যেসমস্ত বাংলাদেশিরা এত দিন ধরে বেআইনিভাবে ভারতে ঢুকে এখানেই বসবাস করছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে বিএসএফ। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমেও লেখালিখি শুরু হয়েছে। তথ্য বলছে, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত অন্তত ৭০ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে তাঁদের দেশে ঠেলে ফেরত পাঠিয়েছে বিএসএফ। যদিও স্বভূমে পা দিতেই ওই বাংলাদেশিদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এবং ধৃতরা যে সকলেই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছে বিজিবি-ও।
জানা গিয়েছে, উল্লেখিত সময়ের মধ্যে সিলেটের জৈন্তাপুর ও কোম্পানিগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জের ছাতক সীমান্ত দিয়ে ওই অনুপ্রবেশকারীদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। এর মধ্য়ে সিলেট জেলার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত যেতে বাধ্য হন ৫৩ জন।
বিজিবি সূত্রে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, জৈন্তাপুরের মোকামপুঞ্জি সীমান্ত দিয়ে ১৭ জন এবং মিনাটিলা সীমান্ত দিয়ে ২৩ জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার কালাইরাগ সীমান্ত দিয়ে ঢোকানো হয়েছে ১৩ জন বাংলাদেশিকে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন ১৭ জন পুরুষ ও ১৪ জন মহিলা। তাঁদের সঙ্গে ২২টি শিশুও রয়েছে।
বিজিবি ৪৮ নম্বর ব্যাটালিয়নের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহম্মদ নাজমুল হক বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম 'প্রথম আলো'কে জানিয়েছেন, আটক ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় সংগ্রহ করে প্রাথমিকভাবে বিজিবি-র তত্ত্বাবধানে দু'টি বিদ্যালয়ে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়েছে। তাঁদের অধিকাংশই কুড়িগ্রাম ও লালমণির হাট এলাকার বাসিন্দা। আটকদের নাম, ঠিকানা ও পরিচয়পত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে। পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাঁদের সকলকেই পরিবারের সদস্যদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
এছাড়াও, বাংলাদেশের সুমানগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার নোয়াকুট এলাকা দিয়ে ১৭ জন বাংলাদেশিকে স্বভূমে ফেরত পাঠিয়েছে বিএসএফ। বিজিবি-র সুনামগঞ্জ ২৮ নম্বর ব্যাটালিয়নের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই ১৭ জনের মধ্যে আটটি শিশু রয়েছে। একইসঙ্গে রয়েছেন, পাঁচজন পুরুষ ও চারজন মহিলা। এঁদের সকলেরই বাড়ি লালমণির হাট জেলায়।
বিজিবি-র দেওয়া এই তথ্য থেকেই স্পষ্ট, বিএসএফ যাঁদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছে, তাঁরা যে আসলে সেদেশেরই নাগরিক, সেটা তারা স্বীকার করে নিচ্ছে।