চলতি বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বর্ডার-গাভাসকর টেস্ট সিরিজে ভারতের ১-৩ ব্যবধানে লজ্জাজনক পরাজয়ের পর কড়া পদক্ষেপ নিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (BCCI)। একটি ১০ দফা নির্দেশিকা জারি করে BCCI, যেখানে বিদেশ সফরে ক্রিকেটারদের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর উপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়।
এই সিদ্ধান্তে অনেক ক্রিকেটার ও ভক্তের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিরাট কোহলির মতো তারকা ব্যাটারও বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সম্প্রতি প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার সুরেশ রায়নাও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রসঙ্গ টেনে এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করলেন। ইউটিউবার রণবীর আল্লাবাদিয়ার চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুরেশ রায়না বলেন, খারাপ ফর্মে থাকার সময় পরিবার পাশে থাকলে একজন ক্রিকেটারের মানসিকভাবে অনেক সাহায্য হয়।
সুরেশ রায়না বলেন, ‘খারাপ সময়ে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। যখন খারাপ ফর্ম চলছে আর পিছনে অপেক্ষা করছে আরও অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী, তখন এমন চাপ তৈরি হয়। দল থেকে বাদ পড়ে যাওয়ার একটা ভয় থাকে। তখন খুব প্রয়োজন হয় কথা বলার মতো একজনকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনি যখন খুশি থাকেন, তখন কাউকে প্রয়োজন হয় না। কিন্তু যখন ভেঙে পড়েন, তখন ভয় হয় কাউকে কিছু বলতে, ভাবেন কথাটা হয়তো কোচ বা অধিনায়কের কাছে পৌঁছে যাবে। এই দ্বিধা থেকেই অনেক খেলোয়াড় মুখ খোলেন না।’
২০২০ সালের ১৫ অগস্ট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া রায়না, তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে বিরাট কোহলির উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সফরে পরিবারের থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। BCCI-র সিদ্ধান্ত যে পরিবারকে সফরে অনুমতি দেওয়া যাবে না—আমি এর বিরুদ্ধে। আপনি কাউকে দুই মাসের সফরে পাঠাচ্ছেন... পরিবারের উপস্থিতি থাকা উচিত। পরিবার খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে নয়, তারাও চায় আমরা রান করি, দেশ জিতুক।’
রায়না বলেন, ‘একবার ভাবুন, বিরাট কোহলি খেলছে, আর তাঁর মেয়ে হাততালি দিচ্ছে—এটা কত গর্বের মুহূর্ত! এতে ও আরও ভালো খেলবে, পুরো মঞ্চ মাতিয়ে দেবে।’ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ চলাকালীন (ফেব্রুয়ারিতে) বিরাট কোহলি, রবীন্দ্র জাদেজার মতো তারকারা তাঁদের পরিবারকে নিয়ে দুবাইয়ে ছিলেন ঠিকই, তবে তাঁরা টিম হোটেলে থাকেননি। তাঁদের থাকার খরচও নিজেরাই বহন করেন, BCCI নয়।