অসুস্থ হয়ে আইসিইউ ও সিসিইউ-তে দুই অনশনরত জুনিয়র চিকিৎসক। তবুও আন্দোলনের ঝাঁঝ কমছে না। দেখতে দেখতে ৭ দিন পার, নিজেদের অবস্থানে অনড় অনশনকারীরা। লিভার,কিডনিতে সমস্যা নিয়ে অনিকেতের পর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র ডাক্তার অলোক ভার্মা এদিন হাসপাতালে। চিন্তা বাড়ছে। এর মাঝেই কিঞ্জল নন্দকে নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন শ্রীলেখা মিত্র! আরও পড়ুন-অনিকেতের পর ICU-তে আরও এক অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তার, ‘প্রশাসন শুনতে পাচ্ছেন?’ ক্ষুব্ধ কিঞ্জল
শুরু থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন শ্রীলেখা। আরজি করের নির্যাতিতার বিচার চেয়ে পথে নেমেছেন বাম সমর্থক এই অভিনেত্রী। মমতা সরকারকে বিঁধতে ছাড়েননি। কিন্তু হঠাৎ করেই কেন জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্য়তম মুখ তথা ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মী কিঞ্জলে বিরক্ত শ্রীলেখা? এতদিন এই তরুণের ভুরি ভুরি প্রশংসা শোনা গিয়েছে শ্রীলেখার মুখে। নিজেই সে-কথা খোলসা করেছেন শ্রীলেখা।
উৎসবে ফিরছি না! জোর গলায় বলেছিলেন শ্রীলেখা। সেই মতো এই বছর পুজো রংহীন অভিনেত্রীর কাছে। অষ্টমীর রাতে ধর্মতলায় ছুটেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাদের আন্দোলনকে সমর্থন জানাতে। সেখানেই কিঞ্জলের বক্তব্য শুনে হতাশ অভিনেত্রী। ধর্মতলায় মাইক হাতে কিঞ্জল বলেন, ‘যে বিপুল সংখ্যক মানুষের সাড়া পেয়েছি, অষ্টমীর সন্ধ্যেবেলা আমাদের সাথে, আমাদের দাবির, অধিকারে গলা মিলিয়েছেন… তাঁদের সকলকে আমাদের তরফ থেকে প্রণাম জানাই। আমাদের এই আন্দোলন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক আন্দোলন, যাঁরা এই আন্দোলনকে রাজনৈতিক রঙে রাঙানোর চেষ্টা করছে, তাদের WBJDF-কে তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছে’।
কিঞ্জলরে এই বক্তব্যেই আপত্তি শ্রীলেখার! তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘কালকে ধর্মতলায় আন্দোলন ও প্রেস মিটের সময় ভিড়ে পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলাম বিশ্বাস করুন ছাই না করুন। সেটা কথা নয়, কিঞ্জল নন্দ সহ এমডি সেলিম এবং অনশনকারী ডাক্তারদের বক্তব্য শুনলাম, আসল কথায় ফিরি- কিঞ্জলের এখনও ওই অরাজনৈতিক বিষয়টা কানে লাগলো… খানিক অবাক হলাম, হালকা বিরক্ত হলাম… এখনও? কোনও আন্দোলন অরাজনৈতিক হয় কি? কে জানে কম বুঝি আজকাল হয়ত। কারুর সংগ্রামকে অপমান করছি ভেবে বসবেন না যেন!’
শ্রীলেখাকে সমর্থন জানিয়ে একজন লেখেন, ‘যে কোনো আন্দোলন দিশাহীন রাজনৈতিক মতাদর্শ ছাড়া’। আরেকজনের মত, আমার মনে হয় এই অরাজনৈতিকটা মনে হয়তো বলতে চেয়েছে যে দলীয় রাজনীতি নয়। কারণ শাসক সব সময় চেষ্টা করে যাচ্ছে যে এই আন্দোলন টা কে দলীয় রং দেওয়ার, যাতে আন্দোলনের রিচটা কমে যায়'।
এরপর দশমীর সন্ধ্য়ায়, নিজের ফেসবুকে ডাঃ মানস গুমটার একটি বক্তব্য ভাগ করে নেন শ্রীলেখা। সেখানে লেখা হয়েছ, ‘হয়তো কিছু বিতর্কিত বিষয় রয়েছে WBJDF এর কারো অনভিপ্রেত বক্তব্যে। তাতে হয়তো কিছু মানুষ আহত হয়েছেন, যাঁরা এই আন্দোলনের সাথী এবং সহমর্মী। কিন্তু বৃহত্তর লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আপাতত এই ক্ষোভ এবং বিতর্ক সরিয়ে রেখেই আমাদের এগোতে হবে। এত বড় আন্দোলন,দু মাস পেরিয়ে গেলেও সমাজের সর্বস্তরের মানুষের ক্ষোভ আছড়ে পড়ছে রাজপথে। গণতান্ত্রিক চেতনা সম্পন্ন মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন, এই জনস্পর্ধা এক কথায় অভূতপূর্ব। কোন ত্রুটি, কিছু ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ যেন শাসক না পায়’। শ্রীলেখা সহমত, যে অনভিপ্রেত বিতর্ক এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে সরিয়ে আরজি করের নির্যাতিতার বিচার ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে থ্রেট কালচারের নিপাত যাওয়াই এখন একমাত্র লক্ষ্য।