ছোট পর্দার অতি পরিচিত মুখ রিয়া গঙ্গোপাধ্যায়। রিয়া পরিচালক অরিন্দম চক্রবর্তীকে বিয়ে করেন। প্রথমে সবটা ঠিক থাকলেও পরে তাঁদের সম্পর্কে নানা সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। এক সময় রিয়া জানিয়েছিলেন তিনি অরিন্দমের থেকে বিবাহ বিচ্ছেদ চান।স্বামীর বিরুদ্ধে একাধিক নারী সঙ্গের অভিযোগ তোলেন তিনি।
তবে তারপর মানসিক চাপ সামলে নিজের মতো করে দু’সন্তানকে নিয়ে জীবনকে গুছিয়ে নিয়েছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু ফের কিছুদিন আগে অরিন্দম প্রসঙ্গে স্যোশাল মিডিয়ায় রিয়ার বিস্ফোরক পোস্ট দেখা যায়। তারপর লাইভে এসেও নানা অভিযোগ করেন নায়িকা।
আরও পড়ুন: ‘ধূমকেতু’তে বিয়ের দৃশ্য শ্যুটের পর কেঁদেছিলেন শুভশ্রী? ‘আবেগ কখন…’, যা বললেন দেব
আর তাঁর সেই লাইভের পরিপ্রেক্ষিতে রিয়ার স্বামী অরিন্দম চক্রবর্তীও একটি লাইভ করেন। সেখানে তিনি রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করেন যে যদি রিয়া প্রমাণ করতে পারেন তিনি অন্য মহিলার সঙ্গে সহবাস করছেন, তাহলে তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে দেবেন! তাছাড়াও রিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন। তিনি দাবি করেন, তিনি প্রতি মাসে রিয়াকে ৭০ হাজার টাকা দেন। তা সত্ত্বেও আইনের সাহায্যে রিয়া আরও ৬০ হাজার টাকার খোরপোষ দাবি করেছেন, যা দিতে তিনি একেবারেই রাজি নন।
আর এবার লাইভের মাধ্যমে সেই সবটা নিয়ে অনুরাগীদের সঙ্গে কথা বললেন রিয়া। নায়িকা লাইভে বলেন, ‘এটা হয়তো আমার শেষবারের মতো লাইভে আসা। ডিজিটালি যে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি চলছে সেটা সমাজের উপরও খারাপ প্রভাব ফেলছে। আমিও চেয়েছিলাম দুটো পরিবার একসঙ্গে আলোচনায় বসে শান্ত ভাবে, ঠান্ডা মাথায় এটা মিটে যাক। আজ থেকে ১২ বছর আগে যখন পথ চলা শুরু করেছিলাম তখন আমাদের মধ্যে যে সম্মান, ভালোবাসা ছিল, সেটা এখন নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মননও বদলায় সেটাই হয়েছিল। তবে আমি সবটা শান্তিপূর্ণ ভাবে মিটিয়ে নিতে চেয়েছিলাম। আমি চেয়েছিলাম যে, সে আমার সন্তানের বাবা হিসেবে অন্তত আমাকে তাঁর জীবনে অন্য কারুর আসার খবরটা জানিয়ে, সম্মানের সঙ্গে আলাদা হতে বলুক। আর আমার সন্তানের বাবা হিসেবে নিজের দায়িত্বটুকু পালন করত ব্যাস। কিন্তু সেটা হয়নি, আমাকে টেনে নীচে নামানো হয়েছে। ওঁর জীবনে যেই আসুন তাঁকে এক্সপোজ করার আমার কোনও দরকার ছিল না। কিন্তু আমাকে এটা করতে বাধ্য করা হয়েছে। ও নোংরা অকথ্য ভাষায় আমার সঙ্গে কথা বলত। তাঁর অসুস্থ মা, আমার সন্তানদের দিব্যি দিত। এগুলোর প্রয়োজন ছিল না।’
আরও পড়ুন: স্বদেশে পাননি, জাওয়ানে শাহরুখ জাতীয় পুরস্কার জিততে হতবাক নেটপাড়া, বাজিমাত রানির
তারপরই রিয়া অরিন্দমের দাবির প্রসঙ্গ তুলে তাঁর মাসিক খরচের হিসাব দেন। তিনি বলেন, 'প্রতিমাসে ৭০ হাজার টাকা আমদের ও দেয়। কিন্তু আমাকে দেয় না। যে বাড়িটিতে বসে এখনও আমি লাইভ করছি, সেটা আমার হাওড়ার ফ্ল্যাট। এটা এখনও আমার ও আমার বর্তমান স্বামীর নামে রেজিস্ট্রার। এটা কেনার কারণ ছিল আমার বাবা-মায়ের কাছে আমি সন্তান প্রতিপালন করব। কারণ ওঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে আমার বনিবনা হচ্ছে না। তাই সেভাবে আমার স্বামী এই ফ্ল্যাটটি আমাকে কিনে দেয়। এর ইএমআই ২০,০০০ টাকা ও দেয়। আর যে মেয়েটি আমার সন্তানদের দেখে, তাঁকে ২০,০০০ টাকা দেয়, আমার সন্তানদের প্রতিমাসের স্কুলের ফি ও বাস নিয়ে ১৫,০০০। ৫,০০০ টাকা টিউশন ফি দেয়। যে দিন থেকে ও ওই সম্পর্কে জড়িয়েছে সেদিন থেকে আমার জন্য একটা টাকাও দেয় না। শুধু এবার ট্রেকিংয়ে গিয়েছিলাম সেই সময় টাকা দিয়েছিল। আর আমার সন্তানদের খাবার জন্য ১০,০০০ টাকা দেয়। তবে এটা ছাড়া আমার এই বাড়ির বিদ্যুতের বিল, সেটা অনেকটাই আসে, গ্যাসের খরচ, ফ্ল্যাটের মেনটেন্স আছে, তাছাড়া দৈনিক মুদিখানা জিনিস, তাছাড়া সন্তানদের নাচ, গান, আঁকা, সেই সব আছে। তাছাড়াও বাচ্চা ও পরিবারদের নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার মতো সব কাজ করি। আমার জিমের টাকা, গাড়ির ইএমআই সবটাই আমাকে দিতে হয়। সেই খরচাটাও অনেক বড়।'
শেষে রিয়া তাঁর স্বামীর পরকীয়া প্রসঙ্গেও নানা কথা ভাগ করে নেন। তিনি বলেন, ‘সে লাইভে এসে বলেছে, পরকীয়া যে কেউ করতে পারে। কিন্তু সেটা যেন অন্যের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতির কারণ যেন না হয়, এর প্রভাব তো আমার শিশুদের উপর পড়ছে। কোনও মানুষ কোটের ঝামেলায় জড়াতে চায় না। আমিও চাইনি। আমাকে বাধ্য করা হয়েছে।’ তাছাড়াও রিয়া তাঁর স্বামীর বর্তমান প্রেমিকার বিরুদ্ধেও নানা তথ্য প্রমাণ তুলে ধরেন ওই লাইভের মাধ্যমেই। তাছাড়াও বারবার লাইভে কাঁদতে দেখা যায় নায়িকাকে। আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন নায়িকা এইসব বলতে বলতে।