নীতীশ রানা দাবি করেছেন, ছোটবেলা থেকেই বোলিং করছেন তিনি। এবং তিনি একজন প্রকৃত অলরাউন্ডার। তিনি শুধু পার্টটাইম স্পিনার নন। তিনি ঘরোয়া এবং ক্লাব ম্যাচেও বোলিং করেছেন। এর বাইরেও তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, কেন দিল্লি ছেড়ে তিনি উত্তরপ্রদেশ গিয়েছেন।
রিঙ্কুদের সঙ্গে নীতিশ রানা।
নীতীশ রানার ক্যারিয়ার গত কয়েক বছর ধরেই বেশ ঘটনাবহুল। সাদা বলের ফর্ম্যাটে তাঁর অভিষেক হয়েছে, শ্রেয়স আইয়ারের অনুপস্থিতিতে কেকেআর-কে নেতৃত্ব দিয়েছেন, ঘরোয়া সার্কিটে দিল্লি থেকে উত্তপ্রদেশে পাড়ি দিয়েছেন এবং ইউপি টি-টোয়েন্টি লিগের চলতি উদ্বোধনী মরশুমে অবশেষে ইউপি-র একটি দলকে নেতৃত্বও দিচ্ছেন।
নীতীশ রানা কেকেআরকে তাদের তৃতীয় আইপিএল শিরোপা দিতে না পারলেও, তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। দলের অধিনায়কত্ব করেছিলেন এবং নেতৃত্বের সূক্ষ্মতা শিখেছিলেন তিনি। গত দেড় বছরে নানা ঘটনা বহুল ক্রিকেট ক্যারিয়ার নিয়েই সম্প্রতি নিউজ ১৮ ক্রিকেট নেক্সটকে একটি খোলামেলা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তারই কিছু অংশ তুলে ধরা হল।
ইউপি টি-টোয়েন্টি লিগকে রাজ্য থেকে নতুন এবং তরুণ প্রতিভা খুঁজে বের করার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আপনি কী ভাবে দেখেন?
নীতীশ: এটি নতুন প্রতিভাদের জন্য একটি খুব ভালো এবং বড় প্ল্যাটফর্ম। আমি নিশ্চিত, এমন অনেক খেলোয়াড় আছে, যারা খেলা খেলে কিন্তু তাদের মধ্যে খুব কমই ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সুযোগ পায়। সুতরাং, এটি তাদের কাছে প্রতিভা এবং দক্ষতা প্রদর্শন করার জায়গা। পাশাপাশি তাদের খেলাকে আরও উন্নত করার একটি সুযোগ থাকছে।
আপনি দীর্ঘ দিন ধরে দিল্লি দলের একজন সদস্য। আপনি কি মনে করেন দিল্লিতেও এমন একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করা উচিত?
নীতীশ: দিল্লিতেও অনেক প্রতিভা আছে। কিন্তু আমি সত্যিই জানি না, কেন ওদের এখনও এই ধরনের টুর্নামেন্ট নেই। কিন্তু আমি নিশ্চিত যখনই এটা ঘটবে, এটা দিল্লির খেলোয়াড়দের জন্য খুবই সহায়ক হবে।
আপনি ঘরোয়া সার্কিটে দিল্লি থেকে ইউপিতে একটি চলে এসেছেন। এই সিদ্ধান্তটা কতটা কঠিন ছিল?
নীতীশ: এই সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সত্যিই কঠিন ছিল না আমার জন্য। আমি কেবল অনুভব করেছি যে, আমি আমার ক্যারিয়ারের সেই পর্যায়ে ছিলাম, যেখানে আমার একটি আলাদা ড্রেসিংরুম এবং একটি ভিন্ন পরিবেশ প্রয়োজন ছিল। আমি শুধু অনুভব করেছি যে, আমার সুইচ করা উচিত এবং আমার কাছে সেই সুযোগটি ছিল। আমরা যেমন বলি, পরিবর্তন অনেক সময় ভালো হয় এবং আমি মনে করি এটা আমার ক্যারিয়ারের জন্য ভালো হবে।
কেন আপনি বিশেষ ভাবে ইউপি নির্বাচন করেছেন?
নীতীশ: আমি ইউপির বিরুদ্ধে জুনিয়র লেভেল থেকে সিনিয়র লেভেল পর্যন্ত অনেক ক্রিকেট খেলেছি এবং আমি ইউপি রাজ্যে অনেক প্রতিভা দেখেছি। আমি শুধু এমন একটি ড্রেসিং রুমের অংশ হতে চেয়েছিলাম, যেখানে প্রচুর প্রতিভা আছে। আমার চিন্তার প্রক্রিয়াটি কেবল খেলা বা কেবল লাইন আপের অংশ হওয়া নয়। আমি ট্রফি জিততে চাই।
কেকেআরকে নেতৃত্ব দেওয়ার এবং কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের সঙ্গে কাজ করার সময় আপনার অভিজ্ঞতা কেমন?
নীতীশ: আমি গত তিন-চার বছর ধরে কলকাতার ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলছি এবং সেই লিডারশিপ গ্রুপের অংশ হয়েছি। সত্যি বলতে, আমি কখনও-ই ভাবিনি যে আমি এই সুযোগটি পাব (ফ্র্যাঞ্চাইজির নেতৃত্ব দেওয়ার)। যখন আমরা জানতে পারি যে, শ্রেয়স আইয়ার আহত হয়েছে, তখনই আমি আমার হাত তুলে বললাম যে আমি ভূমিকা নিতে প্রস্তুত।
এটি একটি বড় অভিজ্ঞতা ছিল। আমি খুব ভিন্ন এবং নতুন জিনিস শিখেছি। আমি একজন খেলোয়াড় এবং একজন ব্যক্তি হিসেবে বড় হয়েছি। অধিনায়কত্ব আপনাকে মাঠে এবং মাঠের বাইরে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ দেয়। যেটা আমার ক্যারিয়ারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা পর্ব ছিল।
কেকেআর ফ্র্যাঞ্চাইজিতে অনেক বড় নাম রয়েছে। তাদের নেতৃত্ব দেওয়ার সময় আপনি কি ধরনের আলোচনা করেছেন?
নীতীশ: আইপিএল অনেক বড় লিগ। সব খেলোয়াড়ই পেশাদার। একজন খেলোয়াড় হিসেবে, সব সময়ে যতটা সম্ভব শেখার চেষ্টা করে থাকি। আপনি যদি আন্দ্রে রাসেলের কথা বলেন, তিনি তাঁর ক্যারিয়ারে ৫০০+ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন এবং এই ফরম্যাটে খুবই অভিজ্ঞ। তাই তাঁকে নতুন করে বলার কিছু ছিল না আমার।
তবে আমাদের ফোকাস ছিল মাঠের সেরাটা দেওয়ার দিকে। প্রত্যেকেরই একটি দক্ষতা আছে। আমরা শুধু একটি ইউনিট হিসেবে খেলায় মনোনিবেশ করছিলাম। এই মরশুম সম্পর্কে কথা বলতে গেলে, এটি সত্যিই আমাদের জন্য খুব একটা ভালো ছিল না। তবে আমরা এটি থেকে অনেক কিছু শিখেছি।