২০০১-এ সংসদ ভবনে হামলায় দোষী সাব্যস্ত মহম্মদ আফজাল গুরু এবং নিষিদ্ধ জম্মু ও কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ মকবুল ভাটের কবর তিহাড় জেল চত্বর থেকে সরিয়ে দেওয়ার আবেদন খারিজ করে দিল দিল্লি হাইকোর্ট। আফজল গুরু এবং মকবুল ভাটকে সংশ্লিষ্ট মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। দু'জনকে তিহাড়ে ফাঁসি দেওয়ার পর কারাগারেই দেহ কবর দেওয়া হয়। পরিবারের হাতে দেহ হস্তান্তর করা হয়নি।
আরও পড়ুন-আন্দামানে 'প্রলয়' আতঙ্ক! ঘুম ভেঙেছে ভারতের দৈত্যাকার আগ্নেয়গিরির, জোরালো ভূমিকম্প
একটি জনস্বার্থের মামলায় আদালত বলেছে, এটি একটি সংবেদনশীল বিষয়। আফজাল গুরু এবং মকবুল ভাটের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সময় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে এক দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে আবারও এ ধরনের মামলা চালু করা সম্ভব নয়। তিহাড় জেল চত্বর থেকে আফজাল গুরু এবং মকবুলের কবর অপসারণের জন্য দিল্লি হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করা হয়। আদালত সেই মামলার রায় দিতে গিয়ে জানিয়েছে, এটি জাতীয় সিদ্ধান্ত। যা শুধুমাত্র উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করতে পারে। কোনও আইনসঙ্গত উপায়ে কারাগার চত্বরে দাফন বা কবরের বিষয়টি নিষিদ্ধ না হলে আদালত এতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। দিল্লি হাইকোর্ট আরও জানিয়েছে, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে ওই কবর জেল চত্বরেই রয়েছে। এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আগে সবদিক মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এতদিন পেরিয়ে এখন সেই সিদ্ধান্ত বদলের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতিরা জানান, 'উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ ছাড়া আইনের অনুপস্থিতিতে জাতীয় বিষয়ে নাক গলানোটা অযৌক্তিক। এই বিষয়গুলি খুবই স্পর্শকাতর। আমরা কি ১২ বছর পর এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে পারি?'
আরও পড়ুন-ফের H-1B ভিসার নিয়মে বদল! নয়া পন্থায় কর্মী বাছাই, কতটা সর্বনাশ হল ভারতীয়দের?
বিশ্ব বৈদিক সংস্থান সঙ্ঘ নামে একটি প্রতিষ্ঠান জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে বলে, দুই সন্ত্রাসবাদী, বিচ্ছিন্নতাবাদীর কবর কারাগারে থাকায় তিহাড় জেল জঙ্গিদের তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। কারাগারে এমন ব্যক্তিদের কবর থাকার অর্থ ভারতের স্বাধীনতা, অখণ্ডতাকে অমর্যাদা করা। প্রতিষ্ঠানটি আদালতের কাছে প্রস্তাব দেয় দুই জঙ্গি নেতার কবর অজ্ঞাত কোনও স্থানে সরানো হোক যেখানে সাধারণ মানুষ পৌঁছাতে পারবে না। কেন দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি নেতার দেহ কারাগারে কবর দেওয়া হয়েছিল? ২০০১ সালে সংসদ হামলায় আফজাল গুরুকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৩ সালে সংসদ ভবন হামলার মূলচক্রীকে ফাঁসি দেওয়া হয়। একইভাবে মকবুল ভাটকে ফাঁসি দেওয়া হয় ১৯৮৪ সালে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর দুজনের মৃতদেহ তিহাড় জেল চত্বরেই কবর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র।