প্রথম দিনের মতোই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় দিনে ১৪টি উইকেট পড়ল। কিন্তু নিজেদের ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ের ব্যর্থতায় ফাইনালে কিছুটা হলেও অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে থাকার সুযোগ করে দিল দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের জন্য এটাই সান্ত্বনা যে তাঁরা সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে না পারলেও অজিরা নিজেদের হাতে পুরোপুরি ম্যাচের রাশ তুলে নিতে পারেননি। দ্বিতীয় দিনের শেষে ২১৮ রানে এগিয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া। তৃতীয় দিনে যদি অজিদের ২৩০ রানের মধ্যেই আটকে দিতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা, তাহলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল জয়ের সুবর্ণ সুযোগ পাবে। কারণ চিরাচরিতভাবে লর্ডসে ব্যাটিংয়ের সেরা সময় হল তৃতীয় এবং চতুর্থ দিন।
প্রোটিয়াদের ভালো শুরু, ল্যাবুশানের অসাধারণ ক্যাচ
যদিও দ্বিতীয় দিনের শুরুটা দেখে মনে হয়নি যে দক্ষিণ আফ্রিকাকে এত ভাবনাচিন্তা করতে হবে। কারণ বুধবারের কাঁপুনি পিছনে ফেলে প্রোটিয়াদের টানতে থাকেন তেম্বা বাভুমা এবং ডেভিড বেডিংহ্যাম। দু'জনকে রীতিমতো জমাট লাগছিল। কিন্তু খেলার গতির বিপরীতে মার্নাস ল্যাবুশানের দুর্দান্ত ক্যাচে ড্রেসিংরুমে ফিরে যেতে হয় প্রোটিয়া অধিনায়ককে। প্যাট কামিন্সের বলে তিনি যখন শটটা মেরেছিলেন, নির্ঘাত ভেবেছিলেন যে আরও চার রান যুক্ত হবে। কিন্তু কভার অবিশ্বাস্য ক্যাচ নেন ল্যাবুশান।
আরও পড়ুন: WTC ফাইনালে ২৮ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ইতিহাস কামিন্সের! SAগুঁড়িয়ে গড়লেন আরও ২ নজির
সেই ক্যাচের সুবাদে ৮৪ বলে ৩৬ রান করে আউট হয়ে যান বাভুমা। তখন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ছিল পাঁচ উইকেটে ৯৪ রান। তারপর কোনও বিপদ ছাড়াই নয় ওভারের মতো খেলে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে হাসিমুখে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম সেশনে যোগ করে ৭৮ রান। হারায় মাত্র একটি উইকেট।
১২ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা
কিন্তু সেই ছবিটা পুরোপুরি পালটে যায় দ্বিতীয় সেশনে। প্যাট কামিন্স ধস নামিয়ে দেন প্রোটিয়াদের ইনিংসে। তার ফলে পাঁচ উইকেটে ১২৬ রান থেকে ১৩৮ রানেই অল-আউট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ২৮ রানে ছয় উইকেট নেন অজি অধিনায়ক। প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন বেডিংহ্যাম। কিন্তু অধিকাংশ ব্যাটার ডোবানোয় প্রথম ইনিংসে ২১২ রান করেও ৭৪ রানের লিড পেয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
আরও পড়ুন: ভেঙে খানখান বুমরাহর রেকর্ড, WTC ফাইনালে জসপ্রীতকে টপকে ইতিহাস গড়লেন কামিন্স
অজিদের নাড়িয়ে দিয়েও সুযোগ হাতছাড়া প্রোটিয়াদের
সেই বড় লিড নিয়ে খেলতে নেমে অজিরা দুর্দান্ত শুরু করেন। কিন্তু একাদশ ওভারে খেলার মোড় ঘোরান কাগিসো রাবাদা। প্রথম ইনিংসের মতোই একই ওভারে উসমান খোয়াজা এবং ক্যামেরন গ্রিনকে আউট করে দেন। ল্যাবুশান, স্টিভ স্মিথ, বিউ ওয়েবস্টার, ট্র্যাভিস হেড এবং প্যাট কামিন্সদের বেশিক্ষণ টিকতে দেননি প্রোটিয়া বোলাররা। আর তার ফলে ৭৩ রানে সাত উইকেট হয়ে যায় অজিদের। লিড যোগ করে স্কোরটা দাঁড়ায় ১৪৭ রান।
সেখান থেকে প্রথম ইনিংসের পুনরাবৃত্তি করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ইনিংসে অজিদের শেষ পাঁচ উইকেটে ২০ রান তুলে নিয়েছিলেন অজিরা। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে অষ্টম উইকেটে ৬১ রান যোগ করেন অ্যালেক্স ক্যারি এবং মিচেল স্টার্ক। শেষপর্যন্ত রাবাদা জুটি ভাঙলেও ততক্ষণে অজিদের লিড পেরিয়ে যায় ২০০ রান। দিনের শেষে অজিদের লিড ২১৮ রান দাঁড়িয়েছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
১) অস্ট্রেলিয়া: ২১২ রান এবং ১৪৪/৮ (১৬ রানে অপরাজিত মিচেল স্টার্ক, এক রানে অপরাজিত নাথান লিয়ন)।
২) দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৩৮ রান।