দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ক্রমশ বাড়ছে বুড়ো-বুড়িদের সংখ্যা। আর তা নিয়ে বেজায় চিন্তায় পড়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু। এই সমস্যা মোকাবিলায় দক্ষিণ ভারতের মানুষের প্রতি তাঁর বার্তা, যত বেশি করে সম্ভব সন্তানের জন্ম দিন। যাতে আগামী দিনে আরও বেশি করে অল্প বয়সীদের সংখ্য়া বাড়ে।
শনিবার আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এই প্রসঙ্গে বেশ কিছু মন্তব্য করেছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'রাজ্য সরকার এমন একটি আইন আনার কথা ভাবছে, যে আইন অনুসারে, কেবলমাত্র সেই সমস্ত ব্যক্তিরাই স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন, যাঁদের দুইয়ের বেশি সন্তান থাকবে।'
এই প্রসঙ্গে আগের একটি আইনের কথা বলেন চন্দ্রবাবু এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই আইনের বিপরীত প্রয়োগের পক্ষে সওয়াল করেন তিনি। উল্লেখ্য, আগে রাজ্যে এমন এক আইন পাস করা হয়েছিল, যার মাধ্যমে দুইয়ের বেশি সন্তান যাঁদের রয়েছে, তাঁরা স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারতেন না।
এ নিয়ে চন্দ্রবাবু বলেন, 'আমরা সেই আইন বদলে দিয়েছি। এবং এখন আমরা ভাবছি, সেই আইন বিপরীতভাবে প্রয়োগ করব। এমনকী, যেসমস্ত পরিবারে অধিক সন্তান থাকবে, তাদের সরকারের তরফে বেশি সুযোগ-সুবিধাও প্রদান করা হতে পারে।'
তিনি আরও বলেন, 'যদিও ২০৪৭ সালের আগে পর্যন্ত আমাদের কাছে জনসংখ্যাগত সুবিধা রয়েছে। তা সত্ত্বেও অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ দক্ষিণ ভারতে ইতিমধ্য়েই প্রবীণ নাগরিকগের আধিক্যের সমস্যা সামনে আসতে শুরু করেছে। জাপান, চিন এবং একাধিক ইউরোপীয় দেশ ইতিমধ্যেই এই সমস্যার মুখে পড়েছে। কারণ, তাদের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশই প্রবীণ। দক্ষিণ ভারতে প্রধান সমস্যা হল, তরুণদের অধিকাংশ অন্যান্য রাজ্যে বা বিদেশে গিয়ে পাকাপাকিভাবে বসবাস করতে শুরু করছেন।'
চন্দ্রবাবু উদ্বেগের সঙ্গে আরও জানান, দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে সন্তান উৎপাদনের হার ইতিমধ্যে কমে ১.৬ শতাংশে নেমে গিয়েছে। যা জাতীয় গড়ের (২.১) তুলনায় অনেকটাই কম।
তিনি বলেন, 'এই অবস্থা যদি লাগাতার চলতে থাকে, তাহলে আমরা দেখব, ২০৪৭ সালের মধ্যে এখানে প্রবীণদের সংখ্যাই বেশি হবে। যা কখনই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ দেশের নানা অংশের গ্রামগুলিতে কেবলমাত্র প্রবীণরাই থাকেন। কারণ, সেখানকার নবীন প্রজন্ম শহরে গিয়ে থাকতে শুরু করেছে।'
এই প্রসঙ্গে চন্দ্রবাবু সরকারের আগের ভাবনা ও অবস্থানকেও স্বীকৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'সেই সময় প্রাকৃতিক সম্পদের উৎসগুলির সংরক্ষণ নিয়ে ভয় ছিল। মনে করা হত, জনসংখ্যা অধিক হারে বাড়লে তা উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। আমরা লাগামছাড়া জনসংখ্যার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু, তাতে নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে।'