার আগে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, 'পুঙ্খানুপুঙ্খ, স্বচ্ছ এবং তথ্য-ভিত্তিক তদন্তের আগে কাউকে দোষারোপ করা অপরিপক্ক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতা হবে। এই ধরনের অনুমানমূলক মন্তব্য উচ্চ প্রশিক্ষিত ক্রু সদস্যদের পেশাদারিত্বকে ক্ষুণ্ন করে এবং তাদের পরিবার এবং সহকর্মীদের অযৌক্তিক কষ্ট দেয়।'
কয়েকদিন আগেই এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর (এএআইবি) রিপোর্টে বলা হয়েছে, আমদাবাদে বিধ্বস্ত হওয়া লন্ডনগামী এআই১৭১ বিমানের দুটি ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচই টেকঅফের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে 'রান' থেকে 'কাটঅফ' করা হয়েছিল। প্রতিবেদনে ককপিটে দুই পাইলট সুমিত সাভারওয়াল ও ক্লাইভ কুন্দরের কথোপকথনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল। একজন পাইলট অপরজনকে নাকি জিজ্ঞাসা করেছিলেন, 'আপনি ফুয়েল সুইচ কেন কাটঅফ করলেন?', তখন অন্যজন জবাবে বলেছিলেন, 'আমি করিনি'। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আসতেই দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে জল্পনা আরও বেড়ে গিয়েছে।
এই আবহে এফআইপির বিবৃতিতে তদন্তের বিভিন্ন ব্যাখ্যা নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে। এরই সঙ্গে এফআইপির তরফে অভিযোগ করা হয়েছে যে প্রতিবেদনটি 'পাইলটের ত্রুটির দিকে ইঙ্গিত করছে' এবং তাই ককপিট ভয়েস রেকর্ডিংয়ের উপর বেশি নির্ভর করছে। এই নিয়ে পাইলট সংগঠন বলে, 'প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে ব্যাপক তথ্যের অভাব রয়েছে এবং পাইলটের ত্রুটি বোঝাতে এবং ফ্লাইট ক্রুদের পেশাদার দক্ষতা এবং সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বেছে বেছে প্যারাফ্রেজড ককপিট ভয়েস রেকর্ডিংয়ের উপর নির্ভর করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এই পদ্ধতিটি উদ্দেশ্যমূলক বা অসম্পূর্ণ।'
এদিকে ডিজিসিএ ২১ জুলাইয়ের মধ্যে সমস্ত বোয়িং ৭৮৭ এবং ৭৩৭ জেটের জ্বালানি সুইচের লকিং মেকানিজম পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিল এয়ারলাইনগুলিকে। এর মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তাদের সব বিমানেই ফুয়েল সুইচ ঠিক আছে। উল্লেখ্য, ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলি প্রায় ১৫০টি বোয়িং ৭৩৭ এবং ৭৮৭ বিমান পরিচালনা করে। এয়ার ইন্ডিয়ার রয়েছে ৩৩টি বোয়িং ৭৮৭। বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারটিতে আছে হানিওয়েল ৪টিএল৮৩৭-৩ডি মডেলের ফুয়েল সুইচ। এএআইবির প্রতিবেদনে ২০১৮ সালের মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) বুলেটিনের উদ্ধৃতি দিয়ে বোয়িং ৭৮৭ সহ বোয়িং বিমানগুলিতে জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ সুইচ লকিং প্রক্রিয়াগুলির সম্ভাব্য সমস্যা সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছিল। যদিও তাতে উদ্বেগের কোনও বিষয় নেই বলে দাবি করেছে বোয়িং।