অল্প বয়সেই হৃদরোগ সম্পর্কে বাচ্চাদের শেখানো শুরু করা উচিত। কোন খাবারগুলি স্বাস্থ্যকর, কোন খাবারে চর্বির আশঙ্কা থাকে, এইসব সম্পর্কে শিখতে হবে, বাবা মা এবং সন্তান উভয়কেই।
এ প্রসঙ্গে, আমেরিকান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স বলে যে ২ বছরের বেশি বয়সী বাচ্চাদের শরীরে ফ্যাট থেকে যাতে ৩০ শতাংশের বেশি ক্যালোরি না প্রবেশ করে। তবে, যতক্ষণ না একজন ডাক্তার পরামর্শ দিচ্ছেন, ততক্ষণ কিন্তু ছোট বাচ্চাদের কম চর্বি বা ফ্যাটযুক্ত খাবার খাওয়ানো উচিত নয়।
আরও পড়ুন: (Health Tips: পুজোয় অতিরিক্ত খাওয়া দাওয়ায় বেড়েছে ওজন? স্লিম হতে খান এই পানীয়গুলি)
বাচ্চাদের মধ্যে এই লক্ষণগুলো দেখলে সতর্ক হন
- যদি আপনার সন্তানের বিএমআই খুব বেশি বা তাদের মধ্যে স্থূলতা দেখা দেয়।
- যদি আপনার বাচ্চার স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ করতে গিয়েই শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়।
- যদি আপনার সন্তান বুকে ব্যথার অভিযোগ করে বা তাদের হার্ট খুব দ্রুত ছুটতে থাকে।
- যদি তাদের মাথা ঘোরে বা অজ্ঞান হয়ে যায়।
- যদি তাদের পা বা গোড়ালি ফুলে যায়।
এইচটি লাইফস্টাইলের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে, বেঙ্গালুরুর ক্লাউডনাইন হাসপাতালের একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, ডাঃ লক্ষ্মী মেনন, ব্যাখ্যা করেছেন যে বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের ছোটবেলায় যা খাওয়ান, তা বড় হওয়ার সাথে সাথে তাদের হার্টের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই ডাক্তারের দাবি, শিশুর প্রথম ৬ মাস বয়স পর্যন্ত তাকে শুধুই ব্রেস্টফিডিং করানো জরুরি। সম্ভব হলে কমপক্ষে এক বছর বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন।
ডাঃ মেনন আরও শেয়ার করেছেন যে সন্তান কখন ক্ষুধার্ত বা কখন তাদের পেট ভর্তি থাকে, তা বুঝতে শিখতে হবে বাবা মায়েদের। এটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করে। নিয়মিত খাবারের সময় নিশ্চিত করা, খাবারের প্রতি মনোযোগ দেওয়া এবং পরিবার হিসেবে একসঙ্গে খাওয়া শিশুদের ভালো খাবারের অভ্যাস শিখতে সাহায্য করতে পারে। বাচ্চাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাবারের থালিতে ভারসাম্য আনাও জরুরি।
আরও পড়ুন: (Parenting Tips: সন্তান বড় বেশি অবাধ্য? মারধোর বকাবকি ছেড়ে এই টিপস কাজে লাগান, সব কথা শুনবে)
কেমন খাবার খাওয়ানো উচিত বাচ্চাদের
- গোটা শস্য: এর মধ্যে গম, চাল, ভুট্টা এবং বাজরা জাতীয় খাবার রয়েছে। স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি এই খাবার।
- শাকসবজি: প্রতিদিন বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি খাওয়া ভালো। পুষ্টি নিশ্চিত করতে মরসুমের শাকসবজি খেতে ভুলবেন না। প্লেটের অন্তত অর্ধেক সবজি দিয়ে ভরে রাখা উচিত।
- ফল: প্রতিদিন একটি করে ফল খাওয়া উচিত। ঋতু অনুসারে ফল খাওয়ানো ভালো। আমেরিকান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স (এএপি) ১ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য কোনও ফলের রস না খাওয়ার পরামর্শ দেয় এবং ১-৩ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ফলের রস খেতে বলে, তবে তা যেন অর্ধেক কাপের বেশি না হয়।
- দুগ্ধজাত খাবার: দই, দুধ, বা পনির (ভারতীয় পনির) এর মতো খাবারগুলি খাওয়া ভালো।
- প্রোটিন: নিরামিষ এবং আমিষ উভয় উৎস থেকেই প্রোটিন আসতে পারে। আমিষ অপশনের মধ্যে রয়েছে চর্বিহীন মাংস এবং ডিম। নিরামিষ অপশনের মধ্যে রয়েছে ডাল (মসুর ডাল), মটর এবং মটরশুটি। রান্নায় তেল বা ঘি অল্প পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত।
আপনার সন্তানের সুস্থ জীবনের জন্য, এটা নিশ্চিত করতে হবে যে তার শরীরে দৈনিক ২০০০ কিলোক্যালরির বেশি না প্রবেশ করে। তবে, তার কোনও চিকিৎসা সমস্যা থাকলে, বা তার বয়স এবং কার্যকলাপের উপর ভিত্তি করে এই পরিমাণ পরিবর্তিত হতে পারে।