ওয়ানডেতে ওপেনার হিসেবে শুভমন গিলের ব্যাটিং গড় ৬৩.৭৩, আর রোহিত শর্মার ৫৫.২১। তবে একসঙ্গে তারা যেভাবে পারফর্ম করছেন, তা ধীরে ধীরে সর্বকালের সেরাদের তালিকায় জায়গা করে নিচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা মাত্র ২৮ বার একসঙ্গে ইনিংস শুরু করেছেন, সেই কারণেই এটা পরিসংখ্যানের ভিত্তি খুব একটা বড় নয়। কিন্তু এই ২৮ ইনিংসে তারা মিলে ১৯৪৩ রান সংগ্রহ করেছেন, গড়ে তারা ৭১.৯৬ রান করেছেন। এই ২৮ ইনিংসের মধ্যে মাত্র ১০ বার তারা ভারতের স্কোরকে বিনা উইকেটে ৫০ রান টপকেছে। তাদের নির্ভরযোগ্যতার পাশাপাশি আক্রমণাত্মক ব্যাটিংও উল্লেখযোগ্য। যখন এই দুজন ক্রিজে থাকেন, তখন ভারতীয় ইনিংসের গড় রানরেট প্রতি ওভারে ৭-এর বেশি থাকে।
২৫ বা তার বেশি ইনিংসে একসঙ্গে ওপেন করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে গড় এবং স্ট্রাইক রেট বিবেচনা করলে গিল ও রোহিতের জুটি এখন পর্যন্ত সবার ওপরে রয়েছে। তাদের পরেই রয়েছেন ইংল্যান্ডের ২০১৯ বিশ্বকাপজয়ী জনি বেয়ারস্টো ও জেসন রয় জুটি। ভারতের ম্যাচের আগের দিন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলনে গিল ব্যাখ্যা করেছেন, কীভাবে তাদের ভিন্ন কৌশল একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন … টিকিট নিঃশেষ, টেনশন চরমে, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগেই দুবাই যেন রণক্ষেত্র
শুভমন গিল বলেন, ‘পাওয়ারপ্লেতে আমাদের ব্যাটিংয়ের ধরন একেবারেই আলাদা। রোহিত ভাই বেশি করে আকাশে বল তোলেন, বড় ছক্কা মারতে পছন্দ করেন। আর আমি বরং মাটিতে খেলতে পছন্দ করি, ফাঁক দিয়ে বল পাঠাতে চাই। তবে যখন দেখি বোলার চাপে আছে, তখন বৃত্তের ওপর দিয়ে মারতে চেষ্টা করি। এটাই আমাদের জুটির বিশেষত্ব। আমরা ভিন্ন ধরনের শট খেলে বাউন্ডারি পাই, তাই বোলারদের জন্য আমাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা করা কঠিন হয়ে যায়। কারণ আমরা শট খেলি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায়।’
আরও পড়ুন … ভিডিয়ো: ওর কি এখনও ইংল্যান্ডের পাসপোর্ট আছে? জোশ ইংলিসের ব্রিটিশ কানেকশন নিয়ে স্টিভ স্মিথের মজার জবাব
এরপরে শুভমন গিল বলেন, ‘নন-স্ট্রাইকার প্রান্ত থেকে রোহিতের ব্যাটিং দেখা সত্যিই দারুণ। তার নিজস্ব স্টাইল আছে, আর সেটা আমাকে আমার ছন্দ খুঁজে পেতে সাহায্য করে।’ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এই পারফরম্যান্সের প্রমাণ দেখা গিয়েছে। তারা প্রথম উইকেট জুটিতে ৯.৫ ওভারে ৬৯ রান সংগ্রহ করেন। রোহিতের দ্রুতগতির শুরু গিলকে ধীরস্থির ইনিংস গড়ার সুযোগ দেয়, যেখানে তিনি ১২৯ বলে অপরাজিত ১০১ রান করেন।
এই বছর ওয়ানডেতে রোহিতের স্ট্রাইক রেট ১২০, যা তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের প্রতিফলন। অন্যদিকে, গিলের স্ট্রাইক রেট ৯৬.৪৬ হলেও তার ব্যাটিং গড় ১৩৬.৫০! ২০২৫ সালে ওপেনার হিসেবে তিনি এর আগে ১১২ ও ৬০ রানের ইনিংস খেলেছেন, তার সঙ্গে রয়েছে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে করা ৮৭ রান।
আরও পড়ুন … ভিডিয়ো: India vs Pakistan ম্যাচের আগে রোহিত-বিরাটদের ভয় দেখাচ্ছেন শাহিন-রউফ-নাসিম!
অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজে (২০২৪-২৫ বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি) গিল সংগ্রাম করেছিলেন, পাঁচ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩১ রান করতে পেরেছিলেন। তবে ওয়ানডে ফরম্যাটে ফিরেই তিনি ব্যাট হাতে দুর্দান্তভাবে ছন্দে ফিরে এসেছেন। শুভমন গিল বলেন, ‘আমি মনে করি না, আমার ব্যাটিংয়ে কোনও ত্রুটি ছিল যে কারণে অস্ট্রেলিয়ায় রান পাইনি। তবে, মানসিক দিক থেকেও বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কখনও কখনও আমরা শুধুই ব্যাটিং নিয়ে বেশি ভাবতে থাকি, আর এতে মনে হয় রান না পাওয়ার কারণ নিশ্চয়ই ব্যাটিংয়ের কোথাও সমস্যা। কিন্তু, সবসময় যে ব্যাটিংয়ের সমস্যা থাকে, তা নয়। হতে পারে, অন্য কোনও জায়গায় আমরা পিছিয়ে আছি। আমি বিশেষ কিছু নিয়ে কাজ করিনি, তবে জানতাম যে আমাকে সাদা বলের ক্রিকেট খেলতে হবে, এরপর টি-টোয়েন্টিও আছে, তাই সে অনুযায়ী অনুশীলন করেছি।’
(এই পরিসংখ্যান কেবল সেই ম্যাচগুলোর জন্য প্রযোজ্য, যেখানে আউট হওয়ার সময়কার ওভার সংখ্যা পাওয়া গেছে।)