ইরান-ইজরায়েলের সংঘাত চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইজরায়েল যেমন ইরানের উপরে আঘাত করছে, পাল্টা প্রত্যাঘাত করছে ইরানও। এরমধ্যেই সোমবার রাতে ইজরায়েলের হাইফা শহরে আছড়ে পড়ে ইরানের ছোড়া মিসাইল। এই হাফিয়াতেই রয়েছে আদানি গ্রুপের বন্দর। অনেকেরই প্রশ্ন, আদানির বন্দরও কি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে?
সূত্রের খবর, ইরানের মিসাইল হামলায় ইজরায়েলের বৃহৎ তৈল শোধনাগার বন্ধ হয়ে গেছে। তেল পরিশোধনাগরটি পরিচালনা করা প্রতিষ্ঠান বাজান গ্রুপ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইরানের মিসাইল হামলার কারণে তাদের সব কাঠামো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পরিশোধনাগারে মিসাইলের আঘাতে তিনজন নিহতও হয়েছেন বলে নিশ্চিত করে বাজান।
তেল অভিভ স্টক এক্সচেঞ্জকে দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, 'পরিশোধনাগারের পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পরিশোধনাগার এবং এর সঙ্গে অন্যান্য কোম্পানিগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা এখন বিদ্যুৎ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।' ইজরায়েলের উত্তরে হাইফা উপসাগরের ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে অবস্থিত বজান তেল শোধনাগারটি। এটি দীর্ঘদিন ধরেই সম্ভাব্য হামলার লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত ছিল। যদিও অতীতে কখনও এটি সরাসরি হামলার শিকার হয়নি।
আরও পড়ুন-পাবলিসিটির ধান্দা ম্যাক্রোঁর, সবসময় ভুল বোঝ! ইরান-ইজরায়েল নিয়ে 'অপমান' ট্রাম্পের
এই আবহে বারবার উঠে আসছে ইজরায়েলে গৌতম আদানির সংস্থা পরিচালিত বন্দরের নাম। সম্প্রতি ইরান যে ব্যালেস্টিক মিসাইল ছুড়েছিল, তা হাইফা পোর্ট ও তার পার্শ্ববর্তী তেল শোধনাগারকে নিশানা করেছিল। বন্দরের কেমিক্যাল টার্মিনাল ও তেল শোধনাগারতে মিসাইলের কিছু ভাঙা অংশ পড়লেও, তাতে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বা কেউ আহতও হয়নি।
ভারতীয় আদানি গ্রুপের প্রধান অধিকর্তা জুগেশিন্দর রবি সিং রবিবার জানিয়েছেন যে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইজরায়েলের হাইফা বন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর মিথ্যে। শুক্রবার রাতে ইরান, ইজরায়েলের পারমাণবিক হামলার সময়, হাইফা বন্দর এবং তেল আভিভের নিকটবর্তী একটি তেল শোধনাগার লক্ষ্য করে হামলা চালায়। বন্দরের রাসায়নিক টার্মিনালে শার্পনেল পুড়ে যায় এবং তেল শোধনাগারে আরও কিছু প্রজেক্টাইল পোড়ে। কিন্তু ইজরায়েল সরকারের মতে, কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
আরও পড়ুন-পাবলিসিটির ধান্দা ম্যাক্রোঁর, সবসময় ভুল বোঝ! ইরান-ইজরায়েল নিয়ে 'অপমান' ট্রাম্পের
ইজরায়েলে কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে হাইফা বন্দর, যেখানে আদানি পোর্টস ২০২৩ সালে ১.২ বিলিয়ন ডলারে (ভারতীয় মুদ্রায় ১০,৪০০ কোটি টাকার মতো) ইজরায়েলের গ্যাডোট গ্রুপের সঙ্গে অধিগ্রহণ করে ৭০ শতাংশ অংশীদারিত্বে ব্যবসা করছে। উত্তর ইজরায়েলে অবস্থিত, বন্দরটি আদানি পোর্টসের বার্ষিক পণ্যসম্ভারের পরিমাণের প্রায় ৩ শতাংশ এবং ইজরায়েলি আমদানি ও রফতানির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। হাইফা বন্দর একটি গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে, যা ইজরায়েলের ৩০ শতাংশেরও বেশি আমদানি পরিচালনা করে। এটি আদানি পোর্টসের মালিকানাধীন, যা ৭০ শতাংশ শেয়ার নিয়ন্ত্রণ করে। ক্ষেপণাস্ত্রগুলি বন্দরের কাছাকাছি একটি প্রধান তেল শোধনাগারের আঘাত করে, তবে আদানির বন্দরের উপর প্রভাব সম্পর্কে কোনও খবর জানা যায়নি।