৮০তম বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিশেষ ট্রেনে করে চিনে পৌঁছলেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। এমনটাই জানিয়েছে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র।১৪ বছরের শাসনকালে এটি কিমের প্রথম বড় বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে যোগ দান।ফলে এবার পাশাপাশি এক ফ্রেমে দেখা যেতে পারে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও কিম জং উন-কে। অনেকেই বলছেন, এমনটা হলে তা চিনের জন্য ‘কূটনৈতিক জয়।'
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র রোডং সিনমুন জানিয়েছে, সোমবার সে দেশের রাজধানী পিয়ংইয়্যাং থেকে নিজের বিশেষ ট্রেনে রওনা দেন কিম জং উন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন উত্তর কোরিয়ার বিদেশমন্ত্রী চোয়ে সন হুই-সহ শীর্ষ কর্মকর্তারা। সোমবার রাতেই ট্রেনটি চিনের সীমান্ত শহর দানদং-এ পৌঁছয়। মঙ্গলবার ট্রেনটি বেইজিংয়ে পৌঁছেছে। এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছিল, বেজিংয়ে আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দিতে ট্রেনে রওনা হয়েছেন কিম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ ও জাপানের বিরুদ্ধে চিনের লড়াইয়ের ৮০ বছর পূর্তি স্মরণে মিলিটারি প্যারেডর আয়োজন করা হয়েছে। একে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘বিরোধী’ তিন দেশের সম্ভাব্য ঐক্য প্রদর্শনের মঞ্চ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে এখনও কোনও ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের খবর মেলেনি। কিম ও পুতিন-সহ মোট ২৬ জন বিশ্বনেতার বুধবারের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা। এদিকে, ২০১৯ সালের পরে চিন গিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক। ২০১১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পরে এ নিয়ে মোট চার বার চিন সফর করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন-'কূটনীতি বুঝতে চান না!' একমঞ্চে তিন বৃহৎ শক্তি, ট্রাম্পকে তুলোধোনা প্রাক্তন মার্কিন NSA-র
রোডং সিনমুনে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গিয়েছে, কিম তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে বিশেষ গাঢ় সবুজ রঙের একটি ট্রেনে দাঁড়িয়ে ও হাসিমুখে হাত নেড়ে অভিবাদন জানাচ্ছেন। এ ট্রেনটিই সম্ভবত সেই বুলেটপ্রুফ বিশেষ ট্রেন, যা দিয়ে তিনি অতীতে চিন ও রাশিয়া-সহ অন্যান্য দেশে সফর করেছিলেন। অন্যদিকে, সোমবার উত্তর কোরিয়া চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাম্প্রতিক একটি বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছে। সেই বক্তব্যে বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থা আরও ন্যায্য করার আহ্বান জানিয়েছেন জিনপিং। তিনি বলেন, এ লক্ষ্য পূরণে চিন এবং উত্তর কোরিয়ার দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার হবে। এ বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার উপ-বিদেশমন্ত্রী মন্তব্য সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। অন্যদিকে, চিন সফরের আগে সোমবার কিম তার দেশের একটি ক্ষেপণাস্ত্র গবেষণাগার পরিদর্শন করেছেন।
আরও পড়ুন-'কূটনীতি বুঝতে চান না!' একমঞ্চে তিন বৃহৎ শক্তি, ট্রাম্পকে তুলোধোনা প্রাক্তন মার্কিন NSA-র
দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়োনহাপ বার্তা সংস্থার খবর অনুযায়ী, কিমের ট্রেনের কঠোর সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকার কারণে এটি ধীরে চলে। ট্রেনটিতে ফরাসি ওয়াইন, লবস্টারের মতো বিলাসবহুল খাবার পরিবেশনের জন্য রেস্তোরাঁ কোচ রয়েছে। প্রায় ৯০টি বগি নিয়ে এই ট্রেনে বৈঠককক্ষ, দর্শনকক্ষ ও শয়নকক্ষও আছে।কিম সর্বশেষ বেজিং সফর করেছিলেন ২০১৯ সালে। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ছিল ওই সফর। তখনও তিনি ট্রেনে গিয়েছিলেন। কিমের দাদা কিম ইল সুং ও তার বাবা কিম জং ইলও বিমানে সফর এড়িয়ে ট্রেনে সফরের ঐতিহ্য বজায় রেখেছিলেন।