মেয়ের বিয়েতে যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয়েছিল ৭০ লক্ষ টাকার ভলভো গাড়ি, প্রায় এক কেজি সোনা। তারপরও চাহিদা মেটেনি পাত্র পক্ষের। শ্বশুরবাড়িতে পণের দাবিতে লাগাতার মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের জেরে বিয়ের ২ মাসের মধ্যেই আত্মঘাতী হয়েছেন নববধূ। আর এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে তামিলনাড়ুর তিরুপ্পুর এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ২৭ বছর বয়সি রিধন্যার সঙ্গে বিয়ে হয় কভিন কুমারের(২৮)। রিধন্যা তিরুপ্পুরের বিখ্যাত গার্মেন্ট ব্যবসায়ী আন্নাদুরাইয়ের কন্যা।ব্যবসায়ী পরিবারের কন্যা রিধন্যার বিয়েতে বরপক্ষকে যৌতুক দিতে কোনও খামতি রাখা হয়নি পরিবারের তরফে।বিয়েতে পণের অঙ্ক ছিল চোখ কপালে ওঠার মতো। বহু মূল্যবান সামগ্রীর পাশাপাশি কভিনকে যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয় ৭০ লক্ষ টাকার ভলভো গাড়ি এবং ৮০০ গ্রাম সোনা। কিন্তু তাতেও পাত্র পক্ষের মন ভরেনি।অভিযোগ, বিয়ের মাত্র ১০ দিনের মাথায় আরও পণের দাবিতে রিধন্যার উপর নির্যাতন শুরু করে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। দিনে দিনে তা আরও খারাপ দিকে যায়।
আরও পড়ুন-খুনের আগে পুত্রবধূকে ধর্ষণ বৃদ্ধের! ফরিদাবাদকাণ্ডে নয়া মোড়
এই পরিস্থিতিতে গত রবিবার মন্দিপালয়মে এক মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার নামে গাড়ি নিয়ে বেরোন রিধন্যা। এরপর মন্দিপালায়মের পথে গাড়ি থামিয়ে সেখানেই কীটনাশক ট্যাবলেট খান তিনি। অন্যদিকে, দীর্ঘক্ষণ ধরে সন্দেহজনকভাবে রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রাই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে গাড়ি থেকে উদ্ধার করে রিধন্যার নিথর দেহ।মুখে ফেনা দেখে আত্মহত্যার বিষয়টি অনুমান করে পুলিশ। সূত্রের খবর, মৃত্যুর আগে ওই তরুণী তাঁর বাবাকে ৭টি অডিও মেসেজ পাঠান। সেখানে পণের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির লোক ও স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কথা বলেছেন। এমনকী তাঁর এই পদক্ষেপের জন্য ক্ষমাও চান বাবার কাছে।ওই তরুণী বলেন, 'এই বিয়ে একটা চক্রান্ত। কাবিন ও তাঁর পরিবার পরিকল্পনা করেই আমাকে বিয়ে করেছিল। প্রতিদিন সহ্য করতে হচ্ছে মানসিক নির্যাতন। কাউকে বলতেও পারি না। যারা শুনছেন, তাঁরা বলছেন বিবাহিত জীবনে এসব চলেই, অথচ কেউ বোঝেন না আমার যন্ত্রণা।'
আরও পড়ুন-খুনের আগে পুত্রবধূকে ধর্ষণ বৃদ্ধের! ফরিদাবাদকাণ্ডে নয়া মোড়
এদিকে, রিধন্যার দেহ তিরুপ্পুর জেলা সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই হাসপাতালের বাইরে জড়ো হয়ে তরুণীর আত্মীয়স্বজনরা অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান। ইতিমধ্যেই রিধন্যার স্বামী কাবিন কুমার, শ্বশুর ঈশ্বরমূর্তি ও শাশুড়ি চিত্রাদেবীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ‘ডাওরি প্রোহিবিশন অ্যাক্ট’-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।