ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কৃতিত্ব কার? তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে দড়ি টানাটানি অব্যাহত। তারইমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেল নির্মাণকর্মীদের একটি সেলফি। যে ছবি দেখে নেটিজেনরা বললেন, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর আসল কৃতিত্ব তো তাঁদেরই। তাঁরাই বাস্তবের ‘হিরো’।
গত সোমবার আরও পাঁচজন সাংবাদিকের মতোই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডরের শিয়ালদা স্টেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ সংবাদের ফোটোগ্রাফার কৌশিক দত্ত। অসংখ্য ছবির মধ্যে ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন। মেট্রোর রেককে সাক্ষী রেখে তিন নির্মাণকর্মীর সেলফি তোলার মুহূর্তকে নিজের ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন কৌশিক। সেটাই নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের দেওয়ালে পোস্ট করে ক্যাপশন দেন, ‘যাঁরা এটা তৈরি করেছেন। শিয়ালদা মেট্রো স্টেশনের উদ্বোধন...।’
রাজনৈতিক দড়ি টানাটানির মধ্যে সেই ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। গত মঙ্গলবার রাত ১০ টা নাগাদ ছবি পোস্ট করার পর থেকে 'শেয়ার'-র সংখ্যাটা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। ইতিমধ্যে সেই সংখ্যাটা ৩,২০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। সেইসঙ্গে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ থেকেও কৌশিকের ছবি পোস্ট করা হয়েছে। ছবি দেখে নেটিজেনদের বক্তব্য, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর আসল ‘হিরো’ হলেন নির্মাণকর্মীরা।
সেইসঙ্গে কৌশিকেরও প্রশংসা করেছেন নেটিজেনরা। তেমনই একজন বলেছেন, 'এই ছবিগুলো লাখ-কোটি টাকা দিয়েও কেনা যাবে না।' অপর এক নেটিজন বলেছেন, 'শত শত সাম্রাজ্যের ভগ্নশেষ পরে ওরা কাজ করে। এটাই আসল ভালোলাগার ছবি। বাকি সব ঠুনকো, নকল।'

মানুষের প্রতিক্রিয়ায় মুগ্ধ হয়েছেন সেই ভাইরাল ছবির সৃষ্টিকর্তা কৌশিকও। তিনি জানান, ছবিটা যখন ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন, তখন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে ভাবনাচিন্তা করেননি। নির্মাণকর্মীদের সাফল্যের কাহিনী এবং তাঁদের তৃপ্তির মুহূর্ত তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। কৌশিকের কথায়, ‘যখন ছবি তুলেছিলাম, তখন রাজনৈতিক বিষয়ে ভাবিনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হঠাৎ দেখতে পাই যে ঘুরতে-ঘুরতে ট্রেনের কাছে সেলফি তুলছেন কয়েকজন শ্রমিক। ফোটোগ্রাফিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ভালো লাগল। তাই ফেসবুকে পোস্ট করেছি। মনে হল, যাঁরা বানাচ্ছেন, তাঁরা তো আসলে কৃতিত্ব পান না।’
কিন্তু সেই ছবি যে এতটা ভাইরাল হবে, তা ভেবেছিলেন? কৌশিক (অতীতেও তাঁর একাধিক ছবি ভাইরাল হয়েছিল, ফেসবুকে তুমুল জনপ্রিয় ছিল মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের ছবি) জানান, তাঁর ছবি যে এতটা ভাইরাল হবে, তা ভাবতেই পারেননি। কৌশিক বলেন, ‘শ্রমিকরাও যে হিরো হতে পারেন, সেই বিষয়টা মানুষ বিশ্বাস করছেন এবং তাতে স্বীকৃতি দিচ্ছেন, সেটা দেখে ভালো লাগছে।’