কেন্দ্রীয় সরকার পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছিল শান্তি ফেরাতে। কিন্তু, আহমেদাবাদে দুই ফুটফুটে রাজকন্যার মতো চেহারার বিমানকর্মীর মৃত্যুশোক মিলিয়ে দিয়েছিল দীর্ঘদিনের কুকি-মেইতেই বিবাদকে। গত ১২ জুন আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনায় মৃতদের মধ্যে রয়েছেন একজন কুকি, অন্যজন মেইতেই সম্প্রদায়ের বিমানকর্মী। যাঁদের অকালে চলে যাওয়া গোটা মণিপুরের হৃদয় ভিজিয়ে দিয়েছিল চোখের জলে। কিন্তু দুই সম্প্রদায়ের ক্ষতবিক্ষত মন ভুলিয়ে দিতে পারেনি সেই বিবাদকে। (আরও পড়ুন: এখনও 'ICU'-তে পাকিস্তানের রহিম ইয়ার খান বিমানঘাঁটি, বন্ধ থাকবে ৪ জুলাই পর্যন্ত)
আরও পড়ুন: USA কি ইরানে হামলা করবে? কবের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প? জানাল হোয়াইট হাউজ
সিংসন ও নানথৈয়ের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পরে মেইতেই ও কুকি দুই তরফে বিভিন্ন সংগঠন ও নেতারা দুই মেয়ের ছবি একসঙ্গে দিয়েই শোক জ্ঞাপন করেছিল। মেইতেই যৌথ মঞ্চ কোকোমি বলেছিল, সিংসনের পরিবার বিনা দ্বিধায় ইম্ফল বিমানবন্দরে তাঁদের মেয়ের শেষ চিহ্ন গ্রহণ করতে আসতে পারে। কিন্তু কুকিরা ভরসা পাননি। শেষ পর্যন্ত সিংসনের পরিবারের অনুরোধে ইম্ফল নয়, লামনুনথিয়েম সিংসনের দেহাবশেষ নিয়ে বৃহস্পতিবার পড়শি রাজ্য নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে নামে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। সেখান থেকে কনভয় করে সিংসনের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মণিপুরের কাংপোকপিতে আসেন কুকিরা। রাস্তায় মানববন্ধন, মোমবাতি মিছিলে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হল ঘরের মেয়েকে।শুক্রবার তাঁর শেষকৃত্য হবে। (আরও পড়ুন: খলিস্তানি চরমপন্থা কানাডার জন্য হুমকি, দাবি সেই দেশের গোয়েন্দা রিপোর্টে)
বৃহস্পতিবার বিমানে করে সিংসনের দেহ পৌঁছায় ডিমাপুর বিমানবন্দরে। বিমানবন্দরে কেবিন ক্রুর পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কুকি স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন এবং নাগাল্যান্ড প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্যরা। সেখানে বিমান কর্মীকে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তারা।সিংসনের ভাই জানিয়েছেন, 'সাধারণত আমরা (কুকি সম্প্রদায়) রাতে শেষকৃত্য করি না। সম্ভবত আগামীকালই এটি অনুষ্ঠিত হবে। আজ প্রার্থনা পর্ব এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সংক্রান্ত রীতিনীতি পালন করা হবে। আসলে কুকি-জোরা (মৃত্যু ভয়ে) ইম্ফলে প্রবেশ করেন না।বস্তুত, সিংসনের পরিবার আগে ইম্ফলের নিউ লাম্বুলানে এলাকায় থাকতেন। কিন্তু ২০২৩ সালের মে মাসে মণিপুরে জাতিগত হিংসা শুরু হলে তাঁরা কাংপোকপির পার্বত্য এলাকায় একপ্রকার পালিয়ে আসেন। একইভাবে মেইতেই সম্প্রদায়ের মানুষরাও পাহাড়ি এলাকা ছেড়ে উপত্যকায় চলে আসেন। এখন এই অঞ্চলগুলি স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির নিয়ন্ত্রণে, কেন্দ্রীয় বাহিনী শুধু বাফার হিসেবে কাজ করছে। (আরও পড়ুন: মহাকাশে যেতে আরও অপেক্ষা করতে হবে ভারতের শুভাংশুকে, ষষ্ঠবার কেন স্থগিত মিশন?)
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবি যে 'অবান্তর' তা স্পষ্ট হল পাক উপপ্রধানমন্ত্রীর কথাতেই
আরও পড়ুন: মদের কারণেই বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাড়িতে পুড়েছিল নগদ টাকা! দাবি রিপোর্টে
অন্যদিকে, মণিপুরের আরেক বিমানকর্মী এনগানথোই কে শর্মার পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত তাঁর ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।ফলে এনগানথোই ও সিংসনের দেহ একসঙ্গে, এক বিমানে পাঠানোও সম্ভব হয়নি। এনগানথোইয়ের বোন গীতাঞ্জলি জানান, 'আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি প্রক্রিয়াটি দ্রুত শেষ করতে। আমাদের পরিবার এখনও অপেক্ষায়।'এনগানথোই ছিলেন মেইতেই সম্প্রদায়ের, আর লামনুনথিয়েম ছিলেন কুকি-জো গোষ্ঠীর।