দিল্লি পুলিশের চিঠিতে বাংলা ভাষাকে 'বাংলাদেশি' বলে চিহ্নিত করার ঘটনায় জ্বলছে রাজ্য রাজনীতি। বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলেছে বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যর মন্তব্য। তিনি বলেছেন ‘আসলে বাংলা নামে কোনও ভাষাই নেই!’ এই পরিস্থিতিতে, বাংলা ভাষার সম্মান রক্ষায় সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই নিল অভিনব পদক্ষেপ। বুধবার বিজেপির রাজ্য দফতরের ঠিকানায় ‘বর্ণ পরিচয়’ এবং ‘সহজ পাঠ’ পাঠাল তারা, সঙ্গে কুরিয়ারে চিঠিও।
আরও পড়ুন: আড়াই লক্ষ টাকার বাস ভাড়া করে আতঙ্কে হরিয়ানা থেকে কোচবিহারে ফিরলেন ১০৩ শ্রমিক
এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিজেপিকে বাংলা মনে করিয়ে দিতে চায় এসএফআই। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, যেভাবে একের পর এক বিজেপিশাসিত রাজ্যে শুধুমাত্র বাংলা বলার অপরাধে পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা হতে হচ্ছে, সেটা নিন্দনীয়। দিল্লি পুলিশের ভাষা-চিঠি এবং অমিত মালব্যর মন্তব্য বাংলাভাষীদের অপমান। তাই যারা বাংলা ভাষাকে ভুলে গিয়েছেন বা মানতে নারাজ, তাদের আবার নতুন করে বাংলা শিখিয়ে দিতে হবে। এসএফআই জানিয়েছে, শুধু বিজেপি দফতরেই নয়, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের কাছেও পাঠানো হবে এই দুই বই। উদ্দেশ্য একটাই, বাংলা ভাষা সম্পর্কে ‘অজ্ঞতা’ দূর করে সচেতনতা ছড়ানো।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি দিল্লির লোধি কলোনি থানার তরফে বঙ্গভবনে একটি চিঠি পাঠানো হয়, যেখানে বাংলাকে উল্লেখ করা হয় ‘বাংলাদেশি ভাষা’ হিসেবে। চিঠির সেই অংশ প্রকাশ করে তৃণমূল কংগ্রেস সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নিশানা করে। এই অভিযোগের জেরে রাজ্যের শাসকদল ভাষা রক্ষায় রাজ্যজুড়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। অমিত মালব্যর বক্তব্য, ভারতের বাংলা ও বাংলাদেশের বাংলা আলাদা। তাঁর মতে, বাংলাদেশের সরকারি ভাষা উচ্চারণ ও গঠনে আলাদা। সিলেটির মতো উপভাষা ভারতীয় বাঙালিদের কাছে বোধগম্য নয়। তাই ‘বাংলা’ নামে কোনও একক ভাষা নেই।এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্কের পারদ আরও চড়েছে। বাম, তৃণমূল, এমনকি বাংলাভাষী নাগরিকদের একাংশও মালব্যর মন্তব্যকে ভাষার প্রতি চরম অসম্মান হিসেবে দেখছেন।