মাস তিনেকের বিরতির পরে আবার সিরিয়ায় হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলি সেনা। এই আবহে সুন্নি কট্টরপন্থী শাসকগোষ্ঠী এবং দ্রুজ সংখ্যালঘু নেতারা বুধবার নতুন করে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে।এই যুদ্ধবিরতি এমন এক সময়ে হল, যখন সুইদা প্রদেশে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও দ্রুজ সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলছিল, যা সে দেশের যুদ্ধ-পরবর্তী স্থিতিশীলতা নষ্ট করার হুমকি দিচ্ছিল এবং ইজরায়েলের হস্তক্ষেপকে উস্কে দিয়েছে।
ইতিমধ্যে সরকারের কনভয়গুলি দক্ষিণ সিরিয়ার সুয়েইদা প্রদেশ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং দ্রুজ ধর্মীয় নেতার ভিডিও বার্তায় ঘোষিত এই চুক্তি বহাল থাকবে কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।এদিকে, ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী বুধবার দামাস্কাসের প্রাণকেন্দ্রে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সদর দফতরে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে দামাস্কাসের উপকণ্ঠে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছেও আরেকটি হামলা চালানো হয়। ইজরায়েল জানিয়েছে, তারা দ্রুজ সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় এবং ইসলামিক জঙ্গিদের তাদের সীমান্ত থেকে দূরে সরিয়ে দিতে এই অভিযান চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন-'আপাতত ‘উদয়পুর ফাইলস’ মুক্তি পাবে না!' কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় সুপ্রিম কোর্ট
এদিকে, সংঘর্ষের তীব্রতা বাড়তেই ইজরায়েল-নিয়ন্ত্রিত গোলান মালভূমি এবং উত্তর ইজরায়েলের দ্রুজ সম্প্রদায়ের শত শত সদস্য সিরিয়া সীমান্তে জড়ো হয়েছেন। সংঘর্ষের তীব্রতা বাড়ায় তারা স্বজনদের ভাগ্য নিয়ে শঙ্কিত। সুয়েইদা প্রদেশের ঘটনায় ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রাণহানি এবং আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যেই সিরিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে এই যুদ্ধবিরতিকে 'সুয়েইদা প্রদেশের পূর্ণ সংহতি' এবং 'সকল সামরিক অভিযান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ' করার একটি পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে এর আগে ঘোষিত একটি যুদ্ধবিরতি দ্রুত ভেঙে যাওয়ায় এই নতুন চুক্তি কতটা স্থায়ী হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ইজরায়েল বারবার জোর দিয়ে বলছে যে, তারা তাদের সীমান্তের নিরাপত্তা এবং দ্রুজ সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই অঞ্চলের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন-'আপাতত ‘উদয়পুর ফাইলস’ মুক্তি পাবে না!' কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় সুপ্রিম কোর্ট
এর আগে মে মাসে সুন্নি-দ্রুজ সংঘর্ষের সময় সিরিয়ায় হানা দিয়েছিল ইজরায়েল সেনা। সে সময় বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার জানিয়েছিল, সংখ্যালঘু দ্রুজদের রক্ষার উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ।গত ডিসেম্বরে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের পতনের পরও ধারাবাহিক হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েল। গোলান মালভূমির সিরিয়ার দিকে থাকা বাফার জোনের দখল নিয়ে ইজরায়েলি সেনা পৌঁছে গিয়েছিল মাউন্ট হেরমনের কাছে। অন্যদিকে, সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম এবং তাদের সহযোগী জইশ আল-ইজ্জার যৌথবাহিনীর রাজধানী দামাস্কাস দখলের পরে শিয়া শাসক আসাদ সপরিবারে রাশিয়ায় পালিয়ে গিয়েছিলেন। সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শরার জমানায় শিয়াদের পাশাপাশি সংখ্যালঘু দ্রুজ এবং কুর্দ জনগোষ্ঠীর উপরে সুন্নি সশস্ত্র বাহিনীর হামলার অভিযোগ উঠছে ধারাবাহিক ভাবে।