অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন ভারতে বসে গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়েছিল একাধিক দেশদ্রোহী। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে এবার দিল্লি থেকে এক নেপালি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অপারেশন সিঁদুর অভিযান চলাকালীন ওই ব্যক্তি পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এজেন্টদের জোগাড় করে দিয়েছিল ভারতীয় সিমকার্ড। সেই সিমে ভারতীয়দের ফোন করে সংবেদনশীল বহু তথ্য হাতিয়ে নেয় পাকিস্তান।
আরও খবর-পুজো করতে গিয়ে বড় বিপত্তি! শো'রুমের কাঁচ ভেঙে গাড়ি পড়ল নিচে, তারপর...
পুলিশ সূত্রে খবর, নেপালের বীরগঞ্জ অঞ্চলের বাসিন্দা ওই অভিযুক্তের নাম প্রভাত কুমার চৌরাশিয়া।৪৩ বছর বয়সি প্রভাতকে মার্কিন ভিসা এবং সাংবাদিকতার সুযোগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রলুব্ধ করা হয়েছিল। নেপালের ওই নাগরিক এই লোভ দেখিয়েছিল পাকিস্তানের আইএসআই। আর সেই প্রলোভনে অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন তাকে সিমকার্ড পাচারে রাজি করেছিল পাক গুপ্তচর সংস্থা। প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে প্রভাত নিজের আধার কার্ডের মাধ্যমে ১৬টি সিম কেনে। এরপর সেগুলি পাঠানো হয় নেপালে। নেপাল থেকে সেই সব সিম পাচার করা হয় পাকিস্তানে। সম্প্রতি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দিল্লির লক্ষ্মীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় প্রভাতকে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, প্রভাতের পাচার করা সিম পাকিস্তানের একাধিক জায়গায় সক্রিয় থাকতে দেখা গিয়েছে। যার মধ্যে ১১টি সিমের লোকেশন পাওয়া গিয়েছে লাহোরে। এছাড়াও ভাওয়ালপুর-সহ নানা জায়গায় দেখা গিয়েছে সিমের অস্তিত্ব। এই সিম ব্যবহার করে বহু হোয়াটসঅ্যাপ ও সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। এই ঘটনায় গুপ্তচরবৃত্তিতে সহায়তার অভিযোগে ওই নেপালি যুবকের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
আরও খবর-পুজো করতে গিয়ে বড় বিপত্তি! শো'রুমের কাঁচ ভেঙে গাড়ি পড়ল নিচে, তারপর...
পুলিশ অভিযুক্তের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি ডিজিটাল ডিভাইস এবং সিম কার্ডের খালি প্যাকেট খুঁজে পেয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় জানা যায় যে, প্রভাত ২০২৪ সালে নেপালের মাধ্যমে আইএসআই এজেন্টদের সংস্পর্শে এসেছিল। তাকে বলা হয়েছিল, ভারত থেকে সিম কার্ড সরবরাহ এবং প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত তথ্য এনে দিতে পারলে প্রভাত কুমার চৌরাশিয়াকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হবে। সেই লোভের ফাঁদে পা দিয়েই অভিযুক্ত লাতুরে তৈরি আধার কার্ড ব্যবহার করে বিহার ও মহারাষ্ট্র থেকে সিম কার্ড কিনে নেপালের মাধ্যমে আইএসআই এজেন্টদের কাছে পৌঁছে দিত। পাকিস্তানে বসে থাকা এজেন্টরা এই ভারতীয় নম্বরগুলি দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ তৈরি করে ভারতের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি চালাচ্ছিল।সূত্রের খবর, অভিযুক্ত প্রভাতের জন্ম ১৯৮২ সালে নেপালে। শিক্ষাজীবন যথাক্রমে নেপাল এবং বিহারের মোতিহারি থেকে সম্পূর্ণ হয় তার। পরবর্তীতে, সে ফার্মা সেক্টরে একজন মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং এরিয়া ম্যানেজার হিসেবে কাজ করে। ২০১৭ সালে, কাঠমান্ডুতে একটি লজিস্টিক কোম্পানি শুরু করে প্রভাত। কিন্তু সেই ব্যবসায় লাভের মুখ দেখা তো দূর, বরং ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এরপর বিদেশ যাওয়ার পরিকল্পনা করে সে। প্রভাতের ইচ্ছার বাস্তবায়নে সহায়তা করবে আইএসআই এমন প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পরেই সে পাক গুপ্তচর সংস্থার এজেন্টদের সংস্পর্শে আসে। স্পেশাল সেল প্রভাতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (বিএনএস) ধারা ৬১(২)/১৫২ এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করেছে এবং এখন তার নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্যদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে।