Kali Puja by Subhas Chandra Bose: আজও স্বমহিমায় পূজিত হন দক্ষিণাকালী। সুভাষচন্দ্র বসুর উদ্যোগের শুরু হয় এই পুজো। কলকাতার এই পুজো ধরে রেখেছে সাবেকি মেজাজ।
বিপ্লবীদের ‘মা’
তখন আজকের কলকাতা শহরের কোনও অস্তিত্ব ছিল না। অথচ কালীক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত ছিল হুগলি নদীর তীরবর্তী এই জনপদ। মা কালীর আরাধনার অন্যতম ক্ষেত্র বলে এখানে ভিড় জমত উপাসক ও ভক্তদের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ক্ষুদ্র জনপদ অবশ্য মহানগরী হয়ে উঠেছে। ব্যস্ত শহরের চেহারা নিয়েছে তিলোত্তমা । তবে এত ভিড়ের মাঝেও অমলিন রয়েছে কালীমাহাত্ম্য। উত্তর কলকাতা আজও রয়েছে বেশ কিছু সুপ্রাচীন কালীপুজোর ঐতিহ্য। আর সেই সব কালীমন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু ইতিহাস। কিছু কিছু তার জনশ্রূতিও বটে। কালীপুজোর শুভ লগ্নে সেই বাড়ির আনাচকানাচের কাহিনিই আবার শোনা গেল। স্বমহিমায় প্রাচীন ভাব নিয়েও যে পুজোগুলি উজ্জ্বল, তার মধ্যে তিনটি পুজো প্রথম সারিতে।
জয় মিত্র কালীবাড়ি: কলকাতার প্রাচীন কালীপুজোগুলির মধ্যে জয় মিত্রর বাড়ির পুজো অন্যতম। গঙ্গাতীরে বরানগরে এই কালীমন্দির। নিয়মিত এই মন্দিরে আসতেন জানবাজারের রানি রাসমণি। সেখান থেকেই মায়ের প্রতি টান। তারপর কাশী যাওয়ার পথে স্বপ্নাদেশ পান। দক্ষিণেশ্বরে মন্দির প্রতিষ্ঠার ভাবনা বাস্তব হয় এরপর।
জোড়াসাঁকো: বাঙালির কাছে জোড়াসাঁকো মানেই ঠাকুরবাড়ি। তবে বনেদি কলকাতার এই অঞ্চলেই রয়েছে আরেক কালীবাড়ি। সাবেকি আমলের পুজো এখনও স্বমহিমায় চালু আছে সেখানে। বলির প্রচলন বহাল রয়েছে কালীপুজোয়। বেনারসিতে মোড়া মাতৃমূর্তি জুড়ে সোনার অলঙ্কারের ছটা। এই মন্দিরে মায়ের পা দুটি রূপোর তৈরি।
পাথুরিয়াঘাটা: পাথুরিয়াঘাটার এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত মন্দির নয়। বারোয়ারী পুজো। তবে এতেও জড়িয়ে অনেক ইতিহাস। ইংরেজ আমলে কলকাতার বহু ব্যায়াম সমিতির মতোই একটি ছিল পাথুরিয়াঘাটার ব্যায়াম সমিতি। আদতে যেখানে চলত বিপ্লবীদের গোপন কার্যকলাপ। এক সময় এই সমিতির সভাপতি ছিলেন সুভাষ চন্দ্র বসু। তাঁর উদ্যোগেই পুজো শুরু হয়। মা কালীর আরাধনায় এখানে যোগ দিতেন বহু বিপ্লবী। নয় দশকের পুরনো পুজো হলেও সেই সাবেকি মেজাজ আজও অটুট। মাকে এখানে দক্ষিণাকালী রূপে পুজো করা হয়।