কুমন্তব্যের পর এবার এআই ভিডিও। বিহার কংগ্রেসের শেয়ার করা একটি এআই-তৈরি ভিডিওকে ঘিরে নতুন করে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। শুক্রবার দলের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডল থেকে প্রকাশিত সেই ভিডিওয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর প্রয়াত মা হীরাবেনকে ঘিরে ব্যঙ্গচিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়। বিজেপির অভিযোগ, এতে শুধু প্রধানমন্ত্রী নয়, তাঁর প্রয়াত মাকেও কটাক্ষ করা হয়েছে, যা রাজনৈতিক শালীনতার সব সীমা ছাড়িয়েছে।
কংগ্রেসের 'ভোট অধিকার যাত্রার' সময়, ইন্ডিয়া জোটের মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর মাকে 'নিয়ে ককথা' কাণ্ডে উত্তাল হয় জাতীয় রাজনীতি। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের নিশানায় মোদীর প্রয়াত মা। সম্প্রতি বিহার কংগ্রেসের তরফে এক্স হ্যান্ডেলে একটি এআই ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে, 'সাহেবের স্বপে এলেন মা।দেখুন কী মজাদার কথা হল?' ওই ভিডিও-তে দেখানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর স্বর্গগত মা স্বপ্নে তাঁকে বকাবকি করছেন। ওই ভিডিও-তে এআই-এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর মাকে দিয়ে বলানো হয়েছে, 'বাবা নরেন। ভোটের জন্য আর কতটা নিচে নামবে। প্রথমে তুমি আমাকে নোটবন্দির লাইনে দাঁড় করালে। তারপর আমাকে প্রণাম করারও রিল বানালে। এবার বিহারেও আমার নামে রাজনীতি করছ। অপমানজনক পোস্টার ব্যানার ছাপছো। রাজনীতির নামে আর কত নিচে নামবে?'
বিজেপির প্রতিক্রিয়া
ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ উগরে দেয় বিজেপি।অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে বিজেপি লিখেছে, 'প্রথম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রয়াত মায়ের সঙ্গে কংগ্রেস-আরজেডি প্ল্যাটফর্ম থেকে দুর্ব্যবহার করা হয়েছিল। এখন, তাঁর মায়ের একটি ভিডিও তৈরি করে তাঁকে অপমান করা হচ্ছে। কংগ্রেসের লোকেরা, একটু তো লজ্জা করো, তোমরা আর কত নিচে নামবে?' বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র প্রদীপ ভান্ডারী অভিযোগ করেন, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বেই কংগ্রেস এ ধরনের পদক্ষেপ করছে। তাঁর কথায়, 'কংগ্রেস-আরজেডি জোট বারবার প্রধানমন্ত্রীর মাকে অপমান করছে। বিহারের মানুষ এবার এর জবাব দেবে।' দলের মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা এক্স-এ লেখেন, 'বিহার কংগ্রেস আজ সব সীমা ছাড়িয়ে গেল। প্রয়াত এক মহিলাকে নিয়ে এমন কটাক্ষ জঘন্য ছাড়া কিছু নয়। এ শুধু প্রধানমন্ত্রী নয়, মহিলাদের ও মাতৃত্বশক্তিরও অপমান।' তিনি আরও বলেন, 'গান্ধীওয়াদির বদলে কংগ্রেস এখন গালি-ওয়াদি দলে পরিণত হয়েছে।'
অন্যদিকে বিহার কংগ্রেসের ইউনিট এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। তবে কংগ্রেস নেতা পবন খেরা পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, 'কাউকে অপমান করা হয়নি। বিজেপি সহানুভূতি আদায়ের লক্ষ্যে এটাকে রাজনৈতিক ইস্যু করছে। এখানে কোথায় তাঁর প্রয়াত মাকে অপমান করা হয়েছে? আমাকে একটা বাজে কথা রয়েছে দেখান। কোনও ইঙ্গিত, কোনও অসদুদ্দেশ্য দেখা যাচ্ছে? গোটা ভিডিওর কোথাও আপনি অপমানজনক কিছু রয়েছে বলে দেখাতে পারবেন? বাবা-মায়ের কর্তব্য হল এবং এটা তাঁদের অধিকার যে, সন্তানকে তাঁরা সুশিক্ষা দেবেন। তিনিও তাঁর সন্তানকে শিক্ষা দিচ্ছেন। এখন ছেলে যদি মনে করেন এটা তাঁর পক্ষে অপমানের, তাহলে সেটা তাঁর মাথাব্যথার কারণ। আমারও নয়, আপনারও নয়।'