কালীগঞ্জে নিহত কিশোরীর বাড়ি গিয়ে টাকা চেষ্টা করে দলের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তাঁকে শোকজ করেছিল তৃণমূল। শেষমেশ দলের শোকজের জবাব দিলেন বিধায়ক। রবিবার রাজ্য নেতৃত্বের কাছে চিঠি পৌঁছে দেন তিনি। যদিও কী লিখেছেন, সে ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ এই প্রাক্তন মন্ত্রী ও পুলিশকর্তা। তবে দলীয় সূত্রে খবর, ওই চিঠিতে নেই কোনও অনুশোচনা, বরং তাঁর পদক্ষেপের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিধায়ক।
আরও পড়ুন: কালীগঞ্জে বোমায় নাবালিকার মৃত্যুতে ধৃত মূল অভিযুক্তের ছেলে, তুঙ্গে তরজা
ঘটনার শুরু গত সপ্তাহের সোমবার। কালীগঞ্জে ভোটগণনা চলাকালীনই স্পষ্ট হয়ে যায় তৃণমূল বিপুল ভোটে জিততে চলেছে। ফল ঘোষণার আগেই শুরু হয়ে যায় বিজয় মিছিল। অভিযোগ, সেখান থেকেই ছোড়া হয় সকেট বোমা। নিশানা করা হয় সিপিএম সমর্থকদের বাড়ি। তাতে গুরুতর আহত হয় ১০ বছরের তমন্না খাতুন। পরে মৃত্যু হয় তার। এই ঘটনার দু’দিন পর বুধবার হঠাৎই তমন্নার বাড়িতে হাজির হন ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তামান্নার পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দিতে চাইলেও, তা ফিরিয়ে দেন তমন্নার মা সাবিনা বিবি। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, টাকা নয়, চাই ন্যায়বিচার। একইসঙ্গে, কালীগঞ্জের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী তাঁদের দেখতে না যাওয়ায় হতাশাও প্রকাশ করেন তিনি। তবে হুমায়ুনের সেখানে গিয়ে টাকা তুলে দেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। কারণ, দলের অনুমতি না নিয়েই কালীগঞ্জে গিয়েছিলেন হুমায়ুন। বৃহস্পতিবারই পাঠানো হয় শোকজ নোটিস। তিন দিনের মধ্যে কারণ জানাতে বলা হয়েছিল তাঁকে।
রবিবার জবাব পৌঁছালেও তাতে ভুল স্বীকার করেননি বিধায়ক। তিনি জানান, কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তিনি ওই পরিবারকে সাহায্য করতে যাননি। তাঁর ব্যক্তিগত অরাজনৈতিক সংস্থার তরফেই তিনি গিয়েছিলেন। তমন্নার পরিবার অর্থ নেয়নি, সেটিও উল্লেখ করেছেন চিঠিতে। তবে এটাই প্রথম নয়, হুমায়ুন কবীর আগেও দলের ভিতরে বিতর্কের কারণ হয়েছেন। বিধানসভায় জগন্নাথ মন্দির নির্মাণ নিয়ে সরকারের ব্যয় প্রশ্ন করেছিলেন তিনি, যার ফলে শোরগোল পড়ে যায়। এরপরই তৃণমূল বিধায়কদের জন্য বিধানসভায় প্রশ্ন করার আগে দলীয় অনুমোদনের নিয়ম চালু হয়। এখন প্রশ্ন, এই চিঠিতে তৃণমূল কতটা সন্তুষ্ট হয়? দলীয় শৃঙ্খলার প্রশ্নে তারা হুমায়ুনের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ নেয় কি না, সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।