তামিলনাড়ুর পর এবার মহারাষ্ট্র। দেশে ভাষা প্রতিবাদের পরিধি বাড়ছে। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের থানে জেলার মিরা ভাইন্দর এলাকায় মারাঠি ভাষায় কথা না বলার জন্য এক খাবারের দোকানের মালিকের উপর হামলা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা যে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলেন, তার পাল্টা হিসেবে রাজ ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার বিক্ষোভ মিছিল ঘিরে উত্তাল মুম্বই। মুম্বই পুলিশ মঙ্গলবার কয়েকজন এমএনএস কর্মীকে আটক করেছে।আর এরপর থেকে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। (আরও পড়ুন: ফের টিটিপির হামলা পাক সেনার ওপর, একাধিক জওয়ানকে হত্যার দাবি)
আরও পড়ুন: রাজস্থানের চুরুতে ভেঙে পড়ল ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান, আশেপাশে মিলল দেহাবশেষ
জানা গেছে, মারাঠি একীকরণ সমিতির তত্ত্বাবধানে এমএনএস এবং অন্যান্য মারাঠি-সমর্থক গোষ্ঠী এই মিছিলের আয়োজন করেছিল। সম্প্রতি মুম্বইয়ের কাছে থানের মিরা-ভায়েন্দারে মারাঠি ভাষায় কথা বলতে অস্বীকার করার জন্য একজন স্থানীয় দোকানের মালিককে এমএনএস কর্মীরা মারধর করার পর ব্যবসায়ীদের আয়োজিত আন্দোলনের পাল্টা এই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল এমএনএস। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ জানান, সমাবেশে এমএনএস নেতাদের অংশগ্রহণের পরিকল্পনা করেছিলেন, তার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে দলটি একটি নির্দিষ্ট পথ দাবি করে যা আইনশৃঙ্খলার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল। তিনি আরও বলেন, 'সমাবেশ আয়োজনে কোন বিরোধিতা নেই। তারা যে পথ চেয়েছিল সেটার অনুমতি দেওয়া সম্ভব ছিল না। পুলিশ তাদের পথ পরিবর্তন করতে অনুরোধ করেছিল, কিন্তু আয়োজকরা অনড় ছিলেন।'
অন্যদিকে, পুলিশি পদক্ষেপের জন্য এমএনএস নেতা সন্দীপ দেশপান্ডে রাজ্য সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন। দেশপান্ডে বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী বলছেন তিনি অনুমতি দিতে প্রস্তুত, কিন্তু শুধুমাত্র আমরা আমাদের মিছিলের পথ পরিবর্তন করলে। এটা আমাদের কণ্ঠস্বর দমন করার একটি কৌশল।' এই ঘটনায় সাতজন এমএনএস কর্মীকে আটক করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) অধীনে দাঙ্গা, হুমকি এবং হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। তবে, তাদের পুলিশ নোটিশ প্রদানের পর ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে, ব্যবসায়ীর উপর হামলার প্রতিবাদে ভাইন্দরের ব্যবসায়ীরা, বিশেষ করে গুজরাটি ও মারওয়াড়ি সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীরা, গত ৩ জুলাই একদিনের জন্য দোকান বন্ধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তারা অভিযোগ করেন, যদিও তাদের বাড়ি মহারাষ্ট্রের বাইরে, তারা দশকের পর দশক ধরে এখানে ব্যবসা করে আসছেন এবং মারাঠি ভাষার প্রতি তাদের কোনও অসম্মান নেই।
আরও পড়ুন: ডিফেন্স হাউজিংয়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার ৩২ বছর বয়সি পাক অভিনেত্রীর পচা-গলা দেহ
মহারাষ্ট্রে ভাষা নিয়ে এই সাম্প্রতিক বিতর্ক রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে নতুন মেরুকরণের সৃষ্টি করেছে। এমএনএস দীর্ঘদিন ধরে মারাঠি ভাষার প্রাধান্য এবং মহারাষ্ট্রে স্থানীয় অধিকারের পক্ষে আন্দোলন করে আসছে।তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে এমএনএস-এর এই হামলার নিন্দা করেছেন, আবার কেউ কেউ মারাঠি ভাষার প্রচারের পক্ষে কথা বলেছেন। তবে বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন, ভাষার প্রশ্নে সম্মান ও সমতা বজায় রাখা জরুরি। এই বিতর্ক মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।