বর্তমানে বাংলা টেলিভিশনের হিট জুটি অর্কপ্রভ-অভিকা। ‘তোমাদের রাণী’র সুবাদে মাত্র কয়েক মাসেই আলোচনার কেন্দ্রে দুজনে। স্টার জলসার এই মেগা আপতত জমজমাট। একদিকে অন্তঃসত্ত্বা রাণী ডাক্তার হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে, অন্যদিকে দুর্জয়ের ডাক্তারি লাইলেন্স বাতিল হওয়ার পথে। শ্যুটিংয়ের ফাঁকে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে আড্ডা দিল জুটি।
‘তোমাদের রাণী’ শুরুর পর তো চার মাস কাটলো, জীবনে কী কী বদল এসেছে?
অর্ক: জীবন অনেকটা বদল এসেছে। এর আগেও আমি একই ধরণের জীবন কাটিয়েছি, কারণ আমি সহকারী পরিচালকের কাজ করেছি। শুধুমাত্র ভূমিকাটা বদলে গিয়েছে। আমি তো এমনই একটা জীবন চেয়েছিলাম, তাই প্রচণ্ড এনজয় করছি। কাজের মধ্যে থাকতে ভালোবাসি, মন-মেজাজ ভালো থাকে।
অভিকা: জীবনে বদল বলতে, আমি নিজে রাণীর দ্বারা প্রতিদিন অনুপ্রাণিত হই। আমি ওর মতো স্ট্রং হওয়ার চেষ্টা করি। সবচেয়ে বড় কথা আমার এত কম বয়স, সেখানে অন্তঃসত্ত্বা চরিত্রে অভিনয় করাটা আমার কাছে খুব চ্যালেঞ্জিং।
কীভাবে নিজেকে তৈরি করছো প্রেগন্যান্ট চরিত্রের জন্য?
অভিকা: প্রেগন্যান্ট ওম্যান কীভাবে হাঁটে-চলে সেগুলো ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি। প্রচুর ভিডিয়ো দেখছি। আসলে বাস্তবে তো এখনও এমন কোনও অভিজ্ঞতা হয়নি (হাসি)। আমি বিশেষত বিদ্যা বালানের কাহানি প্রচণ্ডভাবে ফলো করেছি। নিজের মধ্যে একটা মাদারলি ফিলিং আনার চেষ্টা করছি। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল, আমি ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করছি। তাই প্রপার জিম করছি, ডায়েটিশিয়ান দেখিয়ে নির্দিষ্ট ডায়েট ফলো করছি। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি ফল পাবো।
রাণীর সাফল্যে দুর্জয় কি ঈর্ষান্বিত? মাঝেমধ্যে ওকে কিন্তু সোশ্যালে তুলোধনার মুখে পড়তে হচ্ছে!
অর্ক: রাণী প্রশংসা কুড়োবে, এটা তো আমি মন থেকে বরাবর চেয়েছি। আমার থেকে ভালো ডাক্তার রাণী হবে সেটাই আমার বিশ্বাস। কিন্তু এখানে আমার সঙ্গে যা ঘটছে, সেটায় (লাইসেন্স বাতিল) আমার কোনও দোষ নেই। আমি তো চাইব রাণী গোটা ব্যাপারটা সামলে নেবে।
দুর্জয় কিন্তু নেগেটিভ নয়। তবে রাগের মাথায় অনেক কিছু বুঝতে পারে না। যারা রাগী হয়, তাঁরা কিন্তু সেইসময় রাগটা বার করে দেয়, মনে কিছু চাপা রাখে না। দুর্জয়ের মনটা কুচুটে নয়। আমি যাই বলি না কেন, আমি কিন্তু ওর বিরুদ্ধে নয়। আমি ওর বেটারহাফ।
তোমাদের অন্তরঙ্গ দৃশ্যের শ্যুটিং নিয়ে খুব চর্চা। সেইসব দৃশ্য শ্যুটের সময় কী কী কাণ্ড ঘটে?
অর্ক: আমাদের পরিচালক সবচেয়ে বেশি হাসাহাসি করে। আমাকে তো বলে, এত বয়স হয়েছে, এত প্রেম করেছিস। এখানে কেন এত নার্ভাস হস। সঙ্গী হয় আমাদের ডিওপি, সংকল্পদা। টেকনিক্যালি উনি এক্সপ্লেন করেন- কীভাবে কী করতে হবে। তারপর হয়ে যায় আর কী!
অভিকা: শ্যুটিং করার সময় ব্যাপারটা খুব ফানি হয়, আমি আর অর্কদা এখন খুব ভালো বন্ধু হয়ে গেছি। অন্তরঙ্গ দৃশ্যগুলো ফুটিয়ে তোলবার সময়ও ব্যাপারটা খুব মজার হয়। পরিচালকই সবটা বলে দেন। ওই রোম্যান্টিক পরিবেশটা তৈরি করা বেশ কঠিন। অর্কদাকে দেখলেই হাসি পায় ওই সময়, কারণ বাস্তবে তো আমরা বন্ধু ওর সঙ্গে এমন রোম্যান্স! সবারই আলাদা আলদা পছন্দের মানুষ রয়েছে, তো আমরা সেটা ইমাজিন করে নিই। (হাসি)
(অর্ক যোগ করলেন)
আমার জীবনে প্রেমের অভিজ্ঞতা অনেক হয়েছে। আমার বয়স কিন্তু ৩১, অনেক বছর ধরে অ্যাডাল্টহুড কাটাচ্ছি, অনেক কিছুই হয়ে গিয়েছে।
অর্কপ্রভ আর অভিকা কী প্রেম করছে?
অর্ক: না, একদম নয়। ওই পোস্টগুলোর সময়ও আমরা দুর্জয় বা রাণী হয়েই পোস্ট করি। আমরা খুব ভালো বন্ধু, এইটুকুই বলব। আপতত আমি একদম সিঙ্গল। (হাসি)
অভিকা: না, না! আমরা খুব ভালো বন্ধু। আমরা মোটেই প্রেম করছি না, স্পষ্ট করে জানাচ্ছি- আমরা রিলেশনে নেই। প্রেমটা শুধু পর্দাতেই আটকে।
TRP-র লড়াই তো তুঙ্গে, কতটা টেনশনে থাকা হয়?
অর্ক: যে গল্প বেশি ইন্টারেস্টিং হবে দর্শক সেটাই দেখবে। দর্শকের সঙ্গে সুবিচার করতেই আমরা ভালো গল্প বলার চেষ্টা করি। যে গল্পের সঙ্গে মানুষ কানেক্ট করতে পারবে, সেই সিরিয়াল হিট হবে। বাংলা সিরিয়ালে খুব বেশি খুন-খারাপি দেখানো হয় তা তো নয়। আমরা কোনও সোশ্যাল মেসেজ তুলে ধরার চেষ্টা করি। তোমাদের রাণী-তেও আমরা তুলে ধরছি, একটা মেয়ে অল্প বয়স পড়াশোনা আর সন্তানের দায়িত্ব সামলাতে পারবে। যারা এটা নিয়ে ভয় পাচ্ছে, তাদের সাহাস জোগানো। অন্য সিরিয়ালেও যদি রেলিভেন্ট গল্প থাকে, তাহলে তারও টিআরপি বাড়বে। সবাই ভালো কাজ করার চেষ্টা করছি।