ঝাড়খণ্ডে মাওবাদী দমনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েনের খরচ বাবদ রাজ্যের কাঁদে জমেছে বিপুল অঙ্কের বকেয়া। যার পরিমাণ প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা। এবার এই বিপুল অঙ্কের অর্থ রাজ্যের পক্ষে মেটানো সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। এই কথা জানিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে তা মুকুবের আর্জি জানালেন।
আরও পড়ুন: CPI-এর রাজ্য কমিটির সদস্য খুন প্রকাশ্য দিবালোকে, পুলিশের জালে ৪ অভিযুক্ত
সম্প্রতি শাহকে পাঠানো এক চিঠিতে সোরেন লেখেন, মাওবাদী দমন কোনও একক সরকারের দায় নয়, বরং কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ দায়িত্ব। সেই কারণে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এই বকেয়া আদায়ের চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রীয় নীতির পরিপন্থী বলেই তাঁর অভিমত। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, ১৩,২৯৯.৬৯ কোটি টাকা বকেয়া যদি রাজ্যকে পরিশোধ করতে বাধ্য করা হয়, তাহলে তা উন্নয়ন প্রকল্পগুলিতে সরাসরি প্রভাব ফেলবে। সীমিত সম্পদ নিয়ে রাজ্য ইতিমধ্যেই করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি, দুর্যোগ মোকাবিলা ও জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে জেরবার। এই অবস্থায় অতিরিক্ত আর্থিক চাপ কার্যত অচল করে দিতে পারে রাজ্য সরকারকে। সোরেনের কথায়, রাজ্য সরকার সিআরপিএফের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরেই মাওবাদী দমনে সক্রিয়। ২০০০ সালে রাজ্য গঠনের পর থেকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৪০০-রও বেশি পুলিশ কর্মী। তবুও, যৌথ অভিযানের ফলে রাজ্যে চরমপন্থী কার্যকলাপ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে বলেও দাবি করেন তিনি। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, ‘আমি আশা করছি, কেন্দ্র এই বিষয়টিকে যুক্তরাষ্ট্রীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখবে এবং বকেয়া মুকুবের ক্ষেত্রে সদর্থক অবস্থান নেবে।’
উল্লেখ্য, রাজ্যে বর্তমানে নকশাল দমনে যৌথ বাহিনীর ব্যাপক অভিযান চলছে। রাজ্য পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত ছ’মাসে ১৯৭ জন মাওবাদীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, আত্মসমর্পণ করেছে ১০ জন এবং সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ১৭ জন। শীর্ষ সিপিআই (মাওবাদী) নেতাসহ বহু মাওবাদীর।মাথার দাম মিলিয়ে প্রায় ৮ কোটি টাকারও বেশি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতেই, কেন্দ্রীয় বাহিনীর খরচ মুকুব করে রাজ্যকে স্বস্তি দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন হেমন্ত সোরেন। এখন দেখার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার সেই দাবি কতটা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে।