গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, হাতাহাতি আর অন্দরকলহে জেরবার বঙ্গ বিজেপি। আর এই পরিস্থিতি দেখে ক্ষুব্ধ দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য তথা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। জানা যাচ্ছে, রাজ্যের একাধিক সাংগঠনিক বৈঠকে অংশ নিয়েও ক্ষোভ চাপা রাখতে পারেননি তিনি। দলের কর্মীদের মধ্যে প্রকাশ্য ঝগড়া, গণ্ডগোল দেখে ক্রমশ হতাশ হয়েছেন ‘মহাগুরু’। এমনকি বৈঠকের মাঝপথেই তিনি একাধিকবার সভাস্থল ছেড়ে চলে গিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। ফলে জেলায় জেলায় বিজেপির কর্মসূচি এখন এড়িয়ে চলছেন মিঠুন।
আরও পড়ুন: ৩০ বছর পর আবার একসঙ্গে মিঠুন-রজনীকান্ত, কোন ছবিতে অভিনয় করবেন তাঁরা?
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। সেই সময় তাঁকে দলের ‘তারকা মুখ’ করে প্রচারে নামানো হয়েছিল। ভোটের পরেও বেশ কিছুদিন তাঁকে সংগঠন ঘিরে সক্রিয় হতে দেখা যায়। সম্প্রতি আবার ঘোষণা করেছিলেন, বুথস্তরে গিয়ে নতুন করে বিজেপিকে চাঙ্গা করবেন। সেই লক্ষ্যে কলকাতা, বর্ধমান, পুরুলিয়া-সহ একাধিক জেলায় বৈঠকও করেন তিনি। কিন্তু প্রতিটি বৈঠকেই উঠে এসেছে পারস্পরিক বিদ্বেষ, অভিযোগ-প্রতিবাদের ঘটনা। দক্ষিণ কলকাতায় তাঁর উপস্থিতিতে সভায় দলীয় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। আবার বর্ধমানের সভায়ও দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা। কোথাও কর্মীরা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে, কোথাও আবার শুনতে হয়েছে নির্বাচনী খরচ মেটানো নিয়ে অন্দরের অসন্তোষ। এসব দেখে প্রকাশ্যেই বিরক্ত হয়েছেন মিঠুন।
সূত্রের খবর, একাধিক বৈঠকে তিনি নিজের বক্তব্য শেষ করার আগেই পাশের ঘরে চলে যান। কারণ, উপস্থিত নেতা-কর্মীরা তাঁর কথায় কান দিচ্ছেন না। বরং সভা পরিণত হচ্ছে অন্তর্কলহের মঞ্চে। সেই হতাশা থেকেই টানা জেলা বৈঠকে যোগ দেওয়া থেকে বিরত হচ্ছেন ‘মহাগুরু’। বিজেপির রাজ্য কমিটির একাংশের মতে, যে জোরদার ভরসা নিয়ে মিঠুনকে সামনে আনা হয়েছিল কয়েক মাসের মধ্যে তা হতাশায় পরিণত হচ্ছে। তিনি নিঃসন্দেহে জনপ্রিয় অভিনেতা, তাঁর নামেই সভায় ভিড় জমছে। কিন্তু রাজনৈতিক নেতার জায়গায় তাঁকে মানতে চাইছেন না দলের বহু কর্মী। ফলে সংগঠনের বাস্তব সমস্যার মুখে কার্যত অচলাবস্থায় পড়েছেন তিনি।লোকসভা ভোটের আগেও মিঠুন জানিয়েছিলেন, সংগঠনের ভিতরে শৃঙ্খলা ও ঐক্যের অভাব রয়েছে। এবার জেলায় জেলায় সেই চিত্র আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠায় তিনি বিরক্ত।