'বিজয় মনের মধ্যে থাকে।' পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীতকে সূক্ষ্মভাবে কটাক্ষ করলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাতে ভারতের বিরুদ্ধে জয়ের দাবির উপর কটাক্ষ করে ন্যারেটিভ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, 'এটি সব সময় মনের খেলা।' (আরও পড়ুন: বাইক নিয়ে ভারত দখল করার হাস্যকর হুমকি পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের গভর্নরের)
আরও পড়ুন: ৫টি পাক যুদ্ধবিমান থেকে F16 ধ্বংস হওয়ার কথা হজম হচ্ছে না খাজার, শুরু মিথ্যাচার
আইআইটি মাদ্রাসে একটি সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় সেনাপ্রধান ব্যাখ্যা করেছেন কীভাবে পাকিস্তান তাদের জনগণকে অপারেশন সিঁদুরের পরে বিজয়ের কথা বিশ্বাস করাতে সক্ষম হয়েছে।পাক সেনাপ্রধানকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, 'আপনি যদি একজন পাকিস্তানিকে জিজ্ঞাসা করেন তারা জিতেছে কি হেরেছে, তিনি বলবেন, আমার সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল হয়েছেন, আমরা নিশ্চয়ই জিতেছি।' ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের এই কৌশলের মোকাবিলা করেছে সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তাদের বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দিয়ে। জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, 'কৌশলগত বার্তা দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা প্রথম যে বার্তাটি দিয়েছিলাম তা ছিল, ন্যায়বিচার হয়েছে। এই বার্তাটি বিশ্বজুড়ে সর্বাধিক হিট পেয়েছে বলে আমি শুনেছি।' (আরও পড়ুন: BSF-এর হাতে ধরা পড়ল ৪ সশস্ত্র বাংলাদেশি দুষ্কৃতী, মিলল বাংলাদেশি পুলিশের ID)
আরও পড়ুন-'যুদ্ধবিরতি বিক্রির চেষ্টা করছেন পুতিন!' আলাস্কায় বৈঠকের আগে বিস্ফোরক জেলেনস্কি
তিনি আরও বলেন, দুই মহিলা অফিসারের নেতৃত্বে সেনা ও বায়ুসেনার যৌথ সাংবাদিক বৈঠক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও এক জুনিয়র কমিশন্ড অফিসারের তৈরি লোগো-সবই ছিল পরিকল্পিত কৌশলগত প্রচারের অংশ।জেনারেল দ্বিবেদী জানান, 'অপারেশন সিন্দুরে আমরা দাবা খেলেছি। আমরা জানতাম না শত্রু পরবর্তী কী পদক্ষেপ নেবে, এবং আমরা কী করব।এটি ছিল গ্রে জোন। গ্রে জোন মানে আমরা প্রচলিত অপারেশনের জন্য যাইনি। আমরা যা করেছি তা প্রচলিত অপারেশনের ঠিক নীচে। আমরা দাবার চাল দিয়েছি, শত্রুও তাই করেছে। কোথাও আমরা তাদের চেকমেট দিয়েছি, কোথাও আমরা নিজেদের ঝুঁকি নিয়ে তাদের নিশ্চিহ্ন করেছি। এটাই জীবন।' সেনাপ্রধান বলেন, 'তিন বাহিনীর প্রধানই পরিষ্কার ছিলেন যে কিছু একটা করতে হবে। আমাদের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল: তোমরা ঠিক করো কী করতে হবে। এই ধরনের আত্মবিশ্বাস, রাজনৈতিক নির্দেশনা, এবং রাজনৈতিক স্পষ্টতা আমরা প্রথমবার দেখেছি। এটাই আমাদের মনোবল বাড়িয়েছে।এটাই আমাদের সেনা কমান্ডারদের মাঠে নেমে তাদের বিবেচনা অনুযায়ী কাজ করতে সাহায্য করেছে।' (আরও পড়ুন: ভারতের ওপর ৫০০% শুল্ক চাপাতে চাওয়া সেনেটরের সঙ্গে বৈঠক ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের)
আরও পড়ুন: পাক বন্ধু আজারবাইজানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি, আর্মেনিয়াকে কী বার্তা ভারতের?
আরও পড়ুন: 'পহেলগাঁওয়ের পরদিনই রাজনাথ বলেছিলেন…', অপ সিঁদুরের বিশদ জানালেন সেনাপ্রধান
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পাকিস্তান-ঘনিষ্ঠ জঙ্গিরা পর্যটকদের উপর হামলা চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করে।দেশ যখন শোক ও ক্ষোভে ফুঁসছিল, তখন ভারতীয় বাহিনী ৭ মে ভোরে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের গভীরে নয়টি জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়, যাতে ১০০ জনের বেশি জঙ্গি নিহত হয়। গত মাসে অপারেশন মহাদেবের মাধ্যমে পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজন জঙ্গিকে নিশ্চিহ্ন করা হয়। জেনারেল দ্বিবেদীর বক্তব্যে স্পষ্ট হয় যে আধুনিক যুদ্ধে শুধুমাত্র মাঠের লড়াই নয়, জনমত গঠন এবং তথ্য যুদ্ধও সমান গুরুত্বপূর্ণ।