নিখোঁজ থাকার প্রায় ২ মাস পর রাস্তার উপর থাকা ১০ ফুট গভীর গর্ত থেকে উদ্ধার হয় ২৪ বছরের তরুণীর দেহ। হরিয়ানার ফরিদাবাদের এই ঘটনায় এবার প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের দাবি, পুত্রবধূকে খুনের আগে ধর্ষণ করেছিলেন বৃদ্ধ শ্বশুর।একই সঙ্গে তিনি জেরায় ধর্ষণ এবং খুনের কথা স্বীকার করেছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২৩ সালের জুলাইয়ে ফিরোজাবাদের শিকোহাবাদের বাসিন্দা ওই তরুণীর সঙ্গে ফরিদাবাদের তরুণের বিয়ে হয়। অভিযোগ, বিয়ের ২ বছরের মধ্যেই পণের জন্য তরুণীর উপরে অত্যাচার শুরু করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ।কিন্তু এপ্রিল মাস থেকে ওই তরুণী হঠাৎ উধাও হয়ে যান। খোঁজ মেলেনি। এরপর তরুণীর স্বামী এবং তাঁর পরিবার দাবি করেন, তিনি পালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু ২১ জুন তরুণীর শ্বশুরবাড়ির সামনের রাস্তা থেকে উদ্ধার হয় দেহ। প্রায় ১০ ফুট গভীর গর্ত খনন করে দেহ পুঁতে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ।রাস্তার মাঝখানে খুঁড়ে তার ওপরে একটি নতুন কংক্রিট স্ল্যাব বসানো ছিল।
এই ঘটনার পর পুলিশি ওই তরুণীর শ্বশুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আগেই তিনি পুলিশের জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছেন।এবার তিনি জানিয়েছে, খুনের আগে পুত্রবধূকে ধর্ষণ করেছিলেন।আর সে নিজের পুত্র এবং স্ত্রীর কাছে গোপন করে গিয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৪ এপ্রিল পুত্রবধূকে খুনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে ফেলেছিলেন তাঁরা।পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, তরুণীর শাশুড়িকে উত্তরপ্রদেশের ইটাওয়াতে একটি বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানের জন্য পাঠিয়ে দেন বৃদ্ধ।এরপর ২১ এপ্রিল খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তরুণী এবং তাঁর ননদকে খাইয়েছিলেন তাঁর স্বামী।তারপর দুজনেই আলাদা আলাদা ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। শ্বশুর পুলিশি জেরায় আরও জানিয়েছেন, গভীর রাতে তিনি পুত্রবধূকে খুনের জন্য তাঁর ঘরে প্রবেশ করেন। কিন্তু খুনের আগে অচেতন পুত্রবধূকে তিনি ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। তারপরে তাঁকে খুন করেন। খুনের পর নিজের ছেলেকে সেই ঘরে ডেকে পাঠান তিনি। এরপর বাবা-ছেলে মিলে তরুণীর দেহ সামনের গলিতে খনন করা গর্তে ফেলে দেন বলে অভিযোগ। তারপরে তার উপর মাটি ফেলে ঢালাই করে দেন।
আরও পড়ুন-মীরাটকাণ্ডের ভয়ঙ্কর পুনরাবৃত্তি লুধিয়ানায়! সেই নীল ড্রামে উদ্ধার যুবকের পচাগলা দেহ
অন্যদিকে প্রতিবেশীরা ভেবেছিলেন, নিকাশি ব্যবস্থার জন্যই গলির রাস্তা খনন করা হয়েছে। সেই গর্ত ইট এবং মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়। কয়েকদিন পর তার উপর একটি কংক্রিটের স্ল্যাব বসানো হয়।পুলিশ জানিয়েছে, ড্রেন মেরামতের অজুহাতে গর্তটি তৈরি করা হয়েছিল। প্রতিবেশীদের সাক্ষী হিসেবে রেখে গর্তটি খনন করা হয়। এরপর ২৫ জুন বৃদ্ধ থানায় অভিযোগ করে জানিয়েছিলেন, তাঁর পুত্রবধূ নিখোঁজ। এরপর প্রায় ২ মাস পর রাস্তার উপর থাকা ১০ ফুট গভীর গর্ত থেকে উদ্ধার হয় তরুণীর দেহ।তারপর ওই তরুণীর শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামী এবং ননদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ।
আরও পড়ুন-মীরাটকাণ্ডের ভয়ঙ্কর পুনরাবৃত্তি লুধিয়ানায়! সেই নীল ড্রামে উদ্ধার যুবকের পচাগলা দেহ
ওই তরুণীর দিদি জানিয়েছেন, গত ২৩ এপ্রিল তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোক জানিয়েছিল, বোন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। অথচ তার কয়েকদিন আগে থেকেই ৯ এপ্রিল, বোনকে ফোন করে যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি। তখন থেকেই দানা বাঁধে সন্দেহ। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে তাঁর বোনের উপর মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার চালাত শ্বশুরবাড়ির লোকজন।