দিঘার জগন্নাথধাম। দিঘার জগন্নাথমন্দিরের সামনে জ্বলজ্বল করছিল লেখা জগন্নাথ ধাম। ইংরেজিতে লেখা ছিল এই কথা। মন্দিরের ঠিক পাশে জাতীয় সড়কের উপর নীল রঙে ইংরেজিতে লেখা ছিল এই কথা। কিন্তু সেই লেখা আচমকা ভ্যানিস। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্স হ্যান্ডেলে এই ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানেও দেখা যাচ্ছে রাতারাতি ভ্যানিস হয়ে গিয়েছে সেই লেখা। তবে সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।
কেন? তবে কি ধাম নাকি মন্দির এই নিয়ে বিতর্ক যাতে না বাড়ে তার জন্য় এই পদক্ষেপ?
শুভেন্দু অধিকারী এক্স হ্য়ান্ডেলে লিখেছেন, গতকাল রামকৃষ্ণ দশমহাপাত্র, প্রবীণ সেবায়েত পুরীর জগন্নাথধামের তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে শ্রী জগন্নাথ টেম্পল প্রশাসন। তাঁর বক্তব্য অনুসারে ও পবিত্র নিমকাঠের অনুমতিহীন ব্যবহার নিয়ে এসজেটিএ তাঁর পরস্পরবিরোধী মন্তব্যের ব্য়াখা চেয়েছেন। দারু গৃহ ও দিঘাতে ব্রহ্ম সংযুক্ত করা হয়েছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

‘শ্রী জগন্নাথ টেম্পল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এনিয়ে শোকজ করেছে। গত ৩০ এপ্রিল একটি বাংলা মিডিয়াতে তিনি যে দাবি করেছিলেন তা নিয়ে সাত দিনের মধ্য়ে জবাব চেয়েছে এসজেটিএ। পুরীর ২০১৫ সালের নবকলেবরের বেঁচে যাওয়া কাঠ ব্যবহার করে এই মূর্তি তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এনিয়ে যদি সদুত্তর দিতে না পারেন তাহলে বড় শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে ওই দয়িতাপতিকে।’
'সেই সঙ্গেই অনৈতিকভাবে পুরী ও দিঘার মধ্য়ে মিল দেখাতে গিয়ে, নকল করতে গিয়ে রাজ্য প্রশাসনও চাপে পড়ছে। জগন্নাথধাম লেখা অংশটিও সরানো হয়েছে। শুভেন্দু লিখেছেন, ভগবান জগন্নাথ সকলকে আশীর্বাদ দিন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে লড়াই তৈরি করেছেন তার কোনও দরকার ছিল না।'দাবি শুভেন্দুর
তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, ওখানে অস্থায়ীভাবে কাঠামো তৈরি করা হয়েছিল।
পুলিশের তরফে কী বলা হচ্ছে?
তবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, বিভিন্ন মহল থেকে গুজব ছড়ানো হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার শ্রী দিঘা জগন্নাথ ধামের বিভিন্ন সাইনেজ সরিয়ে নিয়েছে। নিজে দেখুন। এটা পুরো মিথ্যে। আমরা ভক্তদের অনুরোধ করছি এই মিথ্যে খবর দিয়ে বিপথে চালিত হবেন না। কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে যারা গুজব ছড়াবেন ও ভুয়ো খবর ছড়াবে।
তবে সেই নিমকাঠ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'জগন্নাথধামটা খুব গায়ে লেগেছে না! বলা হচ্ছে আমি নাকি নিমগাছও চুরি করেছি। আরে আমার বাড়িতেই তো চারটে নিমগাছ আছে। কটা দরকার জিজ্ঞাসা করুন। আমাদের চুরি করতে হয় না। চুরি বিদ্যা ভয়ঙ্করী যদি সে পড়ে ধরা। যারা চোর…চোরের মায়ের বড় গলা। তুমি যদি হিন্দু ধর্মের সমর্থক হও, মমতা ব্যানার্জি নিমকাঠ চুরি করে জগন্নাথধাম করেছে মমতা ব্যানার্জির এই অবস্থা হয়নি। আমাদের মূর্তি তো মার্বেলের ছিল। আমাদের বাড়িতেই তো আছে। আপনাদের অনেকের বাড়িতেই আছে। ওটা নিয়ে এসেছেন দ্বৈতপতি। যে জায়গা থেকে বলা হচ্ছে সেই জায়গা থেকে নয়। তাকে ডাকা হয়েছিল শুনেছি। তিনি স্ট্রেট বলে দিয়েছেন, তোমরা যেটা বলেছ সেটা নয়। আমি আমার অন্য জায়গা থেকে করেছি। তাকে আবার কোয়েশ্চেন করা হয়েছিল তুমি কেন পুজো করতে গিয়েছিলে? নোটিফিকেশন দিয়েছে কেউ যাবে না জগন্নাথধামে। কোনও পুরোহিত। আবার তাকে বলা হচ্ছে, কী একটা যেন বলা হচ্ছে। তিনটে পয়েন্ট বলেছে। কোনও একটা মিডিয়াতে। এত গায়ে লাগছে কেন? আমরা তো সবাই পুরীতে যাই। আমরা তো এই প্রশ্ন করি না। আমি তো পুরীতে গেলে আরএসএস বিক্ষোভ দেখায়, বিজেপি বিক্ষোভ দেখায়। ভুলে গেছেন। লজ্জা করে না।’