মার্চের শুরুতে নিষিদ্ধ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বালোচ লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) বিদ্রোহীরা প্রতিবেশী অপহরণ করেছিল জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন। প্রায় ৪৫০ জন যাত্রী ছিলেন সেই ট্রেনে। সেই হামলায় ২৮ জন সৈন্য এবং ২৬ জন বন্দি যাত্রী নিহত হয়েছিল বলে দাবি করেছিল পাক সরকার। আর সেই ঘটনার কয়েক মাস পরই ফের একবার বালোচ লিবারেশন আর্মির হামলা সেই জাফর এক্সপ্রেসেই। আইইডি বিস্ফোরণের মাধ্যমে ট্রেনটিতে গতরকাল হামলা চালানো হয় বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় ৬টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। বালোচিস্তান প্রদেশে মাস্টাঙে এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় কেউ নিহত হয়নি বলে দাবি করা হচ্ছে সরকারি ভাবে। বেশ কয়েকজন অবশ্য জখম হন এই হামলায়।
সম্প্রতি সন্ত্রাস বিরোধী পদক্ষেপের জন্য পাকিস্তানকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও। সেই মার্কো রুবিও গত অগস্টে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি এবং তার সহযোগী মজিদ ব্রিগেডকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। এই সংক্রান্ত বিবৃতিতে জাফর এক্সপ্রেসের হামলার কথাও উল্লেখ করেছিল আমেরিকা। সেখানে অবশ্য দাবি করা হয়েছে যে ৩১ জন সাধারণ যাত্রী নিহত হয়েছিল সেই হামলায়। অপারেশন সিঁদুরের সময় আমেরিকা টিআরএফ-কে নিষিদ্ধ করার পর থেকেই পাক সেনা প্রধান আসিম মুনির সুর চড়িয়েছিলেন মাজিদ ব্রিগেডের বিরুদ্ধে। এই আবহে পাকিস্তানের মন রাখতে আমেরিকা মাজিদ ব্রিগেডকে নিষিদ্ধ করেছিল অগস্টে। তবে এবার ফের সেই বালোচিস্তানেই জাফর এক্সপ্রেসে হামলা বিএলএ-র।
এদিকে বিএলএ-র মিডিয়া আর্ম হাক্কাল মার্চ মাসের জাফর এক্সপ্রেস অপহরণের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে গত মে মাসে। সেখানে দেখা গিয়েছে যে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের দলটি প্রথমে দক্ষিণ-পশ্চিম বালোচিস্তানের পার্বত্য অঞ্চলে একটি দূরবর্তী রেলপথ উড়িয়ে দেয়, তারপরে প্রায় ৪৫০ জন যাত্রী ভর্তি একটি ট্রেনে আক্রমণ করে। বিএলএ এই অপহরণের ঘটনার নাম দিয়েছে 'অপারেশন দারা-ই-বোলান ২.০'। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, বালোচ জঙ্গিরা কীভাবে পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর ওপর পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে। এই ভিডিওতে এই অপারেশনের প্রশিক্ষণ ও স্ক্রিনিং অপারেশনও দেখানো হয়েছে। ৩০ মিনিটের ফুটেজে ১১ মার্চের জাফর এক্সপ্রেস অপহরণের বেশ কিছু নাটকীয় মুহূর্ত দেখানো হয়েছে। এতে দেখা যায়, বিএলএ যোদ্ধারা, বিশেষ করে মজিদ ব্রিগেড, ফতেহ স্কোয়াড এবং অন্যান্য স্কোয়াড কীভাবে এই অভিযানটি চালিয়েছিল।