জীবনে দেখা ‘সবচেয়ে কঠিন বোলারের নাম বললেন শিখর ধওয়ান। আসলে নিজের ঝকঝকে ব্যাটিং স্টাইল এবং সর্বদা হাসিমুখের জন্য পরিচিত শিখর ধওয়ান। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে রঙিন ও আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বদের একজন। কিন্তু গ্যালারির উল্লাস আর ব্যাট-বলের বাইরেও রয়েছে এক যাত্রাপথ, যেখানে উঠে এসেছে জীবনসংগ্রাম, আত্মসমীক্ষা আর আত্মবিশ্বাসের অনন্য কাহিনি। এক সাক্ষাৎকারে শিখর ধাওয়ান খোলাখুলি কথা বললেন তাঁর আত্মজীবনী 'The One' নিয়ে। ভারতের তরুণদের উদ্দেশে জীবনদর্শন, স্মরণীয় ক্রিকেট স্মৃতি, এবং ভারতের উদীয়মান ক্রিকেটারদের নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি এই বইয়ে তুলে ধরেন তিনি।
খোলামেলা, সৎ এবং চিন্তাশীল — এক অন্য শিখর ধওয়ানকে দেখা গেল এখানে। আত্মজীবনী লেখার প্রেরণা নিয়ে ধাওয়ান বলেন, ‘আমি মানুষকে সেই যাত্রাটা দেখাতে চেয়েছিলাম, যা তারা টিভির পর্দায় দেখে না। 'The One' কেবল রান বা ম্যাচের গল্প নয় — এটা আমার আবেগের, ব্যর্থতার, হৃদয়ভাঙা মুহূর্তের, আধ্যাত্মিক উন্নতির এবং এক ব্যক্তিত্ব হিসেবে আমার বিকাশের কাহিনি। মাঠের বাইরের নীরব সংগ্রামগুলোও এতে আছে। আমি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের দুর্বল দিকগুলো তুলে ধরেছি, যাতে তরুণ প্রজন্ম সেটার সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পারে এবং কিছু শেখার সুযোগ পায়।’
এই সময়ে নিজের কেরিয়ারে দেখা সবচেয়ে কঠিন বোলারের নাম জানান ধাওয়ান। এই সময়ে স্লেজিং ও মজার মুহূর্তের কথাও জানান শিখর ধাওয়ান। তিনি বলেন, ‘ডেল স্টেইন সবসময়ই কঠিন প্রতিপক্ষ ছিলেন — ওর ছিল অসাধারণ গতি, আগ্রাসন, স্কিল আর সেই চোখের চাহনি! জেমস অ্যান্ডারসনও কঠিন ছিল। স্লেজিং তো খেলাটারই একটা অংশ। অনেক সময় স্লেজিং-ই সেরা খেলাটা বের করে আনে।’
এই সময়ে ইংল্যান্ড সফরে থাকা তরুণ ভারতীয় দল নিয়ে ধাওয়ান বলেন, ‘প্রথমেই, এজবাস্টনে ৫৮ বছর পর টেস্ট জয়ের জন্য গোটা দলকে অভিনন্দন জানাই — এটা এক অসাধারণ অর্জন। দ্বিতীয় টেস্টে যেভাবে দল ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সেটা প্রকৃত চরিত্র ও মানসিকতা দেখায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুভমন গিল সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে — ২৬৯ ও ১৬১ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেছে। বুমরাহর অনুপস্থিতিতে মহম্মদ সিরাজ আর আকাশ দীপ দারুণ বল করেছে। প্রথম টেস্টেও, যদিও আমরা হেরেছিলাম, কিন্তু অনেক ইতিবাচক দিক ছিল — গিল করেছিল ১৪৭, ঋষভ পন্ত দুই ইনিংসে ১৩৪ ও ১১৮ রানে দুর্দান্ত ব্যাট করে ইংলিশ কন্ডিশনে নিজের পরিণত মানসিকতা দেখিয়েছে।’
কেএল রাহুল ও যশস্বী জসওয়ালও চমৎকার সেঞ্চুরি করে ব্যাটিংয়ের ভিত গড়ে দেয়। ইংল্যান্ডে এক টেস্টে পাঁচটি শতরান — এটা সহজ ব্যাপার নয়। বুমরাহও প্রথম টেস্টে ৫ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন-আপকে নাড়া দিয়েছিল। প্রথম ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে দল আরও শক্তিশালীভাবে ফিরে এসেছে। দুটো ম্যাচেই অসাধারণ মানের ক্রিকেট হয়েছে। এখন দেখার, ইংল্যান্ড কিভাবে প্রত্যুত্তর দেয়। দ্বিতীয় টেস্টের পর চাপ অনেকটাই তাদের ঘাড়ে — ভারতের জন্য এটা দারুণ একটা ইঙ্গিত।