আমদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়া ক্র্যাশের তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখছে বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB)। এমনকী নাশকতার সম্ভাবনার দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানালেন অসামরিক বিমান পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী মুরলিধর মোহন। এদিকে মুরলিধর আরও জানান, এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই ১৭১-এর যে ব্ল্যাক বক্সটি উদ্ধার করা হয়েছে তা এএআইবি-র হেফাজতে রয়েছে। মূল্যায়নের জন্য সেটিকে দেশের বাইরে পাঠানো হবে না। এর আগে শোনা যাচ্ছিল, ব্ল্যাক বক্সটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তার তথ্য ডাউনলোড করতে সেটিকে আমেরিকায় পাঠানো হতে পারে। তবে পরে সরকার জানায়, ব্ল্যাকবক্স থেকে সফল ভাবে সকল তথ্য ডাউনলোড করা সম্ভব হয়েছে। (আরও পড়ুন: মধ্য পাকিস্তানে ৫.৩ মাত্রার ভূমিকম্প, ভোররাতে ফের কেঁপে উঠল পড়শি দেশ)
আরও পড়ুন: মুনিরের বাহিনীর মুখ পোড়াল তালিবান, 'মিথ্যেবাদী' প্রমাণিত হল পাক সেনা
গত ২৬ জুন বিকেলে সরকার জানিয়ে দেয়, এয়ার ইন্ডিয়ার ব্ল্যাক বক্স থেকে পাওয়া তথ্য এখন বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে। সেই তথ্য বিশ্লেষণ করেই জানা যাবে, কেন তেমন ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানে ব্ল্যাক বক্সের মধ্যে রয়েছে - একটি ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার, একটি ককপিট ভয়েস রেকর্ডার। প্রায় ১০০০ সেলসিয়াস তাপে এই দু'টি রেকর্ডার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এতে ব্যবহারযোগ্য ডেটা পুনরুদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। এই আবহে রিপোর্টে দাবি করা হয়, ফরেনসিক তথ্য উদ্ধারের জন্য এই এফডিআর এবং সিভিআর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হতে পারে। (আরও পড়ুন: 'রথযাত্রার দিন একাধিক জনের মৃত্যু হয়েছিল, তবে সরকার তা ধামাচাপা দেয়')
এর আগে গুজরাটের আমদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে তদন্তকারীরা মনে করছিলেন যে বোয়িং ড্রিমলাইনারটি বিধ্বস্ত হওয়ার সময় এর জরুরি জেনারেটর চালু ছিল। তদন্তের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের উদ্ধৃত করে সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এমনটা জানিয়েছিল তাদের রিপোর্টে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, তদন্তের প্রাথমিক অনুসন্ধানে বলা হয়েছে, আমদাবাদে দুর্ঘটনার সময় ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের জরুরি ব্যবস্থা সক্রিয় ছিল। এটি ব়্যাম এয়ার টারবাইন নামে পরিচিত। ড্রিমলাইনারের ম্যানুয়াল উদ্ধৃত করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, উভয় ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেলে বা তিনটি হাইড্রোলিক সিস্টেমের চাপ কম থাকলে বিমানের জরুরি ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক অ্যারোস্পেস নিরাপত্তা পরামর্শক অ্যান্থনি ব্রিকহাউস ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেছিলেন, পাইলটরা প্রয়োজনে ম্যানুয়ালি জরুরি ব্যবস্থা চালু করতে পারেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গিয়েছে, তথ্য আদান-প্রদান বন্ধ হওয়ার আগে বোয়িং ড্রিমলাইনার বিমানটি আকাশে ৬২৫ ফুট উচ্চতায় উঠেছিল। ২০১১ সালে বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার প্রথম বাজারে আসার পর এই বিমানের এটাই প্রথম প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। এই বিমানটি বিমানবন্দর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বিজে মেডিক্যাল কলেজের একটি হোস্টেলে গিয়ে ভেঙে পড়ে। বিমানটিতে ১২ জন কেবিন ক্রুসহ মোট ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন। ২৪২ জন আরোহীর মধ্যে বিশ্বাস কুমার রমেশ নামে একজন যাত্রী বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যান। বাকি সবাই মারা যান। বিমানটি মেডিক্যাল ছাত্রের হোস্টেলে বিধ্বস্ত হলে মাটিতে থাকা আরও অনেকে নিহত হন।