‘যা করেছে তার জন্য পস্তাবে।' এমনই হুঁশিয়ারি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেছেন ইরানের শীর্ষস্থানীয় শিয়া ধর্মীয় নেতার আয়াতুল্লাহ নাসের মাকারেম শিরাজি। দু’জনকে ঈশ্বরের শত্রু বলে ঘোষণা করেছেন তিনি।সেই সঙ্গে শীঘ্রই প্রতিশোধ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। ফলে ইরান-ইজরায়েলের সংঘাত থামলেও বাগযুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে পশ্চিম এশিয়ায়।
আরও পড়ুন-ভারত-US বাণিজ্য চুক্তি চর্চার মাঝেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঢাকার কোন চুক্তির সম্ভাবনা?
রবিবার দুই রাষ্ট্রনেতার বিরুদ্ধে এই ফতোয়া জারি করেছেন মাকারেম শিরাজি। সেখানে লেখা রয়েছে, 'কোনও ব্যক্তি বা সরকার যদি মারজা (শিয়া ধর্মগুরু)-র বিরুদ্ধে হুঙ্কার দেয় তাহলে সেটা ঈশ্বরের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা। কোনও মুসলিম ব্যক্তি বা ইসলামিক রাষ্ট্র যদি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণাকারীদের পাশে দাঁড়ায় তাহলে সেটাও অপরাধ। তাই এই দুই রাষ্ট্রপ্রধানকে শিক্ষা দিতে গোটা মুসলিম সমাজের একজোট হওয়া উচিত। সেই সংগ্রামে যদি কোনও মুসলিমের ক্ষতি হয় তাহলে সেই ব্যক্তিকে ঈশ্বরের যোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।' ফতোয়া এক ধরনের ধর্মীয় আদেশ, যা ইসলামী আইনের ব্যাখ্যার মাধ্যমে একজন শীর্ষ আলেম জারি করেন। ইরানে পূর্বেও এমন বিতর্কিত ফতোয়া জারি হয়েছে, যার মধ্যে সলমন রুশদির বিরুদ্ধে ১৯৮৯ সালের মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
এই ফতোয়া জারির নেপথ্যে নিঃসন্দেহে ইরান-ইজরায়েল সাম্প্রতিক সংঘর্ষ বড় ভূমিকা নিয়েছে। ১৩ জুন ইরানে হামলা চালায় ইজরায়েল। সেই সময় থেকেই প্রত্যাঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।ইজরায়েলের হামলায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক ঘাঁটিতে মৃত্যু হয় ইরান সেনার চিফ অফ স্টাফ মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি, ইরানের এমার্জেন্সি কমান্ডের কমান্ডার এবং দুই শীর্ষ সেনা আধিকারিকের। এরপরেই ইরান পাল্টা মিসাইল হামলা চালায় তেল আভিভ-সহ গোটা ইজরায়েলে।।পরিস্থিতি চূড়ান্ত রূপ নেয় যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইজরায়েলের সঙ্গে মিলে ইরানের নিউক্লিয়ার ঘাঁটিতে হামলা চালায়। পাল্টা জবাবে ইরান কাতারে মার্কিন সেনাঘাঁটিতে আঘাত হানে।
আরও পড়ুন-ভারত-US বাণিজ্য চুক্তি চর্চার মাঝেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঢাকার কোন চুক্তির সম্ভাবনা?
১২ দিন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু দুপক্ষে বাগযুদ্ধ চলছিলই। এহেন পরিস্থিতিতে দুই রাষ্ট্রপ্রধানকে নিশানা করে যেভাবে ফতোয়া জারি করল ইরানের ধর্মীয় নেতৃত্ব, তার জেরে আবারও অশান্তি বাড়তে পারে বলে অনুমান ওয়াকিবহাল মহলের।