লোকসভা নির্বাচনের জন্য ১০টি প্রার্থীতালিকা (বাংলায় চতুর্থ) প্রকাশ করে ফেলল বিজেপি। কিন্তু এখনও ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে পারল না গেরুয়া শিবির। তবে পবন সিং কাণ্ডের পরে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করল। ওই আসন থেকে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়াকে টিকিট দিল বিজেপি। যিনি গতবার বর্ধমান-পূর্ব লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন। কিন্তু সেই আসন থেকে তাঁকে ছেঁটে ফেলে দিলীপ ঘোষকে টিকিট দেয় বিজেপি। শেষপর্যন্ত আসানসোল কেন্দ্র থেকে সেই 'বাতিল' নেতাকেই টিকিট দেওয়া হল।
আসানসোলে কেন আলুওয়ালিয়াকে টিকিট?
এমনিতে গত ২ মার্চ যখন লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রথম দফার প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করেছিল বিজেপি, তখন আসানসোল থেকে ভোজপুরি গায়ক পবনকে দাঁড় করানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে নারীবিদ্বেষী এবং বাঙালি-বিদ্বেষী তিরে বিদ্ধ হতে হয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে নিজেই আসানসোল থেকে নাম তুলে নেন পবন। তাঁর জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার বিরুদ্ধে কাকে দাঁড় করানো হবে, তা ঠিক করতে প্রায় পাঁচ সপ্তাহ নিল বিজেপি।
একটা সময় আসানসোল থেকে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জিতেন্দ্র তিওয়ারির নাম উঠতে শুরু করেছিল। কিন্তু দিনকয়েক আগে প্রাক্তন বিধায়কের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল, সেটা তাঁর সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় বলে বিজেপি সূত্রের খবর। তৃণমূল দাবি করেছে যে গত ২৬ মার্চ জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) সুপার ধনরাম সিংয়ের ফ্ল্যাটে গিয়ে কোন কোন তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করতে হবে, সেটার তালিকা দিয়ে এসেছিলেন জিতেন্দ্র। ফ্ল্যাটে ঢোকার সময় তাঁর হাতে একটি সাদা প্যাকেট ছিল, যাতে টাকা আছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখার দাবি তুলেছে তৃণমূল।
বিজেপি সূত্রে খবর, সেই বিতর্কের মধ্যে জিতেন্দ্রকে আসানসোলের প্রার্থী করলে ভালো বার্তা যাবে না বলে মনে করছিল একটি অংশ। আর তাতেই ‘ফেভারিট’ হয়ে ওঠেন আলুওয়ালিয়া। যিনি আসানসোলের ‘ভূমিপুত্র’। ঝরঝরে বাংলা বলতে পারেন। আবার অবাঙালিও। তাই শেষপর্যন্ত আসানসোলের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নামেই সবুজ সংকেত দেওয়া হয়। যে কেন্দ্রে একটা বড় অংশের ভোটার অবাঙালি।
অভিষেকের বিরুদ্ধে প্রেস্টিজ ফাইটে ধাক্কা?
পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে ৪১টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে বিজেপি। শুধু ডায়মন্ড হারবারেই এখনও কোনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। সেই কাজটা করার জন্য বিজেপির হাতে সময় আছে। আগামী ১ জুন ডায়মন্ড হারবারে ভোট হবে। আর মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষদিন হল ১৪ মে। কিন্তু এখনও প্রার্থী না দিয়ে প্রেস্টিজ ফাইটে বিজেপি ধাক্কা খেল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের মত।
দেশের আরও ৮টি আসনে প্রার্থী বিজেপির
পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি দেশের আরও আটটি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। চণ্ডীগড় আসন থেকে বিদায়ী সাংসদ কিরণ খেরকে টিকিট দেওয়া হয়নি। তাঁকে বাদ দিয়ে বর্ষীয়ান নেতা সঞ্জয় ট্যান্ডনকে টিকিট দিয়েছে বিজেপি। সেইসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের সাতটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে।